মাত্র ২২ রান দূরে থেকে স্বপ্নভঙ্গ। তাই ম্যাচ শেষে পুরস্কার মঞ্চে অধিনায়ক মুশফিকুর রহীমের মুখে হাসি থাকলেও কণ্ঠ ছিল শীতল। এরপর সংবাদ সম্মেলনে অবশ্য স্বাভাবিকই ছিলেন অধিনায়ক। এমন হারে কষ্ট পেলেও তিনি একেবারেই হতাশ নন বলে জানিয়েছেন স্পষ্ট করে। কারণ ১৫ মাস পর টেস্ট খেলতে নেমে ইংল্যান্ডকে যেভাবে চেপে ধরেছিল টাইগার ক্রিকেটাররা, তাতেই অনেক প্রাপ্তি দেখছেন অধিনায়ক। তিনি বলেন, ‘২ উইকেট হাতে নিয়ে ৩৩ রান অনেক কঠিন সমীকরণ। ম্যাচ প্রায় ৯০ ভাগ ওদের (ইংল্যান্ড) দিকেই ছিল। ওদের টেলএন্ডাররা অনেক ভালো, ১১ জনেরই ফার্স্ট ক্লাসে সেঞ্চুরি আছে। আমাদের তেমন কেউ নেই। আমাদের কারও সেঞ্চুরি থাকলেও ওদের সেঞ্চুরির সঙ্গে আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেটের সেঞ্চুরির আকাশ-পাতাল ফারাক।’ টাইগারদের টেস্ট ইতিহাসে এর আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে লক্ষ্য তাড়া করে ৭৭ রানের হারটি ছিল সবচেয়ে ছোট। হারের কষ্ট নিয়ে মুশফিক বলেন, ‘খারাপ লাগছে অবশ্যই। হয়তো জিততে পারতাম। তবে আমাদের জন্য ব্যাপারটি হারজিতের নয়। হতাশ নই। ১৫ মাস পর কেউ এতটা আশা করতে পারে না। টেস্ট জিতলেই যে আমরা আহামরি কিছু হয়ে যেতাম সেটাও না।’ এই ম্যাচে নিজেদের প্রাপ্তি নিয়ে মুশফিকুর রহীম বলেন, ‘আমরা চেয়েছিলাম যেন ধারাবাহিক ক্রিকেট খেলতে পারি। একটা সেশন ভালো, আরেকটা খারাপ যেন না হয়। দিনে দিনে যেন উন্নতি করতে পারি। এই টেস্টে চারটা দিন আমরা ওদের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলেছি। এটাই প্রমাণ করে আমাদের ছেলেরা অনেক পরিণত হচ্ছে। এটা দারুণ ইঙ্গিত।’ তবে মুশফিক প্রথম ইনিংসে নিজেদের ব্যাটিং ব্যর্থতাকে এই হারের কারণ বলে চিহ্নিত করেন। প্রায় দেড় বছর টেস্ট খেলতে পারেনি বাংলাদেশ দল। সেখানে ইংল্যান্ড খেলেছে ১৬টি টেস্ট। এই নিয়ে টেস্ট সিরিজ শুরুর আগে আলোচনা-সমালোচনাও ঢের হয়েছে। এমনকি ইংল্যান্ড ও বাংলাদেশের এতদিন পর টেস্ট খেলা নিয়ে ভীষণ অবাক হয়েছে। কিন্তু তিন অভিষিক্ত খেলোয়াড় নিয়েও দীর্ঘদিন পর যে দারুণ ক্রিকেট খেলেছে বাংলাদেশ তাতে অবাক শুধু ইংল্যান্ড দলই নয়, তাদের সংবাদ মাধ্যমও। ইংল্যান্ডকে মূল ‘অবাক’টা বাংলাদেশ করেছে মাঠের লড়াইয়েই। তাই দলের প্রতিটি ক্রিকেটারদের জান দিয়ে লড়াইয়ের জন্য সতীর্থদের ধন্যবাদই দিতে চান মুশফিকুর রহীম। মুশফিক নিজেও গর্বিত এমন লড়াইয়ে। তিনি বলেন, ‘হয়তো সমীকরণটাই আমাদের পক্ষে ছিল না। মাত্র ২ উইকেট হাতে নিয়ে ৩৩ রানের দূরত্ব। তবে ছেলেরা পাঁচ দিন ধরে নিজেদের উজাড় করে দিয়ে চেষ্টা করে গেছে। ১৫ মাস পর টেস্ট খেলতে নেমে এভাবে খেলা, আমি সত্যিই দলকে নিয়ে গর্বিত।’ এখন অবশ্য মুশফিকের ভাবনাতে মিরপুর টেস্ট। চট্টগ্রাম টেস্টে উইকেট যেমন চেয়েছেন তেমনি পেয়েছেন বলে জানান তিনি। তবে মিরপুরের উইকেট স্পিন সহায়ক হবে কিনা তা পরিষ্কার করে কিছু জানাতে চাননি। তবে মুশফিক বলেন, ‘এখন আমরা মিরপুর টেস্ট নিয়ে ভাববো। স্পিন সহায়ক উইকেট হবে কিনা তা এখনই বলতে পারছি না। তবে আমাদের যেটি শক্তি সেটিতে জোরতো দিতেই হবে। তবে আশা করি যে উইকেটই হোক, খেলার ক্ষেত্রে কঠিন কিছু হবে না।’ মিরপুর শেরে বাংলা মাঠে আগামী ২৮শে অক্টোবর থেকে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট শুরু হবে।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.