ইংল্যান্ড মানেই কি দুর্দান্ত তামিম ইকবাল! চট্টগ্রাম টেস্টেও প্রথম ইনিংসে ৭৮ রানে দারণ এক ইনিংস খেলে আউট হয়েছিলেন। সেই ম্যাচে বাংলাদেশ প্রায় জিততে জিততে হেরে গিয়েছিল। ঢাকা টেস্টের আগে তামিম তাই সেই ম্যাচের সুখ স্মৃতিগুলো ভুলে নতুন শুরু করতে চেয়েছিলেন। করলেনও তাই। টসে জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিতে অধিনায়ক মুশফিক ভুল করেননি। তাও প্রমাণ করলেন ব্যাট হাতে। যদিও দলীয় এক রানে সঙ্গী ওপেনার ইমরুল কায়েসকে হারিয়েছিলেন। সেই ধাক্কা সামলে হাটলেন সেঞ্চুরির পথে। নার্ভাস নাইটিতে দাঁড়িয়েও দেখালেন দারুণ ব্যাটিং। মঈন আলীকে দারুণ এক ইনসাইড আউট বাউন্ডারিতে ৯৩ থেকে ৯৭ রানে পৌঁছালেন। পরের বলেই হুবহু শটে তিন এবং সেঞ্চুরি। মিরপুর টেস্টের প্রথম দিনেই অসাধারণ এক সেঞ্চুরি উপহার দিলেন তামিম। টেস্টে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরির রেকর্ডকে সামনে এগিয়ে নিলেন আরেক ধাপ। তামিমের এটি অষ্টম টেস্ট সেঞ্চুরি। এর মধ্যে ৩টিই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। তার পরই ৬টি সেঞ্চুরি করে বাংলাদেশের হয়ে দুইয়ে মোহাম্মদ আশরাফুল। ইংলিশদের বিপক্ষে ৬ টেস্টের প্রতিটিতেই অন্তত এক ইনিংসে পঞ্চাশ ছাড়িয়েছেন তামিম অন্যদিকে মারমুখী সেঞ্চুরি করলেও সকালে তামিমের শুরুটা ছিল দারুণ সতর্ক। প্রথম রানের দেখা পেতেই লেগেছিল ২০ বল। এরপর খোলস ছেড়ে বের হয়ে সেখান থেকে ফিফটি ছুঁয়েছেন ৬০ বলে। একপর্যায়ে ১২ বলের মধ্যে মেরেছেন ছয়টি চার! ফিফটির পরও এগিয়েছেন একই গতিতে। ইংলিশ পেসারদের শর্ট বল চোখের পলকে পুল করে পাঠিয়েছেন বাউন্ডারিতে। লাঞ্চের সময় অপরাজিত ছিলেন ৬৮ রানে। লাঞ্চের পর সেঞ্চুরিতে পৌঁছে যান দ্রুতই। মঈনের বলে ওই টানা দুই বাউন্ডারিতে সেঞ্চুরি করেন ১৩৯ বলে। আউট হয়ে গেছেন অবশ্য সেঞ্চুরির পর পরই। তাও সেই মঈন আলীর বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ১০৪ রানে। এই সময় মুমিনুল হকের সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেটে গড়েছেন ১৭০ রানের দারুণ জুটি। সেঞ্চুরিটা আরও বড় করতে পারেননি তামিম। তবে বাংলাদেশকে এনে দিয়েছিলেন শক্ত ভিত। দ্বিতীয় উইকেটে বাংলাদেশের এটি চতুর্থ সর্বোচ্চ জুটি। শীর্ষে থাকা ২৩১ রানের জুটিতে অবদান কায়েস ও শামসুর রহমানের, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২০১৪ সালে। এরপর ভারতের বিপক্ষে জুনায়েদকে নিয়ে তামিম গড়েছিলেন ২০০ রানের জুটি। তৃতীয় স্থানে থাকা ১৮৭ রানের জুটি ছিল হাবিবুল বাশার ও শাহরিয়ার নাফীসের, ফতুল্লাতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। তামিম ইকবালের টেস্ট অভিষেক ২০০৮ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। এই পর্যন্ত খেলেছেন ৪৪টি ম্যাচ। ৮ সেঞ্চুরি ও ১৯ ফিফটিতে ৪০.৩৫ গড়ে সংগ্রহ ৩৩০৯ রান। টেস্টে বাংলাদেশের হয়ে দ্বিতীয় ডবল সেঞ্চুরিটিও তার ব্যাট থেকে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তামিম খেলেছেন ৬টি ম্যাচ। ৬৩.২৭ গড়ে করেছেন ৬৯৬ রান। এরপর মধ্যে প্রথম সেঞ্চুরিটি করেন ২০১০ সালে লর্ডসে। দ্বিতীয়টি একই সিরিজে ম্যানচেস্টারে ১০৮ রানের ইনিংস। এবার ঢাকায় খেলেন ১০৪ রানের ইনিংস। ১৪৭ বল খেলে কোনো ছয় না মারলেও হাঁকিয়েছেন ১২টি চারের মার। এছাড়াও মিরপুর শেরে বাংলা মাঠে সাকিব আল-হাসানের পর এখন সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী। ২০০৮ থেকে গতকাল পর্যন্ত ১৪ ম্যাচের ২৫ ইনিংসে করেছেন ৯৩০ রান। ২ সেঞ্চুরি ও ৬টি ফিফটি হাঁকিয়েছেন। এর মধ্যে ১৫১ রানের ইনিংসটি সর্বোচ্চ। তামিমের আট সেঞ্চুরি রান বল ৬ ৪ প্রতিপক্ষ মাঠ সময় ২০৬ ২৭৮ ১৭ ৭ পাকিস্তান খুলনা ২৮শে এপ্রিল ২০১৫ ১৫১ ১৮৩ ১৮ ৩ ভারত ঢাকা ২৪শে জানুয়ারি ২০১০ ১২৮ ২৪৩ ১৭ ০ ও,ইন্ডিজ কিংস্টন ৯ই জুলাই ২০০৯ ১০৯ ৩২২ ১০ ০ জিম্বাবুয়ে খুলনা ৩রা নভেম্বর ২০১৪ ১০৯ ১৭১ ১৪ ১ জিম্বাবুয়ে চট্টগ্রাম ১২ই নভেম্বর ২০১৪ ১০৮ ১১৪ ১১ ১ ইংল্যান্ড ম্যানচেস্টার ৪ঠা জুন ২০১০ ১০৪ ১৪৭ ১২ ০ ইংল্যান্ড ঢাকা ২৮শে অক্টোবর ২০১৬ ১০৩ ১০০ ১৫ ২ ইংল্যান্ড লর্ডস ২৭শে মে ২০১০
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.