বাবা বিয়ে করছেন! নতুন মা আসছেন ঘরে। বেশ খুশিরই খবর বলা যায়। তাই তো দুই ছেলে আর এক মেয়ে মিলে বাবাকে বর হিসেবে সাজায়। এরপর তিন ভাই-বোন মিলে বর বাবাকে নিয়ে যায় কনে বাড়িতে। তিন সন্তানই বরযাত্রী। তবে বিয়ে বাড়িতে গিয়ে দেখা দেয় বিপত্তি। বিয়ে রেজিস্ট্রি বইতে সাক্ষী পাওয়া যাচ্ছে না। কি আর করা, অবশেষে সাক্ষীও হতে হলো বড় ছেলেকে। শুক্রবার (৬ মে) এমনই এক বিয়ের ঘটনা ঘটেছে শরীয়তপুর পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের স্বর্ণঘোষ গ্রামে।
বরের নাম এসএম সেলিম মিয়া। তিনি স্বর্ণঘোষ গ্রামের হাজী সিরাজ উদ্দিন শরীফের ছেলে। চাকরি করেন শরীয়তপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে। তার সন্তানরা হলো- রবিন, প্রভা আর তোহা। কনে হলেন- শরীয়তপুর সদর উপজেলার বিনোদপুর মুন্সীকান্দি গ্রামের আব্দুল গনি মুন্সীর মেয়ে নাজমা বেগম। এলাকাবাসী জানায়, ১৯৯২ সালে শরীয়তপুর পৌরসভার কাগদী এলাকার মরহুম আব্দুল আজিজ শাহের মেয়ে শাহানা আক্তার রুমার সঙ্গে বিয়ে হয় সেলিম মিয়ার। গত দুই যুগের সংসার জীবনে তাদের ঘরে আসে দুই ছেলে আর এক মেয়ে। দম্পাত্যজীবন অনেক সুখী ছিলেন তারা। কিন্তু সে সুখ সহ্য হয়নি কারোই।
মাস তিনেক আগে রুমার মৃত্যু হয়। মায়ের শূন্যতা ঘিরে ধরে তিন সন্তানকে। সন্তানদের সুখ-শান্তি ও লেখাপড়ার কথা চিন্তা করে সেলিম আবারো সংসার পাতার পরিকল্পনা করে। সে মোতাবেক শুক্রবার বিয়ের দিন ধার্য হয়। দুপুরে তিন সন্তান তাদের বাবা সেলিম মিয়াকে বর সেজে নিয়ে যায় মুন্সীকান্দি গ্রামে। নাজমা বেগমের সঙ্গে বিয়ে রেজিস্ট্রি হয়। কিন্তু রেজিস্ট্রি বইয়ে স্বাক্ষর দিতে হয় বড় ছেলেকে। এসময় মেয়ে প্রভাও ছিল পাশে। বিয়ে রেজিস্ট্রি আর শরীয়াহ মোতাবেক আনুষ্ঠানিকতার পর কনেবাড়িতে মধ্যাহ্ন ভোজ হয়। এরপর নতুন মাকে নিয়ে তিন সন্তান রওনা দেয় বাড়ির দিকে।পরিবারের সদস্যরা জানায়, সেলিম মিয়া পারিবারিক ভাবে অনেক সুখী ছিল।
তার প্রথম স্ত্রী রুমাও ছিল খুব নরম প্রকৃতির। কখনো কারো সাথে জোরে কথাও বলতে শোনেনি কেউ। কিন্তু দুই ছেলে আর এক মেয়েকে রেখে তাকে চলে যেতে হয় না ফেরার দেশে। প্রতিবেশীদের মন্তব্য, এখন যে মেয়েটি সেলিমের ঘরে বউ হিসেবে এসে সে যদি রুমার রেখে যাওয়া সন্তানদের মায়ের মমতা দিয়ে ভালোবেসে আগলে রাখতে পারে তবেই ভালো। সে প্রত্যাশা সবারই। রবিন, প্রভা আর তোহাও চায় তাদের নতুন মা যেন হয় খুব কাছের, অনেক মমতার।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.