অনেক দিন ধরেই চলছিল বাদানুবাদ। তারপর বিরোধ গড়ালো গৃহযুদ্ধে। যার হাত ধরে আন্তর্জাতিক হামলার মুখে পড়ে গেল আরবের দেশ ইয়েমেন। দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে এভাবেই চলছে। কবে যুদ্ধ থামবে না কেউ জানে না। কিন্তু যুদ্ধের কারণে খাদ্যাভাব, পুষ্টিহীনতা ও চিকিৎসার অভাবে নিঃশেষ হতে চলেছে ইয়েমেনের মানুষ।
পরিস্থিতি কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে তার ব্ড় নজির হলেন সাঈদা আহমেদ বাঘিলি৷১৮ বছর বয়সী এই মানুষটির নিবাস ইয়েমেনের হোডাইডা শহর থেকে ১০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত একটি গ্রামে। তিনি অসুস্থ ভেড়া পালতেন। পাঁচ বছর আগে প্রথম তার মধ্যে পুষ্টিহীনতার লক্ষণ দেখা দেয়৷ পরিস্থিতি এখন এমন যে কিছুই খেতে পারেন না৷ কারণ গলায় ব্যথা৷ ফলে শুধু জুস, দুধ আর চা খেতে হয় তাকে।
ইয়েমেনে গত প্রায় ১৯ মাস ধরে গৃহযুদ্ধ চলছে৷ সৌদি নেতৃত্বাধীন আরব জোট ও ইরানের সমর্থনপুষ্ট হুতি মুভমেন্টের সদস্যদের মধ্যে এই যুদ্ধ চলছে৷ এমন পরিস্থিতিতে বাঘিলির অভিভাবকরা পর্যাপ্ত অর্থ আয় করতে পারেননি বলে গত দেড় বছরে তার চিকিৎসা করা সম্ভব হয়নি।বাঘিলির খালা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, কয়েকজন দানশীল ব্যক্তি অর্থ সহায়তা দেয়ায় বাঘিলিকে ২২ অক্টোবর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়৷ হোডাইডা শহরের আল থাওরা হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন তিনি।
জাতিসংঘ বলছে, গৃহযুদ্ধের কারণে ইয়েমেনে দুর্ভিক্ষ শুরু হতে পারে৷ বর্তমানে দেশটির অর্ধেকেরও (১৪ মিলিয়ন) বেশি নাগরিক খাদ্য সংকটে রয়েছেন বলে জানিয়েছে সংস্থাটি৷ এর মধ্যে তিন মিলিয়ন মানুষের এখনই খাদ্য সাহায্য প্রয়োজন।
ইউনিসেফের হিসেবে সে দেশের প্রায় ১৫ লক্ষ শিশু এখন অপুষ্টিতে ভুগছে৷ এর মধ্যে তিন লক্ষ ৭০ হাজার শিশুর মধ্যে অপুষ্টির মাত্রা এত বেশি, যা তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দূর্বল করে দিচ্ছে।
গৃহযুদ্ধের কারণে ইয়েমেনে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ১০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে৷ অবশ্য জাতিসংঘের হিসেবে সংখ্যাটি সাত হাজারের কাছাকাছি। সূত্র: ডয়েচে ভেলে
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.