ঘুঘু কি বারবার ধান খেয়েই যাবে? না কি ঘুঘু এবার ফাঁদে আটকাবে। চট্টগ্রামে হাতের মুঠো থেকে ফসকে গেছে ইংল্যান্ড। হারের হাত থেকে বেঁচেই যায়নি তারা, ২২ রানের জয়ও পায় তারা। ধারাবাহিকতা রক্ষার যে চ্যালেঞ্জে মাঠে নেমেছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক তাতে এখন পর্যন্ত সফলই বলা যায়। ঢাকার মিরপুরে সিরিজের দ্বিতীয টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে লাগামটা বাংলাদেশের হাতেই। মধ্যাহ্ন বিরতির পর থেকে চা বিরতি পর্যন্ত ইংল্যান্ড দলের টেইল এন্ডাররা খেলার দখল নিলেও শেষ সেশনে দাপটেই ব্যাট চালায় বাংলাদেশের টপ অর্ডার। আফসোস থাকলেও হতাশা তৈরি হয়নি। স্বাগতিকরা এখন ১২৮ রানে এগিয়ে, হাতে আছে ৭ উইকেট। বাংলাদেশের ২২০ রানের জবাবে ইংল্যান্ড ২৪৪ রান তুলে এগিয়ে গিয়েছিল ২৪ রানে। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ ১৫২ রান তুলেছে ৩ উইকেটে। পিচের ধরনে এত রান কেউ আশা করেনি বললে ভুল হবে না। তবে আফসোস কেন? এ জন্য যে সংগ্রহটা আরো বেশি হতে পারতো বা উইকেট অক্ষত রাখা যেত। টেস্ট খেলা যতটা না বেশি রানের তার চেয়ে বেশি উইকেটের। টিকে থাকাটাই বড় পরীক্ষা। সামনে এখন তিনদিন। চাইলেও এ টেস্ট পঞ্চম দিনে নেয়া অসম্ভবই বলা যায়। গতকাল সন্ধ্যায় হিসাব চলছিল খেলা চতুর্থ দিনে গড়াবে কিনা। তবে তামিম-ইমরুল বা মাহমুদুল্লাহ যেভাবে খেললেন তাতে অন্যরকম কিছু হলেও বিস্ময়ের কিছু থাকবে না। পড়ন্ত বেলায় প্রায় ৫ গড়ে (৪.৯০) রান একটু বেশিই। এ পর্যন্ত দুই টেস্টের তিন ইনিংসেই ইংল্যান্ডের গড় তিন-এর নিচে। আর বাংলাদেশ ঢাকা টেস্টের প্রথম ইনিংসে রান তোলে ৩.৪৪। তামিম ইকবাল ৪৭ বলে ৪০ রান করে আউট হন। অবশ্য তার ২৮ রান আসে ৭ বলে (৭ চার)। অভিষেক হওয়া জাফর আনসারির প্রথম টেস্ট শিকার হন তামিম। আর তার দ্বিতীয় শিকার হওয়া মাহমুদুল্লাহ আফসোসের মাত্রা বাড়ান দিনের শেষ বলে আউট হয়ে। ৩৮, ১৭ ও ১৩ রানের পর এবার করেন ৪৭ রান। ফিফটি থেকে তিন রান দূরে থাকতে বোল্ড হন তিনি। ৫৭ বলের ইনিংসে পাঁচটি চার মারেন তিনি। দুই বল আর এক রানের মধ্যে তামিম ও মুমিনুল আউট হলে বাংলাদেশ শিবিরে শঙ্কা জেগে ওঠে বিপর্যয়ের। কিন্তু তৃতীয় উইকেটে ইমরুল আর মাহমুদুল্লাহর সাবলীল ব্যাটিংয়ে বোঝাই যাচ্ছিল না এ কোন পিচে খেলা হচ্ছে। প্রায় ১৭ ওভার বল খেলে এ জুটি যোগ করে ৮৬ রান। আজ বাংলাদেশের জন্য বড় পরীক্ষা। যদি ইমরুলের সঙ্গে সাকিব, মুশফিক, সাব্বির, মেহেদী মিরাজ তাদের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেন তবে ইংল্যান্ডের জন্য চতুর্থ ইনিংসটা কঠিনই হবে। চা বিরতি পর্যন্ত যদি বাংলাদেশ ইনিংস টিকতে পারে তবে আরো প্রায় দুশ’ রান যোগ হতে পারে। ক্রিকেটে হতে পারে অনেক কিছুই। তবে পাল্লাটা বাংলাদেশের দিকেই ভারি। আর যদি প্রথম ইনিংসের মতো ধস নামে তবে তো কথাই নেই (১৭১/১ থেকে ২২০/১০)। ইংল্যান্ড কিন্তু দেখায় উল্টোটা। তাদের চিত্রটা ১৪৪/৮ থেকে ২৪৪/১০। ইমরুল অপরাজিত আছেন ৫৯ রানে। ৮১ বলের ইনিংসে চার মারেন আটটি। টেস্টে এটি তার ৫০তম ইনিংস আর এতে তিনি পেলেন চতুর্থ ফিফটি। তিনটি সেঞ্চুরিও রয়েছে ইমরুলের। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এ সিরিজে তামিম ছাড়া পরপর দুই ইনিংসে সফলতা দেখাতে পারলেন না বাংলাদেশের কেউই।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.