হিলারি ক্লিনটনের ব্যক্তিগত ইমেইল চালাচালির ঘটনা নতুন করে তদন্তের ঘোষণা দেয়ায় এফবিআই প্রধান জেমস কোমির ব্যাপক সমালোচনা করেছেন মার্কিন সিনেটে ডেমোক্রেট নেতা হ্যারি রেইড। নির্বাচনের মাত্র কয়েক দিন আগে এ তদন্তের ঘোষণায় জেমসের বিরুদ্ধে আইন ভাঙারও অভিযোগ করেছের ডেমোক্রেট দলের এ শীর্ষ নেতা।
হ্যারি রেইড রোববার এক বিবৃতিতে কোমির বিরুদ্ধে নির্বাচনী আইন ভাঙার অভিযোগ করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে পারে কর্মকর্তাদের এমন কর্মকান্ডের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
নির্বাচনের মাত্র দুই সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে এফবিআই নতুন করে হিলারির ইমেইল চালাচালির ঘটনা তদন্তের ঘোষণা দেয়।
এদিকে এফবিআই হিলারি ক্লিনটনের শীর্ষ এক সহযোগীর ইমেইল খতিয়ে দেখার পরোয়ানা আদায় করতে সক্ষম হয়েছে।
হিলারির ঘনিষ্ঠ সহযোগী হুমা আবেদিনের সাবেক স্বামী অ্যান্থনি ওয়েনারের ল্যাপটপে ইমেইলগুলো পাওয়া গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এফবিআই পরিচালক জেমস কোমি শুক্রবার কংগ্রেসকে এক চিঠিতে বলেন, হিলারির আরো কিছু ইমেইলের খোঁজ পাওয়ায় এফবিআই নতুন করে তা তদন্ত করবে।
তিনি বলেন, ইমেইলগুলোর গুরুত্ব আদৌ ছিল কিনা বা কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল তা এখনই বোঝা যাচ্ছে না। এর জন্য তদন্ত দরকার এবং তদন্ত সম্পন্ন করতে ঠিক কত সময় লাগবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না।
২০১৫ সালে প্রথম হিলারির ব্যক্তিগত ইমেইল চালাচালির বিষয়টি ফাঁস হয়। এ সময় এফবিআই তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে গুরুতর কিছু পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছিল। এ কারণে তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ না আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সংস্থাটি।
এফবিআই বলেছে, হিলারির ইমেইল ব্যবহারের পূর্ববর্তী তদন্তের সঙ্গে নতুন করে পাওয়া ই-মেইলের প্রাসঙ্গিকতা থাকতে পারে।
কিন্তু প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণা শুরুর পর থেকেই এই বিষয়টিকে হিলারির বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ বা অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করছেন তার নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বীরা।
শীর্ষ ডেমোক্রেট রেইড এফবিআই প্রধানের বিরুদ্ধে একটি নির্দিষ্ট দলকে সুবিধা পাইয়ে দিতে দ্বৈত ভূমিকা পালনের অভিযোগ করেছেন।
তিনি বলেন, কোমি হ্যাচ অ্যাক্ট লংঘন করতে পারেন। এ আইনে নির্বাচনকে প্রভাবিত করার জন্য নিজের অবস্থানকে ব্যবহার করতে কর্মকর্তাদের নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ‘আপনার দলীয় আচরণের কারণে বলছি, আপনি সম্ভবত আইন ভেঙেছেন।’
তিনি কোমির বিরুদ্ধে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রুশ সরকারের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের বিস্ফোরক তথ্য প্রকাশ না করারও অভিযোগ করেছেন।
তিনি বলেন, ‘জনগণের তথ্য জানার অধিকার আছে। আমি কয়েক মাস আগে এই তথ্য জনসম্মুখে প্রকাশের আহবান জানিয়ে আপনার কাছে চিঠি লিখেছিলাম।’
ইউনিভার্সিটি অব মিনেসোটো ল স্কুলের অধ্যাপক রিচার্ড পেইন্টার রোববার বলেছেন, তিনি অফিস অব স্পেশাল কাউন্সিলের মাধ্যমে এফবিআইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। হ্যাচ অ্যাক্ট লংঘনের বিষয়টি তদন্ত করে অফিস অব স্পেশাল কাউন্সিল।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আর মাত্র কয়েক দিন বাকি। ঠিক এ সময়ে এফবিআইয়ের তদন্তের ঘোষণা নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
হিলারির নির্বাচন প্রচারণা শিবিরের চেয়ারম্যান জন পোডেস্টা এই সময়ে এফবিআইয়ের এমন কর্মকান্ডের সমালোচনা করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব বোস্টনের অধ্যাপক নাজলি কিবরিয়া বলছেন, এতো স্বল্প সময়ের মধ্যে এই তদন্ত শেষ করে ফলাফল জানা হয়তো সম্ভব হবে না। তবে এখনো ভোটের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেননি, এমন কিছু ভোট হয়তো হিলারির হাতছাড়া হতে পারে।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.