মানুষের জীবনে শিক্ষার যে কতো প্রয়োজন তা বুঝতে পেরেছেন ৬০ বছরের বৃদ্ধ আব্দুর রশিদ। বর্তমানে আব্দুর রশিদের বড় নাতনি এইচএসসিতে পড়ালেখা করছে। কিন্তু আব্দুর রশিদ পড়ছেন ৩য় শ্রেণিতে।
বৃদ্ধ বয়সে ছোট্ট শিশুদের সঙ্গে পড়ালেখা করে তিনি নিজেকে এখন শিশুই ভাবেন। তবে বাড়ির কাজকর্ম নিয়মিতভাবে করেন অাব্দুর রশিদ।
দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ উপজেলার যোশহর শাহপাড়া গ্রামের ৬০ বছরের এ বৃদ্ধ যশোহর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস ওয়ান ভর্তি হয়ে বর্তমানে তৃতীয় শ্রেণিতে অধ্যয়নরত। নিয়মিত ক্লাসের ছোট সহপাঠিদের সঙ্গে পড়াশুনা করছেন তিনি।
প্রথমদিকে এই স্কুলের শিক্ষার্থীরা বিষয়টিকে অন্যভাবে নিলেও এখন বেশ মানিয়ে নিয়েছে। সবাই এখন আব্দুর রশিদকে ক্লাসে পেয়ে বেশ আনন্দিত।
যোশহর শাহপাড়া গ্রামের মৃত নেক মোহাম্মদের ছেলে মো. আব্দুর রশিদ (৬০) জানান, ১৫ বছর পূর্বে তার স্ত্রী মারা যায়। সেসময় এলাকার এক ব্যক্তির কাছে তিনি তার ৪০ শতাংশ জমি দেন। এক বছর পর টাকা পরিশোধ করে জমি নিতে গেলে ওইব্যক্তি তাকে বলেন তুমি তো আমাকে জমি রেজিস্ট্রি করে দিয়েছো, এখন তো আমি জমি ফেরত দিব না। এ কথা শুনে আব্দুর রশিদ ভেঙ্গে পড়েন।
সে দিনই তিনি সিদ্ধান্ত নেন জীবনে বেঁচে থাকতে হলে শিক্ষার প্রয়োজন। এ জন্য তিনি দুই বছর পর্বে ক্লাস ওয়ানে ভর্তি হন এখন তিনি তৃতীয় শ্রেণিতে পড়েছেন।
তিনি বলেন, অন্ধ ছিলাম আলো দেখতে এসেছি।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক অনিল চন্দ্র রায় জানান, প্রথমে সে ভর্তি হতে অনীহা প্রকাশ করলেও এলাকাবাসীর অনুরোধে তাকে স্কুলে ভর্তি করা হয়।
বর্তমানে আব্দুর রশিদের এক মেয়ে দুই নাতনি ও এক নাতি রয়েছে। বড় নাতনি এইচএসসিতে পড়ালেখা করছে। বৃদ্ধ বয়সে এসেও বাড়ির অন্যান্য কাজের সঙ্গে স্কুল যাওয়া ও লেখাপড়া করেন। এছাড়া স্কুলে ছোট শিশুদের সঙ্গ দিয়ে থাকেন অাব্দুর রশিদ।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.