জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকসংলগ্ন সমবায় ব্যাংকের একটি খালি জায়গায় অবৈধভাবে শীতের কাপড়ের দোকান বসানো হয়েছে। অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এসব দোকান বসিয়েছেন। তবে ছাত্রলীগের নেতারা এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
গতকাল শুক্রবার সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের বিপরীতে জনসন সড়কের পূর্ব পাশে প্রায় ১০ শতাংশের একটি খালি জায়গা রয়েছে। এই জায়গার পশ্চিম-উত্তর পাশে টিন দিয়ে বেড়া দেওয়া। ভেতরে শীতের কাপড়ের প্রায় ১৫টি দোকান, ওপরে শামিয়ানা টানানো। দক্ষিণ-পশ্চিম পাশের একটি ফটক দিয়ে ভেতরে ঢুকে কেনাকাটা করছেন ক্রেতারা। দক্ষিণ ও পূর্ব পাশে দেয়ালে বিভিন্ন চিত্রাঙ্কন ও জ্ঞানী-গুণীদের বাণী। এই দেয়ালের কয়েকটি স্থানেও জায়গাটি ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি’ লেখা রয়েছে। ভেতরে বিভিন্ন স্থানে মাঝারি আকারের সাতটি কাঠবাদামগাছ এবং কয়েকটি বসার বেঞ্চ রয়েছে। কিন্তু কোথাও সমবায় ব্যাংকের সাইনবোর্ড নেই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র জুবায়ের রহমান বলেন, আগে টিএসসির ভেতর শিক্ষার্থীরা নিয়মিত আড্ডা ও গানবাজনা করতেন। কিন্তু ৮-১০ দিন আগে দোকান বসান ছাত্রলীগের নেতারা। শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছেন না। অথচ এই জায়গায় একটি উন্মুক্ত নাট্যমঞ্চ নির্মাণ করলে পুরান ঢাকার সাংস্কৃতিক বলয় গড়ে উঠবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তর সূত্র জানায়, ২০১৪ সালের মার্চে সমবায় ব্যাংকের ওই পরিত্যক্ত জায়গা বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী টিএসসি হিসেবে ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা। এরপর থেকে জায়গাটি তাঁদের দখলে রয়েছে৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. ওহিদুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি জমির সঙ্গে সমবায় ব্যাংকের এই জমি বদল করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এতে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আগ্রহী নয়।’
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি মেহেরাব আজাদ বলেন, ‘গত মঙ্গলবার এই কাপড়ের দোকানগুলো উচ্ছেদ করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু ছাত্রলীগের এক নেতা এবং তাঁর পক্ষের কর্মীদের বাধায় তা উচ্ছেদ করা সম্ভব হয়নি৷’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শাখা ছাত্রলীগের তিনজন সহসভাপতি ও দুজন সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, প্রতিবছর শীতের মৌসুমে ওই কাপড়ের দোকান বসানো হয়। ওই চাঁদার টাকা বড় নেতাদের মধ্যে ভাগাভাগি হয়। শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘কে বা কারা দোকান বসিয়েছে, তা জানি না৷ ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে কেউ এই কাজ করে থাকলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷’
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.