মাশরাফি বিন মুর্তজা বাংলাদেশ ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক। তার ডেপুটি হিসেবে জাতীয় দলে আছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার ও সাবেক অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। জাতীয় দলের হয়ে দু’জন এক সঙ্গেই ব্যাট-বল হাতে লড়েন প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে। জয়-পরাজয়ের হাসি-কান্না একই সঙ্গে ভাগ করে নেন। কিন্তু আজ দুজন দুই দলে। লড়বেন মুখোমুখি। মাশরাফিকে হারাতে সাকিব থাকবেন মরিয়া। অন্যদিকে মাশরাফিও সাকিবকে হারাতে তার অভিজ্ঞতার সবটুকু দিয়ে লড়বেন নিজের দল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে জেতাতে। মিরপুর শেরে বাংলা মাঠে আজ সন্ধ্যা ৭টায় সাকিবের ঢাকা ডায়নামাইটসের মুখোমুখি হবে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। গতকাল মিরপুর একাডেমির মাঠে প্রস্তুতি সেরে নিয়েছেন সাকিব তার দল নিয়ে। তবে চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লার মাঠে নামা হয়নি নিজেদের প্রথম ম্যাচে। রাজশাহীর বিপক্ষে ম্যাচটি বৃষ্টির কারণে শেষ পর্যন্ত পণ্ড হয়ে যায়। বিকাল ৪টা ৫০ মিনিটে ম্যাচটি পরিত্যক্ত ঘোষণা দেন আম্পায়াররা। তাই মাশরাফির বিপিএলে চতুর্থ আসরে যাত্রা শুরু হয়েছে পয়েন্ট ভাগাভাগি করে। যে কারণে দ্বিতীয় ম্যাচে জয় ছাড়া মাশরাফিদের এগিয়ে যাওয়া কঠিন হবে। অবশ্য সাকিব ঘোষণা দিয়েছেন তার দলের লক্ষ্য চ্যাম্পিয়ন হওয়া তাই প্রতিটি ম্যাচেই জয় চান তিনি। সাকিব বলেন, ‘লক্ষ্য তো,… সবাই চায় চ্যাম্পিয়ন হতে। আমরা একটু একটু করে প্রতিটি ম্যাচে এগিয়ে যাবো।’ আর মাশরাফির লক্ষ্য প্রতিটি ম্যাচেই ভালো করা। মাঠের লড়াইয়ে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করা ও একটি একটি ম্যাচ জিতে এগিয়ে যাওয়া। তাই সাকিব-মাশরাফির যুদ্ধটা দারুণ জমজমাট হবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে মাশরাফি-সাকিব লড়াই হবে কিনা তা নিয়েও রয়েছে সংশয়। গতকাল পর্যন্ত আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে নিম্নচাপের প্রভাবে আরো দুদিন এই বৃষ্টি থাকবে। তাই আজকের ম্যাচে অন্যতম প্রতিপক্ষ হতে পারে এই বৃষ্টি। গতকাল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের মাঠের ক্ষমতা দেখানোর সুযোগ হয়নি। অধিনায়ক মাশরাফি পরীক্ষা করে নিতে পারেননি তার দলের সক্ষমতা। যদিও নিজ দলের ওপর আস্থা আছে তার। অপরদিকে সাকিব আল হাসান দল নিয়ে পড়েছেন মধুর সমস্যাতে। এবার সাকিবের দলে বিদেশি তারকার ছড়াছড়ি। ডায়নামাইটসের গত আসরের অধিনায়ক কুমার সাঙ্গাকারা আছেন এবারও। সঙ্গে আরেক লঙ্কান কিংবদন্তি মাহেলা জয়াবর্ধনে। এছাড়াও টি-টোয়েন্টির দুনিয়াতে সুপার পারফরমার ডোয়াইন ব্রাভো ও আন্দ্রে রাসেল, গত বিপিএলের সেঞ্চুরিয়ান এভিন লুইস, বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে দারুণ সফল রবি বোপারা, দক্ষিণ আফ্রিকান অলরাউন্ডার ওয়েইন পার্নেল, লঙ্কান অলরাউন্ডার সিকুগে প্রসন্ন, তরুণ পাকিস্তানি লেগ স্পিনার উসামা মির। এত বিদেশি তারকার ভিড়ে সাকিব কাকে বেছে নেবেন? বিপিএলের চতুর্থ আসরের নিয়ম অনুসারে একাদশে মাত্র চারজন বিদেশি ক্রিকেটারকে খেলাতে পারবেন। এই মধুর সমস্যা নিয়ে সাকিব বলেন, ‘কাজটা একটু কঠিন তো হয়ই। কোটা অনুযায়ী চারজন বিদেশি ক্রিকেটার খেলতে পারবে। আমার দলে অন্তত ৬-৭ জন আছে খেলার মতো। সবাইকে তো খেলাতে পারবো না। টিম ম্যানেজমেন্ট ও আমরা সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নেবো। সবাই এখানে পেশাদার ক্রিকেটার, সিদ্ধান্ত স্পোর্টিংলিই নেবে।’ সাকিবের দলে রয়েছে দেশি তারকারও ভিড়। বিশেষ করে বেশ কয়েকজন তরুণ প্রতিভা। এর মধ্যে অন্যতম নাসির হোসেন ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। তৃতীয় আসরে সাকিব আল হাসান ছিলেন রংপুর রাইডার্সে। এবার ঢাকা ডায়নামাইটসে। নিজের নতুন দলের সম্ভাবনা নিয়ে সাকিব বলেন, ‘আশা করি মজার হবে নতুন দলের অভিজ্ঞতা। আশা করি বিপিএলটা ভালো হবে। পারসোনাল দিক থেকে টিমের দিক থেকেও আমার কাছে মনে হয় আমাদের ভালো একটা টিম আছে। মাঠে কেমন পারফম করি সেটা গুরুত্বপূর্ণ। শুরুটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদি ভালো করতে পারি, মোমেন্টামটা ধরে রাখতে পারি আশা করি ভালোই হবে।’ প্রতিপক্ষ কুমিল্লার নেতৃত্বে আছেন মাশরাফি। তাই এমন একটি দলের বিপক্ষে যে কোনো অধিনায়ককে ভাবতে হয়। কিন্তু সাকিব জানালেন এখনও প্রতিপক্ষকে নিয়ে তিনি তেমন কোনো কিছুই চিন্তা করেননি। সাকিব বলেন, ‘এখনও প্রতিপক্ষ নিয়ে আসলে ওভাবে পরিকল্পনা করিনি। অবশ্যই একটা টিম প্ল্যান থাকবে। কিন্তু আমদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হলো আমরা কতোটা ভালো ক্রিকেট খেলতে পারি। বেশ কিছু ভালো দারুণ প্লেয়ার আছে, আমরা যদি টিম হিসেবে খেলতে পারি ভালো রেজাল্ট করা সম্ভব।’
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.