একটি ভালো মানের ছবি একজন অভিনয় শিল্পীকে ভিন্ন মাত্রায় পৌঁছে দেয়। তেমনই একটি ছবিতে কাজ করে নিজের অনেক সিদ্ধান্তে পরিবর্তন এনেছেন কুসুম শিকদার। নতুন করে অনেক কিছু শেখারও চেষ্টা করেছেন এ অভিনেত্রী। গুছিয়ে নিজের মতো করে পথ চলছেন। তার অভিনীত বাংলাদেশ-ভারত যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত ইমপ্রেস টেলিফিল্মের ছবি ‘শঙ্খচিল’ ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল অব ইন্ডিয়ার ‘প্যানারমা’ বিভাগে প্রদর্শনের জন্য মনোনয়ন পেয়েছে। একই বিভাগে আরো প্রদর্শিত হবে সালমান খানের ‘সুলতান’, রণবীর সিংয়ের ‘বাজিরাও মাস্তানি’ ও অক্ষয় কুমারের ‘এয়ার লিফ্ট’ ছবিগুলো। ভারতীয় সরকারের আয়োজনে ভারতের পর্যটন নগরী গোয়ার পানাজীতে আগামী ২০ থেকে ২৮শে নভেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এ উৎসব। এতে যোগ দিতে কয়েকদিন পরই ভারতে যাচ্ছেন কুসুম। এ প্রসঙ্গে তিনি মানবজমিনকে বলেন, আমি খুব বেশি কাজ করার পক্ষে নই। বুঝে-শুনে কয়েকটি ভালো কাজ করতে পারলেই খুশি। আমার এই স্বল্প ক্যারিয়ারে তেমনই একটি কাজ ‘শঙ্খচিল’। এ ছবিতে কাজ করার পর দুই দেশেই ছবিটি নিয়ে বেশ প্রশংসা পেয়েছি। কয়েকদিন পর ৪৭তম ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল অব ইন্ডিয়ার আসরে যোগ দিব আমি। আমার ছবি এমন একটি বড় উৎসবে অংশ নিচ্ছে, এটা সত্যিই অনেক গর্বের। এজন্য ইমপ্রেস টেলিফিল্ম, এ ছবির পরিচালক গৌতম ঘোষসহ প্রযোজক ও কলাকুশলীদের অনেক ধন্যবাদ। ১৯৪৭ সালের দেশভাগ এবং পরবর্তী সময়ে সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষের সুখ-দুঃখের গল্প নিয়ে করা ‘শঙ্খচিল’ ছবিতে সবশেষ অভিনয় করেন কুসুম শিকদার। এ ছবিতে কলকাতার জনপ্রিয় অভিনেতা প্রসেনজিতের বিপরীতে কাজ করে বেশ আলোচনায় আসেন তিনি। এদিকে নতুন চলচ্চিত্র নিয়ে কি ভাবছেন জানতে চাইলে কুসুম শিকদার বলেন, ‘গহীনে শব্দ’, ‘লালটিপ’ ও ‘শঙ্খচিল’ ছবিগুলো আমার ক্যারিয়ারের জন্য বড় প্রাপ্তি। এগুলো একসঙ্গে মুক্তি পায়নি। দুই বছর অন্তর অন্তর মুক্তি পেয়েছে। যে কোনো ছবিতে কাজ করতে প্রস্তুত আমি। তবে সেই কাজের জন্য গল্প ও পরিবেশটা ভালো লাগতে হবে আমার। আমি বুঝে শুনেই সামনে কাজ করতে চাই। এদেশে ‘শঙ্খচিল’-এর মতো ছবি আরও বেশি হওয়া উচিত। কারণ চলচ্চিত্র নিয়ে হতাশার গল্প আর শুনতে চাই না। চলচ্চিত্র দিয়ে আমার দেশ অনেক এগিয়ে যাক এটাই আমার একমাত্র স্বপ্ন। আর ভালো কাজ দিয়েই সেই স্বপ্ন পূরণ করতে হবে আমাদের। তাই নি¤œমানের কোনো ছবিতে কাজ করে সময় ও ইমেজ নষ্ট করার ইচ্ছে নেই আমার। বর্তমানে কুসুম ছোটপর্দার দর্শকের জন্য একটি ধারাবাহিকে কাজ করছেন। এর নাম ‘আস্থা’। এটি পরিচালনা করছেন এজাজ মুন্না। তবে টিভিতে টানা কাজ করেন না এই অভিনেত্রী। এর কারণ হিসেবে বলেন, টিভিতে টানা কাজ করার ইচ্ছে নেই। আবার একেবারে হারিয়ে যাওয়ারও ইচ্ছে নেই আমার। আমি বুঝে-শুনে ছোটপর্দায় কিছু ভালো কাজ করছি। আর সামনে বড়পর্দায় ভালো কিছু কাজ করার ইচ্ছে রয়েছে। ২০০২ সালের লাক্স-আনন্দধারা মিস ফটোজেনিক প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করার পর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি কুসুমকে। বড়পর্দার পাশাপাশি ছোটপর্দার অসংখ্য নাটক ও টেলিছবিতে কাজ করেছেন তিনি। অভিনয়ের বাইরে গানের চর্চাও রয়েছে তার। পাশাপাশি কবিতা লিখতেও পছন্দ করেন। গতবার গ্রন্থমেলায় ‘নীল ক্যাফের কবি’ শিরোনামে একটি কবিতার বই প্রকাশ করার পর বেশ সাড়াও পান এই অভিনেত্রী। আসছে গ্রন্থমেলায় নতুন বই আসবে কি-না জানতে চাইলে কুসুম বলেন, বই প্রকাশ করার ইচ্ছে তো রয়েছে। তবে লেখারই সময় পাচ্ছি না। অবশ্য গ্রন্থমেলার এখনও বেশ খানিকটা সময় বাকি আছে। তাই কাজের বাইরে নতুন কবিতা লেখার ইচ্ছে রয়েছে। দেখা যাক শেষ পর্যন্ত কি হয়। অন্য অনেক অভিনেত্রী থেকে এক ধাপ এগিয়ে রয়েছেন কুসুম সিকদার। মিডিয়াতে বেশকিছু কাজ দিয়ে সাফল্যের খাতায় লেখা হয়ে গেছে তার নাম। তাই সামনে ভালো কাজ দিয়েই দর্শকের সামনে আসতে চান তিনি।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.