তবে পুরনো নোটের বিড়ম্বনা যে এতো নির্মম হতে পারে মুম্বাইয়ের জগদীশ আর কিরণ শর্মা সেটা ঘুণাক্ষরেও কখনও ভাবেননি।
মুম্বাইয়ের গোবান্দির বাসিন্দা জগদীশ আর কিরণ শর্মার জীবনে বুধবার ছিল সবচেয়ে অন্ধকার দিন। আর এ অন্ধকার নামিয়েছিল পুরনো ৫০০ ও ১০০০ রুপির নোট।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, বুধবার রাতে গোবিন্দার বাড়িতে হঠাৎই প্রসব যন্ত্রণা শুরু হয়ে যায় জগদীশের স্ত্রী কিরণের। তখনই স্ত্রী কিরণকে নিয়ে কাছের জীবন জ্যোত হসপিটাল অ্যান্ড নার্সিংহোমে যান জগদীশ।
হাসপাতালে একটি শিশুকন্যার জন্ম দেন কিরণ। কিন্তু জন্মের পরেই জ্বরে কাবু হয়ে যায় শিশুটি। তখন শিশুটির জন্য ওষুধের নাম লিখে একটি স্লিপ জগদীশের হাতে ধরিয়ে দেন চিকিৎসকরা।
জগদীশকে দ্রুত ওষুধ কিনে আনতে বলেন চিকিৎসকরা। তার আগে সন্তান প্রসব করানোর জন্য বিলটা মিটিয়ে যেতে বলা হয়। বিল হয়েছিল ছয় হাজার রুপি।
ওই বিল মেটানোর জন্য খুচরো নোট ছাড়া জগদীশের কাছে ছিল বেশ কয়েকটা পুরনো ৫০০ আর ১০০০ রুপি। জগদীশ সেগুলো দিয়েই তড়িঘড়ি হাসপাতালের বিল মিটিয়ে দিতে চান। কারণ, সেটা মেটাতে পারলেই তিনি জ্বরে কাবু শিশুটির জন্য ওষুধ আনতে যেতে পারবেন।
কিন্তু এখানেই শুরু বিপত্তির। হাসপাতালের কেউই জগদীশের কাছ থেকে সেই পুরনো ৫০০ আর ১০০০ রুপির নোট নিতে রাজি হননি। এমনকি, অসুস্থ শিশুটির জন্য বিল মেটানো বাকি রেখে জগদীশকে ওষুধ কিনতে যেতে দিতেও রাজি হননি তারা।
জগদীশ তখন তাদের বোঝাতে থাকেন, সরকার জরুরি প্রয়োজনে পুরনো নোট ব্যবহারের সময়সীমা বাড়িয়েছে। কিন্তু তাতে ওই বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের টনক নড়েনি।
হাসপাতালের লোকজন বেশ ভাল করেই চিনতেন জগদীশ আর কিরণকে। স্ত্রীকে বিভিন্ন সময় পরীক্ষা করাতে গত ছয় মাস ধরে ওই হাসপাতালেই নিয়ে যেতেন জগদীশ।
জগদীশ বলেন, ‘শিশুটিকে অন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ারও অনুমতি দেননি আমাকে ডাক্তারবাবুরা।’
এর পর ওষুধের অভাবেই বৃহস্পতিবার সদ্যোজাত শিশুটির মৃত্যু হয়।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য জগদীশের অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন।
তবে ওই ঘটনার পর জগদীশ কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে স্থানীয় থানায় একটি এফআইআর করেছেন।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.