বিয়ের ৬ মাসের মাথায় এ্যানি বিশ্বাস (২৫) নামে রাঙ্গুনিয়ার এক প্রবাসীর স্ত্রীকে কেরোসিন ঢেলে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
যৌতুক না পেয়ে তাকে শাশুড়ি হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করেছে নিহতের পরিবার।
হাটহাজারী থানার ওসি বেলাল উদ্দিন জাহাঙ্গীর যুগান্তরকে বলেন, হত্যার অভিযোগে গৃহবধূর শাশুড়িকে আটক করা হয়েছে। অন্য অভিযুক্তদের গ্রেফতারে অভিযান চালানো হচ্ছে।
হতভাগ্য গৃহবধু এ্যানি বিশ্বাস (২৫) ইমাম গাজ্জালী কলেজের স্নাতক ২য় বর্ষের ছাত্রী। সে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পশ্চিম বেতাগীর রামগতি হাট এলাকার শিবু বিশ্বাসের মেয়ে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২১ দিন পর শুক্রবার রাতে তার মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুতে শোকাহত বাবা শিবু বিশ্বাস হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
শনিবার পোস্টমর্টেম শেষে তার লাশ চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লা বলুয়ারদীঘি পাড় শ্মশানে দাহ করা হয়েছে।
নিহত এ্যানীর স্বামী হাটহাজারীর শিকারপুর ইউনিয়নের পশ্চিম শিকারপুর গ্রামের দিলীপ মহাজনের ছেলে প্রবাসী লিটন মহাজন (৩০)। নিহতের বাবা শিবু বিশ্বাস বাদী হয়ে ৭ নভেম্বর শাশুড়ি, ননদ ও স্বামীকে আসামি করে মামলা করেছেন। এ ঘটনায় শাশুড়িকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
নিহতের মা রঞ্জু বিশ্বাস জানায়, এ বছরের ৮ মার্চ এ্যানির সঙ্গে লিটনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে গৃহবধূকে যৌতুকের জন্য নানাভাবে চাপ দিতে থাকে স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন। স্বামী জানায়, বিদেশে তেমন সুবিধা করতে না পারায় তিনি দেশে এসে ব্যবসা করবেন। এর জন্য প্রয়োজন ১০ লাখ টাকা।
বিয়ের ১১ দিন পর তার স্বামী প্রবাসে চলে যান। বরাবরের মতো ২১ অক্টোবর শাশুড়ি বেবি মহাজন ও ননদ মন্দিরা বিশ্বাস বাপের বাড়ি থেকে টাকা আনতে বললে এ্যানি অপারগতা প্রকাশ করায় তার ওপর শারীরিক নির্যাতন শুরু করে। এক পর্যায়ে দু’জনে এ্যানির শয়নকক্ষে ঢুকে চাবি কেড়ে নিয়ে আলমারিতে থাকা বিয়ের গহনা ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। গৃহবধু এ্যানি গহনা দিতে না চাইলে তাকে মারধর করে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে ঘরের দরজা বন্ধ করে দেয়। তার আর্তচিৎকারে আশপাশের প্রতিবেশিরা তাকে উদ্ধার করে।
তার শ্বশুরসহ প্রতিবেশীরা তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে ভর্তি করান। এদিকে শাশুড়ি ও ননদ বৈদ্যুতিক তারে জড়িয়ে তার শরীরে আগুন ধরেছে বলে তার বাপের বাড়িতে টেলিফোনে জানায়। আহত এ্যানি হাসপাতালে মাকে আসল ঘটনা জানায়।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.