বাংলাদেশি পাসপোর্ট ব্যবহার করে সৌদি আরবে যাওয়া মিয়ানমারের রোহিঙ্গারা জড়িয়ে পড়ছেন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে। এতে ক্ষুণ্ন হচ্ছে দেশের ভাবমূর্তি। অন্যদিকে আগামী বছর থেকে হজযাত্রীদের কোটা বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ-সৌদি আরব সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপ। এই গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বজলুল হক হারুন জানান, সৌদি আরবে হজ মজলিসের কাছে হাজীদের সংখ্যা আরো বৃদ্ধির অনুরোধ করলে বিষয়টি বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। গতকাল জাতীয় সংসদের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব তথ্য জানান। এসময় প্রতিনিধি দলের সদস্য মো. নূরুল ইসলাম সুজন ও মো. নজরুল ইসলাম বাবু এবং সাবেক এমপি ও বায়রার সভাপতি বেনজির আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বাংলাদেশের মানুষদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে মানুষের মধ্যে ধর্মীয় চেতনাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ জন্য হাজীদের সংখ্যা বাড়ছে। তাই অন্যান্য দেশে কোটা কমানো হলেও বাংলাদেশের জন্য তা বাড়ানো প্রয়োজন বলে সৌদি কর্তৃপক্ষকে বোঝানো সম্ভব হয়েছে। এসময় সংসদীয় কমিটির সভাপতি বলেন, সৌদি আরবে অবস্থানকালে প্রতিনিধি দল সৌদি আরবের শ্রম ও সমাজ উন্নয়ন মন্ত্রীর সঙ্গে শ্রম বাজার ও বাংলাদেশ থেকে নিয়োগ দেয়া গৃহকর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা করেন। সৌদিতে ৭০ হাজার বাংলাদেশি নারী গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করে। বর্তমানে সৌদি আরবে অবস্থানরত শ্রমিকরা এবং গৃহকর্মীরা বেশ ভালো আছেন। নির্যাতনের অভিযোগও খুবই কম। তিনি বলেন, তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশ মিশনের মাধ্যমে সৌদি কর্তৃপক্ষ তাদের সম্পর্কে সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছেন। এছাড়াও সৌদি কর্তৃপক্ষ তাদের এজেন্সির মাধ্যমেও সকল শ্রমিক বিশেষ করে নারী শ্রমিকদের বিষয়ে খোঁজখবর রাখেন। ভাষা সম্পর্কে অজ্ঞতা, সৌদি খাবার খাওয়ার প্রতি অনাগ্রহ ও দেশে থাকার প্রতি অতি আগ্রহকে গৃহশ্রমিকদের দেশে ফিরে আসার মূল কারণ হিসেবে উল্লেখ করে সংসদীয় প্রতিনিধি দলের নেতা বলেন, বাংলাদেশ থেকে যাওয়া শ্রমিকদের নিয়ে সৌদির অভিযোগ হলো- তারা যথাযথভাবে ট্রেনিংপ্রাপ্ত নয়। আগামীতে যাতে সঠিক ট্রেনিং নিয়ে সেখানে শ্রমিক যায় সেব্যাপারে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার সুপারিশ করা হবে। তিনি আরো বলেন, বয়স কম দেখিয়ে অনেক নারীকে সৌদিতে পাঠানো হচ্ছে। আর অনেক পুরুষ শ্রমিক সেখানে অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। তবে বাংলাদেশিদের থেকে সেখানে মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গারা বেশি অপরাধ করছে। যারা বাংলাদেশি পাসপোর্ট ব্যবহার করে সৌদিতে অবস্থান করছেন। উল্লেখ্য, সৌদি আরবের মজলিসে শূরার প্রধান (স্পিকার)-এর আমন্ত্রণে ৬ সদস্যের একটি সংসদীয় প্রতিনিধি দল সৌদি আরব সফর করেন। গত ৫-১৩ই নভেম্বর পর্যন্ত সফরের সময় প্রতিনিধি দল সৌদি আরবের মজলিসে শূরার প্রধান, শ্রম ও সমাজ উন্নয়ন মন্ত্রী, ধর্মমন্ত্রী এবং নবনিযুক্ত ওআইসি’র মহাসচিবসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মিলিত হন।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.