বাংলাদেশের গানের পাখি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সংগীতশিল্পী রুনা লায়লার জন্মদিন আজ। ছোটবেলায় মা ও বড় বোন দীনা লায়লার সেলাই করা নতুন জামা পরেই জন্মদিন কাটতো বিশ্বনন্দিত এ তারকার। ঈদের মতো জন্মদিনেও রুনা লায়লা নতুন জামা পেতেন মা এবং বোনের কাছ থেকে। এই সময়ে এসে তাই জন্মদিন এলেই এ সংগীত নক্ষত্র ছোটবেলার সেসব ফেলে আসা দিন খুব মিস করেন। ছোটবেলার জন্মদিন প্রসঙ্গ আসলেই একটু অন্যরকম হয়ে যান তিনি। রুনা লায়লা বলেন, আমার ছোটবেলার সব জন্মদিন ছিল স্মরণীয়। আমার জন্মদিনে বাড়িতে বন্ধুবান্ধব আসতো, কেককাটা হতো- সবমিলিয়ে খুব আনন্দ হতো। এখনতো আর তা করা হয় না। তবে মহান আল্লাহর কাছে অনেক শুকরিয়া যে সুস্থ আছি, ভালো আছি, এখনো ভালোভাবে গান গাইতে পারছি। এখন জন্মদিনে নিজেদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেই নিজের মতো উদ্যাপন করি। বাইরে কোথাও সাধারণত যাই না। তবে আমার জন্মদিন এলেই মায়ের কথা খুব মনে পড়ে। কারণ আমার মার জন্মদিন ১লা ডিসেম্বর। মিস করি বড় নাতিকেও। কারণ তার জন্মদিন ২৪শে নভেম্বর। গত বছর লণ্ডনে বড় নাতির সঙ্গেই তিনি নিজের জন্মদিন উদ্যাপন করেছিলেন। রুনা লায়লা তার আজকের অবস্থানের পেছনে বড় ভূমিকা হিসেবে তার মা এবং পাশাপাশি তার বাবা এবং বোন দীনা লায়লার কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেন। ভক্তদের ভূমিকার কথাও উল্লেখযোগ্য বলে অভিমত তার। দীর্ঘ সংগীত ক্যারিয়ারে চলচ্চিত্রে গান গেয়ে রুনা লায়লা এখন পর্যন্ত ছয়বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৭৭ সালে আবদুল লতিফ বাচ্চু পরিচালিত ‘যাদুর বাঁশি’ চলচ্চিত্রে প্লে-ব্যাক করার জন্য প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। এরপর একই সম্মাননায় ভূষিত হন ‘এ্যাকসিডেন্ট’, ‘অন্তরে অন্তরে’, ‘তুমি আসবে বলে’, ‘দেবদাস’, ‘প্রিয়া তুমি সুখী হও’ চলচ্চিত্রে প্লে-ব্যাকের জন্য। দেবু ভট্টাচার্যের সুরে করাচি রেডিওতে একটি বিশেষ অনুষ্ঠানে প্রথম রুনা লায়লার কণ্ঠে বাংলা গান শোনা যায়। ‘নোটন নোটন পায়রাগুলো’, ‘আমি নদীর মতো কত পথ পেরিয়ে’ শীর্ষক গান তার কণ্ঠে শোনা যায়। তবে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে রুনা লায়লা প্রথম প্লে-ব্যাক করেন ১৯৭০ সালে নজরুল ইসলাম পরিচালিত ‘স্বরলিপি’তে সুবল দাসের সুর-সংগীতে। এর রেকর্ডিং হয়েছিল লাহোরে। তখন তিনি পাকিস্তানে ছিলেন। গানটি হচ্ছে ‘গানেরই খাতায় স্বরলিপি লিখে বলো কী হবে’। দেশে আসার পর ১৯৭৬-এ প্রথম প্লে-ব্যাক করেন নূরুল হক বাচ্চু পরিচালিত ‘জীবন সাথী’ চলচ্চিত্রে। এর সুর-সংগীত করেছিলেন সত্য সাহা। রুনা লায়লার সঙ্গে দ্বৈতকণ্ঠে গেয়েছিলেন খন্দকার ফারুক আহমেদ। এখন পর্যন্ত ১০ হাজারেরও বেশি গানে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি। ১৮টি ভাষায় গান গাইতে পারেন রুনা লায়লা যা বিশ্ব সংগীত ভুবনে সত্যিই বিরল। এদিকে গত ৫ই নভেম্বর সিটি ব্যাংক এন.এ. কর্তৃক বিশেষ সম্মাননায় ভূষিত হন রুনা লায়লা।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.