বিশাখাপত্তম টেস্টে শেষ দিনের রোমাঞ্চ বাড়তে পারতো আরো। ক্যারিয়ারের সবচেয়ে মন্থর অর্ধশতক দেখালেন অ্যালিস্টার কুক। তবে ম্যাচের গতিপ্রকৃতি অনুযায়ী যথার্থই দেখাচ্ছিল তা। তবে নিজের উইকেট অক্ষত রাখতে পারলেন না ইংল্যান্ড অধিনায়ক। ১৭১ বলে অর্ধশতক পূর্ণ করেন কুক। আর ১৮৮ বলের ইনিংসে ব্যক্তিগত ৫৪ রানে ভারতীয় বাঁ-হাতি স্পিনার রবীন্দ্র জাদেজাকে অ্যালিস্টার কুক উইকেট দেন দিনের শেষ ওভারে। এর আগে ব্যক্তিগত ২৫ রানে উইকেট খোয়ান ইংল্যান্ডের গুজরাটি বংশোদ্ভূত ওপেনার হাসিব হামিদ। এতে গতকাল ৮৭/২ সংগ্রহ নিয়ে দিনের খেলা শেষ করে ইংল্যান্ড। ম্যাচের শেষ দিনে জয়ের জন্য ইংল্যান্ডের দরকার ৩১৮ রান। আর ভারতের প্রয়োজন ৮ উইকেট। তবে ভারতের মাটিতে টেস্টের চতুর্থ ইনিংসে সফরকারী কোনো দলের ৩০০ রানেরও নজির নেই। এমন সেরা ঘটনায় ১৯৮৭ সালে দিল্লিতে ২৭৬ রান তাড়া করে জয় কুড়ায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এতে ইংলিশদের দিতে হচ্ছে পরীক্ষা। ম্যাচ বাঁচাতে হলে ভারতের মাটিতে টেস্টের চতুর্থ ইনিংসে সফরকারী কোনো দলের সর্বাধিক ওভার মোকাবিলার রেকর্ড গড়তে হবে ইংলিশদের। শেষ ইনিংসে ইংল্যান্ড পাচ্ছে ১৫০ ওভার। ভারতের মাটিতে সর্বাধিক ১৪১.১ ওভার মোকাবিলার রেকর্ড দক্ষিণ আফ্রিকার। ২০১৫ সালে ওই ম্যাচে ভারতের কাছে হার দেখেন প্রোটিয়ারা। বিশাখাপত্তম টেস্টে জয়ের জন্য ইংল্যান্ডকে ম্যাচের চতুর্থ দিনের লাঞ্চের আগমুহূর্তে ৪০৫ রানের টার্গেট দেয় ভারত। নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ম্যাচের চতুর্থ দিনের লাঞ্চের আগে ২০৪ রানে থামে ভারতীয়রা। জবাবে ইনিংসের ২৮ ওভার শেষে ৪০/০ সংগ্রহ নিয়ে চা বিরতিতে যায় ইংলিশরা। আর রবিচন্দ্রন অশ্বিন দিনের ৮ ওভার বাকি রেখে তুলে নেন হামিদের উইকেট। ইংল্যান্ডের ওপেনিং জুটিতে জমা পড়ে ৭৫ রান। সতর্ক ব্যাটিং দেখাচ্ছিলেন অ্যালিস্টার কুক। ১৭১ বলে পূর্ণ করেন ব্যক্তিগত অর্ধশতক। ১৩৭ ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারে অ্যালিস্টার কুকের এটি সবচেয়ে মন্থর অর্ধশতক। ক্যারিয়ারে কুকের ১৬৪ বলে অর্ধশতকের ঘটনা রয়েছে দুটি। কুকের এমন প্রথম ঘটনাটি ২০১২ সালে কলম্বোয় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২০১৩ সালে টেন্ট্র ব্রিজে কুকের এমন দ্বিতীয় ঘটনাটি। টেস্ট ইতিহাসে ম্যাচের চতুর্থ ইনিংসে ৩৩২ রানের বেশি রান তাড়া করে জয়ের নজির নেই ইংল্যান্ডের। আর ম্যাচের শেষ ইনিংসে ৩০০ রানের টার্গেটে ইংল্যান্ডের জয়ের ঘটনা রয়েছে মাত্রই তিনটি। দ্বিতীয় ইনিংসে ৮২ রান করেন ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি। ২৭ রানে অপরাজিত থাকেন অভিষিক্ত তারকা জয়ন্ত যাদব। জয়ন্ত প্রথম ইনিংসে করেন ৩৫ রান। প্রথম ইনিংসে ১৬৭ রানে ঢাউস ইনিংস খেলেন বিরাট কোহলি। এতে ভিন্ন রেকর্ডে নাম ওঠে তার। ভারতের অধিনায়ক হিসেবে টেস্টে ম্যাচে চতুর্থ সর্বাধিক রানের রেকর্ড এটি। তালিকার শীর্ষে সুনীল গাভাস্কারের ২৮৯ ও ২৭৮। ১৯৭৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুই টেস্টের চার ইনিংসে গাভাস্কার করেন ১০৭, ১৮২* ও ২০৫, ৭৩। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২০১৪ সালে ম্যাচে ১১৫ ও ১৪১ রানের ইনিংস খেলেন কোহলি। বিশাখাপত্তমে ইংল্যান্ডের বল হাতে চারটি করে উইকেট নেন পেসার স্টুয়ার্ট ব্রড ও লেগস্পিনার আদিল রশিদ। সংক্ষিপ্ত স্কোর টস: ভারত, ব্যাটিং ভারত: ৪৫৫ ও ২০৪ (কোহলি ৮১, জয়ন্ত ২৭*, রাহানে ২৫, ব্রড ৪/৩৩, আদিল ৪/৮২)। ইংল্যান্ড: ২৫৫ ও ৮৭/২ ব্যাটিং (কুক ৫৪, হামিদ ২৫, জাদেজা ১/২৫, অশ্বিন ১/২৮)।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.