ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আজ তৃতীয় ও সিরিজের শেষ ওয়ানডে ম্যাচে চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। মাঠে ব্যাট-বলের লড়াই ছাড়াও এ ম্যাচকে ঘিরে ধরেছে অন্যরকম এক উত্তেজনা। ঢাকায় দ্বিতীয় ওয়ানডেতে মাশরাফিদের আনন্দ উদযাপন নিয়ে দুই দলের মধ্যে ছড়িয়ে যাচ্ছে উত্তাপ। বৃটিশ সংবাদ মাধ্যমগুলো বাংলাদেশ দলের মাঠের সেই উদযাপন নিয়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। গতকাল চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ম্যাচ-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনেও ইংল্যান্ডের সংবাদকর্মীর প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় টাইগার অধিনায়ককে। সেই সময় ইংলিশ সংবাদকর্মী মাশরাফিকে প্রশ্ন করেন ঘটনার জন্য ইংল্যান্ড অধিনায়ক বাটলারের কাছে দুঃখ প্রকাশ করবেন কিনা। মাশরাফি স্পষ্ট বাক্যে বলেন, ‘সত্যি বলতে আমরা কোনো ভুল করিনি। সরি বলার কিছু নেই। আমরা স্রেফ উদযাপন করেছি। আমাদের দুঃখ প্রকাশ করার কিছু নেই। যা হয়েছে, ম্যাচ রেফারি দেখেছেন এবং সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমি এখনো মনে করি, ছেলেরা স্রেফ উদযাপন করছিল।’ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে জিততে জিততে হেরে গিয়েছিল বাংলাদেশ। মিরপুর শেরে বাংলা মাঠে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ব্যাটিংয়ে ব্যর্থ হলেও; বোলিংয়ে কোনো সুযোগ না দিয়ে সিরিজে সমতা ফেরায় টাইগাররা। ম্যাচের এক পর্যায়ে ২৬ রানে ৪ উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। সেখান থেকে দলের হাল ধরেছিলেন অধিনায়ক জস বাটলার। কিন্তু ৫৭ রান করে দলকে যখন একটি শক্ত অবস্থানে নিয়ে যাচ্ছিলেন ঠিক তখনই তাসকিনের বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন। এরপর রিভিউ চাইলে সেখানেও দেখা যায় তিনি আউট হয়েছেন। তার বিদায়ের সময় টাইগাররা যখন আনন্দ উদযাপন করছিল তখন তা দেখে ক্ষেপে যান ইংল্যান্ড অধিনায়ক। তেড়ে গিয়ে ঝগড়া শুরু করেন সাব্বির ও মাহমুদুল্লাহর সঙ্গে। সেখানে মাশরাফি ও আম্পায়াররা তাকে থামান। কিছুটা সময় তিনি মাশরাফির সঙ্গে তর্ক করেন তিনি। তবে এই ঘটনার জন্য মাশরাফি ও সাব্বির শাস্তি পেলে বাটলারকে তিরস্কার করা হয়। ঘটনা নিয়ে মাশরাফি দাবি করে বলেন- এটি ছিল শুধু উদযাপন। তিনি বলেন, ‘আমরা ব্যাপারটা এভাবে দেখি যে উইকেট পাওয়ার পর আমরা স্রেফ সেলিব্রেট করছিলাম। এটাকে স্বাভাবিকভাবেই নেয়া উচিত। সব দলই উইকেট পেলে উদযাপন করে। তবে ম্যাচ রেফারি হয়তো ভেবেছেন উদযাপনটা কোড অব কন্ডাক্টের বাইরে হয়ে গেছে, যদিও আমরা সেটা বোঝাতে চাইনি।’ ম্যাচ রেফারির অভিমত। তাও মেনে নিয়েছেন মাশরাফি। তিনি বলেন, মেনে নেয়া ছাড়া আর কোনো বিকল্প তো নেই! আইসিসির আচরণবিধির এই ধারা নতুন বলেই শাস্তি পেতে হয়েছে তাদের। আমাদের সেলিব্রেশনটা যেভাবে করেছিলাম আমরা, হয়তো এখন সেটা কোড অব কন্ডাক্টের ভেতর নাই। হয়তো ওই কারণে জরিমানা হয়েছে। হয় কি, মাঠে ওইরকম উত্তেজনাপূর্ণ সময়ে অনেকভাবেই অনেকে উল্লাস করে। এমনকি ইংল্যান্ডের সঙ্গেও আমরা যখন অস্ট্রেলিয়ায় জিতেছি, তখন এভাবেই উল্লাস করেছি। তবে তখন এই ধরনের আইন ছিল না।’ অন্যদিকে আজ সিরিজের শেষ ওয়ানডেটি পরিণত হয়েছে অলিখিত ফাইনালে। আজ জিততে পারলেই বাংলাদেশ ঘরের মাঠে টানা সিরিজ জয়ের রেকর্ড গড়বে। সেই সঙ্গে প্রথম বারের মতো ইংল্যান্ডকে হারাবে ওয়ানডে সিরিজেও। নিজেদের মাঠে দারুণ পারফরম্যান্স করা বাংলাদেশ দল কিন্তু নিজেদের ফেভারিট মানছে না। অধিনায়ক গতকাল সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘সিরিজ শুরুর আগেই বলেছিলাম যে, ইংল্যান্ড ভালো খেলছে। গত দুই ম্যাচেও ওরা ভালো খেলেছে। আমরাই বরং নিখুঁত ছিলাম না। পরের ম্যাচ আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। চেষ্টা করব সেরাটা দিতে। তাই আমরা নিজেদের ফেভারিট ভাবছি না।’ মাঠের বিতর্ক ভুলে দল প্রস্তুত আছে সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলাতেই- জানান মাশরাফি। তিনি বলেন, ‘আমাদের দল পুরোপুরি স্বাভাবিক আছে। শতভাগ নিশ্চিত যে, আমাদের দল ওসব নিয়ে ভাবছেও না। আমরা ভাবছি কিভাবে ভালো খেলা যায়। আমি নিশ্চিত আমাদের ছেলেরা সবাই চেষ্টা করবে সুস্থির থাকতে এবং সেরা খেলাটা খেলতে।’
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.