চলচ্চিত্রে নাম তার নূতন। তবে পারিবারিক নাম ছিল ‘রত্না’। চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেত্রী সুমিতা দেবী সেই পারিবারিক নাম পরিবর্তন করে তার নাম দেন নূতন। তাও এটা ১৯৬৯ সালের কথা। ওই বছরেই মূলত চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে তার। মোস্তফা মেহমুদের পরিচালনায় তার অভিনীত প্রথম ছবির নাম ছিল ‘নতুন প্রভাত’। দেশীয় চলচ্চিত্রের সোনালি যুগের এই নায়িকা অনেক ব্যবসা সফল ছবি উপহার দিয়েছেন। বলতে গেলে প্রথম ছবিতেই নূতন তার অভিনয় মেধার প্রমাণ দেন। এরপর থেকে আজ পর্যন্ত প্রায় তিন শতাধিক চলচ্চিত্রে তিনি অভিনয় করেছেন। ‘ওরা এগারোজন’, ‘সংগ্রাম’, ‘পাগলা রাজা’, ‘স্ত্রীর পাওনা’সহ বেশকিছু ছবি তাকে পৌঁছে দেয় অন্য উচ্চতায়। এর মধ্যে ‘স্ত্রীর পাওনা’ ছবির জন্য তিনি পান জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। নূতন নায়করাজ রাজ্জাকের সঙ্গে ‘বদনাম’, ‘সৎ ভাই’, ‘মিস্টার মাওলা’সহ আরো অনেক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। নায়ক হিসেবে রাজ্জাকের শেষ চলচ্চিত্র ‘মালা মতি’র নাম ভূমিকায়ও ছিলেন নায়করাজ ও নূতন। মাঝে বিরতি দিয়ে কাজ করলেও তার অনেক কাজ আজো বেশ প্রশংসিত। ২০১৪ সালে বদিউল আলম খোকনের পরিচালনায় ‘হিরো দ্য সুপারস্টার’ ছবিতে অভিনয় করেন নূতন। এ ছবিতে নেতিবাচক চরিত্রে অভিনয় করেও প্রশংসিত হন তিনি। নতুন খবর হলো লম্বা একটা বিরতির পর আবারও অভিনয়ে ফিরছেন তিনি। তার নতুন ছবির নাম ‘অহংকার’। এ প্রসঙ্গে নূতন মানবজমিনকে বলেন, এ ছবিতে আমাকে নেতিবাচক চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যাবে। ছবিতে আট ভাইয়ের একমাত্র বোন আমি। এটি পরিচালনা করবেন শাহাদাৎ হোসেন লিটন। আসছে নতুন বছরের ৮ই জানুয়ারি থেকে এ ছবির কাজ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। ছবির গল্পটি সুন্দর। আশা করি, ভালো একটি কাজ হতে যাচ্ছে। এদিকে, এ ছবিতে নূতনের পাশাপাশি নায়ক-নায়িকার ভূমিকায় অভিনয় করবেন শাকিব খান ও বুবলী। এদিকে অভিনয়ের বাইরে বেশকিছু ছবিও প্রযোজনা করেছেন নূতন। প্রযোজনা সংস্থার নাম ছিল বিএন প্রোডাকশন। তার প্রযোজনায় উল্লেখযোগ্য ছবিগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘চান সুরুজ’, ‘কাবিন’, ‘সাহস’, ‘রূপের রাণী গানের রাজা’, ‘নাচে নাগিন’, ‘শত্রু ধ্বংস’ প্রভৃতি। একসময় প্রয়াত নায়ক জসীমের বিপরীতে জুটি হয়ে বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন নূতন। সেসব ছবিতে নূতনের অভিনয় প্রশংসিত হয়। তার প্রযোজনায় বেশিরভাগ ছবি দর্শক গ্রহণ করেছিলেন। বর্তমান সময়ে চলচ্চিত্রে নতুন শিল্পীদের সম্পর্কে নূতন বলেন, এখন আরো নতুন শিল্পীরা কাজ করছেন। নতুনরা ভালো করার চেষ্টা করছে। কিন্তু তাদের মধ্যে ধৈর্যটা অনেক কম। রাতারাতি তারকাখ্যাতির কথা না ভেবে নতুনদের ধৈর্য নিয়ে কাজ করতে হবে। চেষ্টা, ধৈর্য ও পরিশ্রম থাকলে অনেক দূর এগুনো যায়। কিন্তু এখন একটা অস্থির অবস্থা বিরাজ করছে। অস্থিরতা কাটিয়ে স্থির না হলে ভালো কিছু আশা করা যায় না। ভালো কাজ দর্শকদের বেশি বেশি উপহার দিতে হবে। একজন প্রকৃত অভিনয়শিল্পী হয়ে দর্শকের হৃদয়ে বেঁচে থাকাটাই সবচেয়ে বড় সার্থকতা।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.