বয়স ২৮ পেরিয়েছে মাস সাতেক আগে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলছেন ১০ বছরের বেশি সময়। এত দিন পরে এসে জাতীয় দলে খেলার স্বপ্নটা খুব রঙ্গিন মনে হচ্ছে মেহেদী মারুফের কাছে। হবে না কেন! ২০০৬ সালে প্রথম শ্রেণির জাতীয় লীগ খেলা এই ক্রিকেটার এখনও যে ফুরিয়ে যায়নি। তার প্রমাণ বিপিএলের চতুর্থ আসর। ঢাকা ডায়নামাইটসের হয়ে ৭ ম্যাচে ২ ফিফটিতে ৪০.৬৬ গড়ে করেছেন ২৪৪ রান। এখন তিনি এই আসরের সেরা ব্যাটসম্যানদের তালিকার দ্বিতীয় স্থানে। সেই সঙ্গে নতুন ভাবে তিনি নিজেকে প্রমাণ করেছেন চার ছয়ের মাস্টার হিসেবে। ৭ খেলায় ১৩টি ছয়ের মারের পাশাপাশি ২৪টি চারের মার হাঁকিয়েছেন। এরই মধ্যে তাকে নিয়ে ভাবতে শুরু করেছেন জাতীয় দলের নির্বাচকরা। তাই তার ধুলা জমে যাওয়া স্বপ্নের পাখা আবারো খুলতে শুরু করেছে। তাই বলে আত্মতুষ্টিতে ভুগছেন এমনও নয়। গতকাল সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে জাতীয় দলের সুযোগ নিয়ে তিনি বলেন, ‘জাতীয় দল নিয়ে কিছুটা চিন্তা চলে এসেছে, তবে খুব বেশি না। যেটা ভেবে বিপিএল শুরু করেছিলাম নিজেকে চেনানো কিংবা মারুফ নামটা ধারাবাহিকভাবে সবার মধ্যে ছড়ানোর এটা টার্গেট ছিল। এখন আপাতত জাতীয় দল, নিউজিল্যান্ড সিরিজ নিয়ে ভাবছি না।’ আজ পয়েন্ট তালিকায় তলানিতে থাকা দল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে মাঠে নামবে মারুফের ঢাকা। দলে সাঙ্গাকারা, সাকিব আল হাসান, জয়বর্ধনের মতো তারকা ক্রিকেটার থাকলেও সবাইকে ছাড়িয়ে এখন মারুফই ডায়নামাইটসের মূল শক্তি। তার রানে ভর করেই ঢাকা একটা সময় শীর্ষে ছিল টানা চার জয়ে। এরপর অবশ্য হেরে গেছে পরপর দুটি ম্যাচ। তাই আজ দলের জন্য ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই। দলের শীর্ষ রান করা ব্যাটসম্যান জানিয়ে দিলেন তিনি দলের প্রয়োজনেই ব্যাট চালাবেন। মারুফ বলেন, ‘আসলে ব্যক্তিগত অর্জনের থেকে দলগত পারফরম্যান্স এখন বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমরা শেষ দুটি ম্যাচ হেরে গেছি। আমাদের লক্ষ্য এখন সামনের ম্যাচগুলো জেতা। ব্যক্তিগত অর্জন আমার সামনে আসছে না।’ দল হারাতে বেশ হতাশও মারুফ। তিনি বলেন, ‘অবশ্যই আমার দিক থেকে হতাশাজনক। আমি প্রথম দিকের ম্যাচগুলো ক্যারি করতে পারছিলাম। কিন্তু শেষ দুটি ম্যাচ পারিনি। এটা চেষ্টা করছি। আবার যেন ধারাবাহিকতায় ফিরতে পারি। দলের পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যাটিংয়ের ধরন পরিবর্তন করতে হয়। প্রয়োজন থাকে যে স্ট্রাইক রেট বেশি নিয়ে খেলতে হবে। হাই রিক্স নিতে হয়। হয়তোবা হাই রিক্স নিতে গিয়ে উইকেট হারিয়েছি আমি।’ বিপিএলের আলোতে ধীরে ধীরে উজ্জ্বল হয়ে ওঠা মারুফ তার সামনের স্বপ্নটাও দেখছেন দল নিয়ে। তিনি বলেন, ‘ব্যক্তিগত অর্জন আসলে দিনের শেষে কাউন্ট হয়। দিনের শুরুতে নিজের দল, দলের জয় এগুলো নিয়েই বেশি চিন্তা করতে হয়। দলের জন্য খেলতে থাকি, টুর্নামেন্ট শেষে দেখা যায় কি হয়। আমি আসলে বাংলাদেশের টপ লেভেলের ক্রিকেটে ধারাবাহিকভাবে নিজের নামটি ছড়িয়ে দিতে চাই। পারফরম্যান্সে উন্নতি করার জন্য আমাদের দলে বেশ অভিজ্ঞ ক্রিকেটার আছে। আমাদের কোচ সুজন ভাইয়ের সাহায্য নিয়ে আমার ব্যাটিংয়ের ধরন আন্তর্জাতিক মানের করতে চাই। বাকিটা আল্লাহর ইচ্ছা।’ এক নজরে মেহেদি মারুফ ম্যাচ রান সর্বোচ্চ গড় ১০০/৫০ প্রথম শ্রেণি ১৮ ৭৯৪ ১৪১ ২৭.৩৭ ২/১ লিস্ট এ ৪৭ ১৪৯৪ ১১৮* ৩২.৪৭ ২/১০ টোয়েন্টি ২২ ৪২৭ ৭৫* ২২.৪৭ ০/২ বিপিএলে ৭ ম্যাচ রান প্রতিপক্ষ ৭৫* বরিশাল ২৫ রাজশাহী ১০ রংপুর ৬০ কুমিল্লা ৩৩ চিটাগং ৬ খুলনা ৩৫ রাজশাহী
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.