প্রায়ই চীন ভ্রমণে যান ফেসবুকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মার্ক জাকারবার্গ। মান্দারিন শেখার চেষ্টা করেছেন তিনি। প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংসহ দেশটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতার সঙ্গে দেখা গেছে তাঁকে। এর সবকিছুই দেশটির দুর্ভেদ্য সেই দেয়াল ভেদ করে চীনে ফেসবুক পৌঁছে দেওয়ার জন্য। তবে সবকিছু ছাপিয়ে সবচেয়ে বড় চেষ্টাটা কিন্তু এত দিন ফেসবুক কার্যালয়ে চালানো হয়েছে। আর তা হয়েছে গোপনেই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটির তিনজন বর্তমান ও সাবেক কর্মী নাম না প্রকাশ করার শর্তে সংবাদমাধ্যম দ্য নিউইয়র্ক টাইমসকে জানিয়েছেন, গোপনে ফেসবুক এমন ধরনের সফটওয়্যার তৈরি করছে, যা নির্দিষ্ট ভৌগোলিক অবস্থানের মানুষদের নিউজফিডে নির্দিষ্ট পোস্টগুলো দেখানো বন্ধ করবে। চীনে ফেসবুক চালুর জন্যই এই সফটওয়্যার তৈরি করা হচ্ছে। তবে চীনা ব্যবহারকারীদের নিউজফিডে কোন পোস্ট দেখাবে আর কোনটি দেখাবে না, তা ফেসবুক নিজে ঠিক করে দেবে না। চীনা কোনো প্রতিষ্ঠানের হাতে সেই নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দেওয়া হবে।
সেই ফেসবুক কর্মীরা অবশ্য জানিয়েছেন, চীনা কর্তৃপক্ষের কাছে যে নতুন এই সফটওয়্যার পেশ করা হবে, এমন কোনো লক্ষণ এখনো দেখা যায়নি। এমনটাও হতে পারে যে এটি হয়তো আলোর মুখই দেখবে না। চীনে ফেসবুক চালুর জন্য প্রায়ই নতুন নতুন পরীক্ষা চালিয়ে থাকে ফেসবুক। তবে ১৪০ কোটি মানুষের একটি দেশে ফেসবুক চালুর জন্য ঠিক কত দূর পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি যেতে পারে, তা অন্তত জানা গেল। কারণ ফেসবুক কর্তারা এত দিন বলে এসেছেন ‘বিশ্বকে আরও উন্মুক্ত ও সংযুক্ত’ করাই তাঁদের লক্ষ্য। তবু কি চীনে সফল হবে ফেসবুক? ধরে নিলাম, শত চেষ্টার ফলে কোনোভাবে চীনা কর্তাদের মন গলল। তবু কি ফেসবুক খুব একটা সুবিধা করতে পারবে? ফেসবুক-ধাঁচের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সেবা চীনে চালু করা হয়েছিল, সফলতার মুখ দেখেনি। অন্যদিকে চীনের নিজস্ব যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো এরই মধ্যে তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছে, সেগুলোর সঙ্গে কি প্রতিযোগিতায় পেরে উঠবে ফেসবুক? প্রশ্নগুলোর উত্তর যদিও জানা নেই, কিন্তু দেশীয় প্রতিষ্ঠানের প্রতি চীনা নাগরিকদের যে আস্থা এত দিন দেখা গিয়েছে, তাতে ‘হ্যাঁ’ বলার আগে অন্তত কয়েকবার চিন্তা করতে হবে।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.