মাশররাফি বিন মুর্তজা জাতীয় ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি দলের সফল অধিনায়ক। অন্যদিকে টেস্টে সফল অধিনায়ক মুশফিকুর রহীম। কিন্তু বিপিএলের চতুর্থ আসরে মাশরাফির কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ও মুশফিকের বরিশাল বুলস এখন পয়েন্ট তালিকাতে থাকা তলানির দুই দল। ৯ ম্যাচে ৩ জয়ে বুলস ৬ পয়েন্ট নিয়ে ৬ষ্ঠ স্থানে। অন্যদিকে ৮ ম্যাচে এক জয়ে ২ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার সপ্তম বা সর্বশেষ স্থানে ভিক্টোরিয়ান্স। দেশের দুই সফল অধিনায়কের জন্য এখনও কাগজে-কলমে সুযোগ আছে শেষ চারে যাওয়ার। দুই দলের জন্য তাই অবশিষ্ট প্রতিটি ম্যাচই ফাইনাল। কুমিল্লাকে যেমন জিততে হবে শেষ ৪ ম্যাচে, তেমননি বরিশালকেও শেষ তিন ম্যাচে জিততেই হবে। আজ সেই অগ্নিপরীক্ষায় মুখোমুখি হবে দুই দল। বিপিএলের ৩১তম ম্যাচটি মাঠে গড়াবে দুপুর ১টায় মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে। যারা জিতবে তাদের বাড়বে টিকে থাকার সুযোগ। গত আসরের চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স বড় প্রত্যাশা নিয়ে বিপিএল শুরু করেছিল। টানা তিন আসরে চ্যাম্পিয়ন অধিনায়ক মাশরাফি দ্বিতীয়বারের মতো দলটির নেতৃত্বে। কিন্তু মাঠে এবার মাশরাফির নেতৃত্বের জাদু আর কাজ করেনি। দলের ব্যাটিং-বোলিং ও ফিল্ডিং সবক্ষেত্রে চোখে পড়েছে নিদারুণ ব্যর্থতা। বিশেষ করে ব্যাটিং ব্যর্থতা চরম। কুমিল্লার পক্ষে এ আসরে সর্বোচ্চ রান করা ক্রিকেটার কে! নাজমুল হোসেন শান্ত। সদ্য অনূর্ধ্ব-১৯ দল থেকে আসা এই তরুণ ব্যাটসম্যানই কুমিল্লার পক্ষে সর্বোচ্চ ১৭৬ রান করেছেন একটি ফিফটিতে ভর করে। এরপর কে! মারলন স্যামুয়েলস। তার সংগ্রহ ৪ ম্যাচে ১৫৩ রান। অবশ্য ক্যারিবীয় এই তারকা ক্রিকেটারকে মাঠে নামাতেই বিশাল অনীহা ভিক্টোরিয়ান্স মালিক পক্ষের। অভিযোগ, তিনি অনেক ধীরগতিতে রান করেন। গত আসরে দ্বিতীয় সেরা ব্যাটসম্যান ইমরুল কায়েস এবার দলের জন্য বড় কোনো অবদানই রাখতে পারছেন না। ৮ ম্যাচ খেলে তার সংগ্রহ মাত্র ১৩০ রান। তার উপরেই আছেন ১৪০ রান করে আহমেদ শেহজাদ ও ১৩২ রান করা পাকিস্তানি ক্রিকেটার খালেদ লতিফ। কুমিল্লার টপ অর্ডারে সবচেয়ে ব্যর্থ ব্যাটসম্যান অবশ্য খেলেছেন সবগুলো ম্যাচই। তিনি উইকেট কিপার ব্যাটসম্যান লিটন কুমার দাস। ৭ ম্যাচে তার সংগ্রহ ৩৪ রান। তার চেয়ে এক ম্যাচ বেশি খেলে অধিনায়ক মাশরাফি করেছেন ৬৪ রান। কুমিল্লার হারের অন্যতম কারণ বাজে ব্যাটিং, আর তা বলতে দ্বিধা করেননি তরুণ শান্ত। তিনি বলেন, এটা কিন্তু টিম গেম। লোকাল বা ফরেন প্লেয়ারদের ব্যর্থতা এমন কিছু না। আমরা সবাই খারাপ খেলছি বলে ফলাফল এমন আসছে। লিটন ভাই, ইমরুল ভাই যদি পারফর্ম করতে পারতেন তাহলে দলের জন্য ভালো হতো। ইমরুল ভাই যদিও শেষ দুটি ম্যাচ খেলেছেন। শুধু ওনাদের কথা বলবো না। আমরা কিন্তু খারাপ খেলেছি। আমরা সবাই যদি সাপোর্ট করতাম মানে ব্যাটসম্যানরা যদি ভালো স্কোর করে দিতে পারতাম তাহলে অবশ্যই ভালো হতো।’ ভিক্টোরিয়ান্সের বোলিং যে খুব ভালো তাও না। একমাত্র সফল বোলার সোহেল তানভির। তার শিকার ১০ উইকেট। এরপর যিনি সফল তিনি আফগানিস্তানের লেগ স্পিনার রশিদ খান। তার শিকার ৬টি উইকেট। কাগজে কলমে বড় দল, চ্যাম্পিয়ন দলের তকমা থাকলেও মাঠের লড়াইয়ে কুমিল্লা সবচেয়ে পিছিয়ে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। অন্যদিকে হার দিয়ে শুরু করলেও বিপিএলের এ আসরে মুশফিকুর রহীমের নেতৃত্বে টানা তিন জয় তুলে নিয়েছিল বরিশাল বুলস। কিন্তু এরপর টানা হার। শীর্ষে থাকার পরিবর্তে এখন বিপিএলে তাদের টিকে থাকাই দায়। কারণও আছে। দলের পক্ষে আসলে ব্যাট হাতে পারফর্ম করছেন দুজনই- একজন অধিনায়ক, অন্যজন শাহরিয়ার নাফীস। অধিনায়ক মুশফিক শুধু বিপিএলের তিন আসরে সেরা ব্যাটসম্যানই নয়, এই আসরে তিনি ২ ফিফটিতে ৯ ম্যাচে করেছেন ৩০৩ রান। নাফীস করেছেন ১৫১ রান। এরপর বরিশালের সফল ব্যাটসম্যানটির নাম ডেভিড মালান। তার ব্যাট থেকে এসেছে ১৪৫ রান। বুলসের অবশ্য বোলিং দুর্বলতাও কম নয়। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি স্পিনার তাইজুল ইসলাম। এরপর বোলিংয়ে হাল ধরে রেখেছেন শুধুমাত্র লঙ্কান থিসেরা পেরেরা। তার শিকার ৬টি উইকেট।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.