বিনিয়োগকারীদের চাপের মুখে গতকাল মঙ্গলবার স্যামসাং ইলেকট্রনিকস জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি হয়তো একাধিক ভাগে বিভক্ত হতে পারে। দক্ষিণ কোরীয় ইলেকট্রনিকস প্রতিষ্ঠানটি মূলত লি পরিবার-নিয়ন্ত্রিত। প্রাতিষ্ঠানিক পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে মূল প্রতিষ্ঠান লি পরিবারের নিয়ন্ত্রণে রেখে সেটির অধীনে আলাদা আলাদা শাখা খোলার সম্ভাবনার পর্যালোচনা করবে বলে জানিয়েছে স্যামসাং। তাতে অন্তত ছয় মাস লেগে যাবে। স্যামসাং আরও জানিয়েছে, আগামী অর্থবছর থেকে লভ্যাংশের পরিমাণ অন্তত এক-তৃতীয়াংশ বাড়ানো হবে।
স্যামসাংয়ের শেয়ারমূল্য শক্তিশালী করতে মার্কিন হেজ ফান্ড এলিয়ট ম্যানেজমেন্টের প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে পর্যালোচনার সিদ্ধান্ত নেয় প্রতিষ্ঠানটি। স্যামসাংয়ের অন্তত একটি শাখা যুক্তরাষ্ট্রের কোনো শেয়ার বাজারে অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শও দিয়েছে এলিয়ট ম্যানেজমেন্ট।
এলিয়ট ম্যানেজমেন্ট যদিও স্যামসাংয়ের ক্ষুদ্র এক শেয়ারহোল্ডার, তবে তাদের আবেদনের পক্ষে আরও অনেক বিনিয়োগকারী একমত প্রকাশ করেন। অন্যদিকে গ্যালাক্সি নোট ৭ স্মার্টফোন নিয়ে ঝামেলার পর স্যামসাংয়ের যে কিছুটা দুর্দিন চলছে, সেটিও একটি কারণ। তবে এক চিঠিতে এলিয়ট জানিয়েছে, স্যামসাংয়ের সমস্যা শুধু নোট ৭ নিয়ে নয়। বরং এর জটিল মালিকানার ধরনের কারণে শেয়ারমূল্যে প্রতিষ্ঠানটির সঠিক মূল্য প্রতিফলিত হচ্ছে না।
চেয়ারম্যান লি কুন-হির পরিবার-নিয়ন্ত্রিত স্যামসাং সাম্রাজ্যের একটি অংশ স্যামসাং ইলেকট্রনিকস। লির ছেলে জে ওয়াই লি স্যামসাং ইলেকট্রনিকসের ভাইস চেয়ারম্যান। গত মাসে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক হিসেবে তিনি নিয়োজিত হলে প্রতিষ্ঠানে তাঁর প্রভাব বেড়ে যায়। এতে উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠে এলিয়ট। কারণ, স্যামসাংয়ের একটি অঙ্গপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অন্য একটি প্রতিষ্ঠানের একীভূতকরণ বন্ধ করতে চেয়েছিল এলিয়ট। জে ওয়াই লির ইচ্ছায় এলিয়টের প্রস্তাব হালে পানি পায়নি।
দক্ষিণ কোরিয়ায় বড় বড় পরিবার-নিয়ন্ত্রিত প্রতিষ্ঠানগুলো সাধারণত বাইরের হস্তক্ষেপ পছন্দ করে না। আর তাই এলিয়টের কথার সুরও হয়তো সে সময় পছন্দ হয়নি তাদের। এবার স্যামসাং নিজেই নরম সুরে কথা বলছে। কিন্তু প্রাতিষ্ঠানিক পুনর্গঠনের সম্ভাবনা পর্যালোচনা মানে যে পুনর্গঠন নয়, সে কথাও মাথায় রাখতে হবে।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.