অর্থমন্ত্রীর সম্পদ গত ৯ বছরে ৮৪ লাখ টাকা বেড়েছে। অর্থমন্ত্রী হিসেবে শুরুতে তার সম্পদের পরিমাণ ছিল ১ কোটি ১৪ লাখ টাকা। চলতি বছরের আয়কর রিটার্নে তিনি সম্পদ দেখিয়েছেন ১ কোটি ৯৮ লাখ টাকা।
সোমবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে নিজের আয়কর রির্টান দাখিলকালে এ তথ্য প্রকাশ করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
নিজের আয় ব্যয়ের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ২০০৮ সালে ২২ লাখ ৬২ হাজার টাকা আয় ছিল। ২০১৬ সালে দাঁড়িয়েছে ৩৪ লাখ ২৫ হাজার টাকায়। গত আট বছরে মোট আয় হয়েছে ৩ কোটি ৩ লাখ ৪২ হাজার ৭৪০ টাকা।
এ ছাড়া ২০১৫-১৬ করবর্ষে তিনি ২ লাখ ১২ হাজার ৬১১ টাকার কর পরিশোধ করেছেন। গত বছর তিনি কর দিয়েছেন ১ লাখ ১৭ হাজার ৫৩৩ টাকা। এক বছরের ব্যবধানে তার কর বেড়েছে ৯৫ হাজার টাকা।
সম্পদের হিসাব প্রকাশ্যে এভাবে অন্য মন্ত্রীদের দেয়া উচিত কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি অর্থমন্ত্রী হিসেবে এটি বলতে পারি না। এর জন্য আয়কর আইন রয়েছে। এছাড়া মন্ত্রীদের সম্পদের হিসাব প্রধানমন্ত্রীর কাছে জমা হয়।
আয়কর রির্টান দাখিলের সময় বাড়ানো হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোনো সুযোগ নেই। সময় বাড়বে না।
নির্ধারিত সময়ে রির্টান দাখিল না করলে জরিমানা প্রশ্নে তিনি বলেন, জরিমানা দিতে হবে। এটি খুব সামান্য। তবে তা শাস্তিযোগ্য নয়।
অর্থমন্ত্রীর সম্পদের মধ্যে রয়েছে বিজনেস কেপিট্যাল (হাফিজ কমপ্লেক্স) ৪ লাখ ৬২ হাজার টাকা, অকৃষিজাত সম্পদ সাড়ে ১৮ লাখ টাকা, শেয়ার ১ লাখ ৭৯ হাজার টাকার, শেয়ার সার্টিফিকেট এন্ড বন্ড ৬৬ লাখ ৫৫ হাজার টাকা, গাড়ি ৭৬ লাখ ৬২ হাজার টাকা, স্বর্ণলংকার ৫০ হাজার টাকা, আসবাব পত্র ৩ লাখ টাকা, ইলেক্ট্রিক্যাল সরঞ্জাম ২ লাখ টাকা, নগদ ৩৩ লাখ ৮৫ হাজার টাকা।
অর্থমন্ত্রী বলেন, করযোগ্য নয় এমন সম্পদ আছে প্রায় ২০ লাখ টাকার।
কর ফাঁকি রোধে ব্যবস্থা কী নেয়া হচ্ছে প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, প্রথমে শাস্তির ব্যবস্থা। দ্বিতীয় হচ্ছে কর দিতে মানুষকে উৎসাহিত করা। তবে বর্তমান তরুণ সমাজ কর দিয়ে এক ধরনের বাহাদুরি মনে করে। কর দিয়ে দেশকে উদ্ধার করছে। এটি ঠিক নয়।
ব্যাংকের অর্থ লুটপাট সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যাংকিং খাতে বড় অঙ্কের ঋণ দেয়া হচ্ছে। কিন্তু জামানত নেয়া হয় না। ব্যাংকের পরিচালনা বোর্ডে যারা আছেন তাদের পরিচিতদের মধ্যে এ ধরনের ঋণ দিচ্ছেন। এটি নিয়ন্ত্রণে ব্যাংক পরিচালনা বোর্ডে বর্তমানে রাজনৈতিক বিবেচনায় লোক নিয়োগ দেয়া হচ্ছে না। দেয়া হচ্ছে দক্ষতার বিবেচনায়। এখন যারা আছেন, পাবলিক স্প্রিডকে গুরুত্ব দিচ্ছেন বেশি। উন্নত এবং ধনী দেশগুলোতে এ ধরনের ঘটনা বেশি হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন অর্থমন্ত্রী।
রির্জাভের অর্থ উদ্ধারে আইনমন্ত্রীসহ একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল ফিলিপাইন গেছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রাপ্য রির্জাভের অর্থ ফেরত দিয়েছে ম্যানিলা। বাংলাদেশের রির্জাভ চুরির বিষয়টি নিয়ে তারা তদন্ত করছে। পদক্ষেপও নিচ্ছে। তাদের কাছ থেকে সহায়তা পাওয়া গেছে।
রাজস্ব আদায় পরিস্থিতি জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, রাজস্ব আদায় ভালো। সার্বিক অর্থনীতির পরিস্থিতি ভালো। কারণ দেশে শান্তি বিরাজমান। সকলের একটি চাওয়া সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই। সবার মধ্যে এ মানুসিকতা তৈরি হয়েছে। যা দেশের জন্য ভালো।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.