ট্রান্স-এশিয়ান রেলপথের অংশ হিসেবে যমুনা নদীর ওপর দিয়ে আলাদা একটি রেলসেতু নির্মাণ করা হবে। এটি নির্মাণে স্বল্প সুদে ঋণ দেবে জাপানের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা জাইকা।
আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর শেরে বাংলানগরে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সম্মেলন কক্ষে জাইকার সঙ্গে এ-সংক্রান্ত চুক্তি সই হয়েছে।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব কাজী শফিকুল ইসলাম ও জাপানি রাষ্ট্রদূত মাসাতো ওয়াতানাবে চুক্তিপত্রে সই করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান। পরে বিষয়টি সাংবাদিকদের জানানো হয়।
আজ জাইকার সঙ্গে মোট ছয়টি প্রকল্পে ১৩ হাজার কোটি টাকার ঋণচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
সংস্থাটি ৩৭তম প্যাকেজের আওতায় ছয়টি প্রকল্পের জন্য সাড়ে ১৭ হাজার কোটি ইয়েন ঋণ দিতে সম্মত হয়েছে। বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী (১ ইয়েন সমান দশমিক ৭৭ টাকা) এর পরিমাণ ১৩ হাজার কোটি টাকা।
প্রকল্পগুলোর মধ্যে যমুনা নদীর ওপর দিয়ে রেলসেতু নির্মাণে ১৮৯ কোটি টাকা, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের সীমান্ত এলাকায় নেটওয়ার্ক ব্যবস্থার উন্নয়নে দুই হাজার ২০০ কোটি, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মেট্রোরেল প্রকল্পে পাঁচ হাজার ৮১৮ কোটি, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের মাতারবাড়ী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে দুই হাজার ৯১২ কোটি টাকা এবং বিদ্যুৎ বিভাগের জ্বালানি সাশ্রয় ও উন্নয়ন প্রকল্পে ৯২২ কোটি টাকা ঋণ দেবে জাইকা।
এ ছাড়া দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন প্রকল্পে এক হাজার ৩০৮ কোটি টাকা ঋণ দেওয়ার লক্ষ্যে চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে।
এই ঋণের বার্ষিক সুদের হার মাত্র দশমিক শূন্য ১ শতাংশ, যা ১০ বছরের অন্তর্বর্তী সময়কালসহ ৪০ বছরের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে। সংস্থাটির সুদের হার বাংলাদেশের অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগী বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), রাশিয়া ও চীনের তুলনায় অনেক কম।
যমুনা রেলসেতু নির্মাণ প্রকল্পটি কাজ চলতি বছরের শেষ দিকে শুরু হবে। এ প্রকল্প শেষ হবে ২০১৮ সালের শেষে দিকে। বিদ্যমান বঙ্গবন্ধু সেতুর ৩০০ মিটার উজানে ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলসেতুটিতে ডুয়ালগেজ ডাবল রেললাইন নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে।
ট্রান্স-এশিয়ান রেলপথের অংশ হিসেবে এই রেলসেতু নির্মাণ করা হবে। এটি ভরতের সঙ্গে রেল যোগাযোগ সৃষ্টি করবে। এর মাধ্যমে সহজেই অভ্যন্তরীণ ও রপ্তানিযোগ্য পণ্যবাহী কনটেইনার পরিবহন করা যাবে বলে মনে করছে সরকার।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.