সদ্যবিদায়ী অর্থবছরে (২০১৫-১৬) রপ্তানি আয় তিন হাজার ৪০০ কোটি মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে। এটি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২ দশমিক ২১ শতাংশ বেশি। আর এর আগের অর্থবছরের (২০১৪-১৫) চেয়ে রপ্তানি আয় বেড়েছে ৯ দশমিক ৭২ শতাংশ।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বিদায়ী অর্থবছরে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল তিন হাজার ৩৫০ কোটি ডলার। এর বিপরীতে আয় হয়েছে তিন হাজার ৪২৪ কোটি ১৮ লাখ ডলার। আর ২০১৪-১৫ অর্থবছরে আয় হয়েছিল তিন হাজার ১২০ কোটি ৮৯ লাখ ডলার।
বিদায়ী অর্থবছরে তৈরি পোশাক খাতে সবচেয়ে বেশি বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয়েছে। তিন হাজার ৪০০ কোটি ডলারের মধ্যে দুই হাজার ৮০০ কোটি ডলারই আয় হয়েছে তৈরি পোশাক খাত থেকে।
প্রধান রপ্তানি পণ্য পোশাক খাতে ধারাবাহিক ভালো আয় হওয়ায় রপ্তানিতে এ সাফল্য অর্জন করা সম্ভব হয়েছে বলে বিশ্লেষক ও ব্যবসায়ীরা মনে করছেন।
এ প্রসঙ্গে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা বাংলাদেশ সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক প্রফেসর ড. মোস্তাফিজুর রহমান বাসসকে বলেন, বাংলাদেশের রপ্তানি খাত মূলত পোশাকশিল্প নির্ভর। রপ্তানিতে পোশাক খাতের অবদান দিন দিন বাড়ছেই। এ কারণে রপ্তানি আয়ে উল্লেখ করার মতো প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হচ্ছে।
রপ্তানি আয় আরো বাড়াতে প্রচলিত বাজার ছাড়াও অনেক নতুন বাজারের সম্ভাবনা কাজে লাগাতে পোশাকের পাশাপাশি অন্য পণ্য রপ্তানি বাড়ানোর প্রতি মনোযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেন ড. মোস্তাফিজুর রহমান।
বাংলাদেশ রপ্তানিকারক সমিতির (ইএবি) সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী বলেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার কারণে পোশাক খাত দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। তবে পোশাক ছাড়া অন্যান্য খাতের রপ্তানি আয় নেতিবাচক। এ জন্য তিনি পোশাকের পাশাপাশি অন্যান্য শিল্পপণ্যের ক্ষেত্রে সরকারের নীতি-সহায়তাসহ প্রণোদনা দেওয়ার সুপারিশ করেন।
ইপিবির তথ্যমতে, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে তৈরি পোশাক খাতের নিটওয়্যার পণ্য রপ্তানি আয় হয়েছে এক হাজার ৩২৬ কোটি ৬২ লাখ ডলার। আগের অর্থবছরের চেয়ে গত অর্থবছরে এই খাতের আয় ৭ দশমিক ৪৭ শতাংশ বেড়েছে। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে নিটওয়্যার পণ্য রপ্তানিতে আয় হয়েছিল এক হাজার ২৪২ কোটি ৬৭ লাখ ডলার।
এ সময়ে ওভেন খাতের পণ্য রপ্তানি আয় হয়েছে এক হাজার ৪৭৩ কোটি ৮৭ লাখ ডলার। আগের অর্থবছরে এ খাতের রপ্তানি আয় ছিল এক হাজার ৩০৬ কোটি ৪৬ লাখ ডলার। এ হিসাবে ওভেন খাতের পণ্য রপ্তানি আয় ১২ দশমিক ৮১ শতাংশ বেড়েছে।
এক বছরের ব্যবধানে কৃষিপণ্য রপ্তানি আয় ১ দশমিক ৭১ শতাংশ, কেমিক্যাল পণ্য ১০ দশমিক ৪৮, পেট্রোলিয়াম বায়োপ্রোডাক্ট ২৮২ দশমিক ৯৯, চামড়া ও চামড়াজাতীয় পণ্য ২ দশমিক ৬৯, রাবার ১৬ দশমিক ৬০, ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্য ১৪ দশমিক ১০, ফার্নিচার ১৮ দশমিক ৮০ শতাংশ এবং পাট ও পাটজাতীয় পণ্য রপ্তানি থেকে আয় ৫ দশমিক ৮৮ শতাংশ বেড়েছে।
বিদায়ী অর্থবছরে হিমায়িত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, হোম টেক্সটাইল ও সিরামিক খাতের পণ্য রপ্তানি আয় কমেছে।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.