জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে হলের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর প্রক্টরের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে অন্তত ৩০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
সোমবার সকালে পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে ভাস্কর্য চত্বরের সামনে জমায়েত হয় শিক্ষার্থীরা।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নানাভাবে শিক্ষার্থীদের ভয়-ভীতি দেখিয়ে, হুমকি দিয়ে আন্দোলন বন্ধ করে ক্লাসে যাওয়ার জন্য নির্দেশ দেয়।
সকাল ১০টায় শিক্ষার্থীরা ভাস্কর্য চত্বর থেকে মিছিল শুরু করে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে অবস্থান করতে গেলে মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বাঁধার সম্মুখীন হয়।
শিক্ষার্থীরা এই বাধা উপেক্ষা করে ফটকে তালা মেরে দেয়। এসময় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের নাম, বিভাগ, মোবাইল, আইডি কার্ড নিয়ে ছবি তুলে, ভিডিও করে বহিষ্কারের হুমকি দেয় এবং মাইক কেড়ে নিয়ে যায়।
প্রক্টর নূর মোহাম্মদ শিক্ষার্থীদের জামার কলার ধরে বলেন, ‘আন্দোলন না থামালে তোমরা জঙ্গি-শিবির-সরকার বিরোধী।’
এ সময় প্রক্টরিয়াল বডির শিক্ষকেরা আন্দোলনরত মেয়েদের অশ্রাব্য ভাষায় গালি দেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
পরবর্তীতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অনড় অবস্থান থেকে সরাতে না পেরে প্রক্টরের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ও শিক্ষক সমিতির নেতৃত্বে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় অভিযোগ করেন আন্দোলনকারীরা।
হামলায় প্রসেনজিৎ সরকার (গণিত), মেহেদী (হিসাব বিজ্ঞান), অনিমেষ (আইন), তানভির (বাংলা), রুহুল (অর্থনীতি), সমিত (সমাজকর্ম), বুশরা (বাংলা), বদরুজ্জামান (হিসাববিজ্ঞান), শফিক (হিসাববিজ্ঞান), মুনড়বাসহ (হিসাববিজ্ঞান) কমপক্ষে ৩০জন আহত হন।
পরে শিক্ষার্থীরা মিছিলসহ ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে আবার প্রধান ফটকে অবস্থান করে সমাবেশ করে।
সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আমরা ১১ বছর যাবৎ হল পাইনি। আর হল ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় চলতে পারে না। হলের দাবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক-কর্মচারী সকলের দাবি। কিন্তু আন্দোলনে এই ন্যাক্কারজনক হামলা তাদের শিক্ষকতার মত মহান দায়িত্বকেই প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।’
শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, ‘হল না থাকায় শিক্ষার্থীরা মেসে অবস্থান করছে। সম্প্রতি জঙ্গি দমনের নামে মেসে মেসে পুলিশি অভিযান চলছে। ফলে সর্ব্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে নিরাপরাধ শিক্ষার্থী হয়েও আমরা পুলিশের হয়রানির শিকার হচ্ছি। তাই অবিলম্বে নতুন হল নির্মাণ করে আবাসন সংকট নিরসন করার দাবি জানাই।’
সম্প্রতি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জায়গা খালি হয়েছে, ওই জায়গাটি জবি’র নিকট হস্তান্তর করে জাতীয় চার নেতার নামে চারটি হল নির্মাণের দাবি জানায় শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা নতুন হলের দাবিতে তাদের ধারাবাহিক আন্দোলনের অংশ হিসেবে মঙ্গলবারও সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত সকল ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের কর্মসূচি রয়েছে।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.