খুব ছোট্টবেলা থেকেই বিমান সেবিকা হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে সেনঝেন এয়ারলাইন্সে চাকরিও শুরু করেন একরত্তি মেয়েটি। শুধু মোটা টাকার মাইনের আশায় নয়, নিজের জীবিকার গ্ল্যামারে মোহেও নয়, শুধুমাত্র প্যাশন আর ভালোবাসার টানেই এই পেশায় আসা তাঁর। এবছর জুন মাসে দক্ষিণ চিনের গুয়াংডং-র শেনঝেন শহরে বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দরী বিমান সেবিকা হওয়ার প্রতিযোগিতা হয়। আর সেখানেই সকলের মন জয় করে এই সম্মানের অধিকারী হন লিউ মিয়াওমিয়াও। বিমান সেবিকার পেশায় আসেন ২০১০ সালে। উত্তর-পূর্ব চিনের সানশি-র সিয়ান শহরে জন্মগ্রহণ করেন বিশ্বের এই সুন্দরী বিমান সেবিকা। নিজের ডিউটি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল লিউ তিন মাসের একটি ওরিয়েন্টেশন ট্রেনিং নেন। তাঁর কথায়, সেই ট্রেনিংয়ে শেখানো হয়, চপস্টিকে খেতে খেতেও কীভাবে হাসা যায়। শুধু সুন্দর মুখ বা হাসির জন্য এই সম্মানে যে সম্মানিত হননি, তা বলাই বাহুল্য। তিনি জানিয়েছেন, এই ট্রেনিংয়ে শেখানো হয় বিমান যদি বড়সর দুর্ঘটনায় পড়ে বা আগুন লাগার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়, সেই অবস্থায় যাত্রীদের সুরক্ষিতভাবে বিমান থেকে কীভাবে বের করা যায় কিংবা একটি ছোট্ট ভুল থেকে ব্যাপক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। সৌন্দর্যের পাশাপাশি বিমান সেবিকার সমস্ত কর্তব্য পালনে ব্রতী তিনি। ২০১৪ সালে চিফ অ্যাটেনডেন্ট পদে উন্নীত হন। প্রতিদিনের উড়ানে যাত্রীদের নানারকম সমস্যার মুখোমুখি হতে পিছপা নন লিউ। হাসির জাদু আর দারুণ ব্যবহারেই কাটিয়ে দেন সমস্ত সমস্যা, ঝামেলা। এমনিই একটি ঘটনার কথা শুনুন এখানে.. একবার, বেজিং-এর একটি বিমান এমনিতেই দেরি করেছে, এর উপর গোদের উপর বিষফোঁড়া, বিমানের ভিতর পরিস্কার করতেও দেরি হওয়ায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন যাত্রীরা। অন্যদিকে হেভি এয়ার ট্রাফিক থাকায় বিমানটি ছাড়তেও দেরি করে। সেই অবস্থায় যাত্রীদের শান্ত করতে মাঠে নামেন লিউ ও তাঁর সহকর্মীরা। কিন্তু যাত্রীরা কে কার কথা শোনে। ক্ষুব্ধ যাত্রীদের শান্ত করতে এগিয়ে আসেন সেই লিউ-ও। তাঁর সুন্দর ও বুদ্ধিদীপ্ত হাসির ঝিলিকেই যাত্রীদের রাগ-ক্ষোভ গলে জল হয়ে যায়। শুধু তাই নয়, গোটা জার্নিটায় যাত্রীদের সঙ্গে সবরকম সুবিধা দিতে এতটুকু কসুর করেননি তিনি। মুখে একগাল হাসি আর নিজের কর্তব্যে ব্রতী থেকে নিজের কাজ করে গিয়েছেন। যখন কেউ তাঁর এই বিমানসেবিকার ইউনিফর্ম দেখে নতুন প্রজন্ম যখন অনুপ্রাণিত হয়ে ফ্লাইট অ্যাসিসটেন্ট হতে আসেন, সেই মুহূর্তটাই সবচেয়ে ভালো, জানান লিউ।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.