এবার বিপিএলে সবচেয়ে বেশি দর্শক হয়েছে বোধ হয় কালই। পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ দুটি দল খেলছে, দর্শকের ঢল নামাই উচিত ছিল। তবে উপচে পড়া গ্যালারির বেশির ভাগই ঢাকা ডায়নামাইটসের দর্শক। শেষ পর্যন্ত তাদের হতাশও হতে হয়নি, ঢাকা জিতেছে ৬ উইকেটে।
দেখার মতো সব ছক্কা মেরেছেন আন্দ্রে রাসেল ও আলাউদ্দিন বাবু। দুই ‘আ’ চিটাগং ভাইকিংসের বোলারদের বুঝিয়েছেন ‘পাওয়ার হিট’ কাকে বলে! পঞ্চম উইকেটে দুজনের ৩৩ বলে অবিচ্ছিন্ন ৫২ রানের জুটিই আসলে ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দিয়েছে। রাসেল ৩১ ও বাবু ৩৩ রানে অপরাজিত থাকেন। চট্টগ্রামের দলটিকে অবশ্য মূল্য দিতে হয়েছে বাজে ফিল্ডিংয়েরও। দুটি ক্যাচ আর স্টাম্পড করার সুযোগ হাতছাড়া করেছে তারা।
চিটাগং ভাইকিংসের ১৫তম ওভারে ডোয়াইন ব্রাভোর পরপর দুটি স্লোয়ার ব্যাটেই লাগাতে পারেননি তামিম ইকবাল। ব্রাভোর ‘সাফল্য’ যেন তাতিয়ে দেয় বাঁহাতি ওপেনারকে। আবারও স্লোয়ার দেন ক্যারিবীয় পেসার। এবার আর ব্যর্থ হননি তামিম। প্রথমটা উড়িয়ে দিলেন এক্সট্রা কাভার দিয়ে, পরেরটা লং অন দিয়ে। ওভার শেষে তামিমকে কী যেন বলে গেলেন ব্রাভো। হয়তো চিটাগং অধিনায়ককে বাহবাই দিয়েছেন ক্যারিবীয় অলরাউন্ডার। পরে যদিও ব্রাভোর অসাধারণ এক বলেই উড়িয়ে মারতে গিয়ে আউট তামিম।
বিপিএলে নিয়মিতই রানের ফোয়ারা ছুটছে তামিমের ব্যাটে। অপরাজিত ৬২ ও অপরাজিত ৬৬ রানের পর কাল ৫৯ বলে ৭৪—ফিফটির হ্যাটট্রিক হয়ে গেছে ভাইকিংস অধিনায়কের! ১১ ম্যাচে ৪২৫ রান করে আছেন সবার ওপরে। এখন পর্যন্ত তাঁর নামের পাশে পাঁচটি ফিফটি, ছুঁয়েছেন বিপিএলে এক আসরে সবচেয়ে বেশি হাফ সেঞ্চুরির রেকর্ড।
তবে কাল তামিমের অসাধারণ ইনিংসটির পরও চিটাগংয়ের স্কোর হয়েছে ৬ উইকেটে ১৩৪। তামিম-শোয়েব মালিকের জুটি যেভাবে এগিয়েছিল, রানটা আরও বড় হতে পারত তাঁদের। দুজন চতুর্থ উইকেট যোগ করেছেন ৫৬ বলে ৮৬ রান। ৭ রানে সানজামুল ইসলামের হাতে ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যাওয়া মালিক শেষ পর্যন্ত আউট হয়েছেন ৩৩ রানে। তামিম উইকেটে থাকার পরও ১৩ ওভার চিটাগংয়ের রানরেট ছিল ৬-এর নিচে। তা ছাড়া শেষ ৩ ওভারে মাত্র ১৫ রান তোলায় তাদের রানটা ১৪০ পেরোয়নি।
টুর্নামেন্টে সবচেয়ে শক্তিশালী দুটি দলের কালকের লড়াইকে তো অনেকেই বলছে ‘ফাইনালের রিহার্সেল’! এই মহড়ায় জিতে চিটাগং ও অন্য দলগুলোকে বড় বার্তাই দিয়ে রাখল ঢাকা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
খুলনা টাইটানস: ২০ ওভারে ১৪১/৬ (ওয়েসেলস ৪, হাসানুজ্জামান ২৯, মজিদ ১৮, মাহমুদউল্লাহ ৪০*, পুরান ১৪, আরিফুল ১৩, শুভাগত হোম ১, হাওয়েল ১২*; শরীফ ১/২৭, সাইফউদ্দিন ১/৩১, নাবিল ০/৩০, রশিদ ১/৩৩, মাশরাফি ৩/১৬)।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস: ১৮.৪ ওভারে ১৪২/৫ (ইমরুল ২০, শেহজাদ ০, স্যামুয়েলস ৬৯*, লতিফ ৩, মাশরাফি ২০, নাজমুল ৪, লিটন ২৪*; জুনায়েদ ১/২৪, মোশাররফ ১/২১, শফিউল ১/৪৬, হাওয়েল ২/২৫, মাহমুদউল্লাহ ০/২৫)।
ফল: কুমিল্লা ৫ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: মারলন স্যামুয়েলস।
চিটাগং ভাইকিংস: ২০ ওভারে ১৩৪/৬ (তামিম ৭৪, গেইল ১, এনামুল ০, জহুরুল ৬, শোয়েব ৩৩, নবী ০, জাকির ৯*, ইমরান ৪*; জায়েদ ০/২৯, রাসেল ১/২৩, বিটন ২/৩০, সাকিব ০/২৪, ব্রাভো ৩/২৭)।
ঢাকা ডায়নামাইটস: ১৮.২ ওভারে ১৩৫/৪ (মারুফ ৯, সাঙ্গাকারা ৩৫, নাসির ১৩, মোসাদ্দেক ৯, আলাউদ্দিন ৩৩*, রাসেল ৩১*, নবী ১/২, শুভাশিস ০/৩৬, শোয়েব ১/২৩, ইমরান ১/২৭, তাসকিন ০/২৩, সাকলাইন ০/২০)।
ফল: ঢাকা ৬ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: ডোয়াইন ব্রাভো।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.