তারকাদের প্রেম, বিয়ে আবার সেটা ভেঙে যাওয়া নতুন কিছু নয়। চলতি বছর জুড়ে একে একে বেশ কজন তারকার সংসার ভেঙেছে। সম্প্রতি সংগীতশিল্পী সালমার পর এবার সেই তালিকায় নাম যোগ হওয়ার গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে আলোচিত মডেল অভিনেত্রী সারিকার। ব্যবসায়ী মাহিম করিমের সঙ্গে তার বৈবাহিক সম্পর্ক মধুর বলেই সবাই জানেন। কিন্তু সে সম্পর্ক এখন তিক্ততায় রূপ নিয়েছে বলে মিডিয়ায় চাউর। সারিকা-মাহিমের মধ্যে বিচ্ছেদ হচ্ছে এমনটা নিশ্চিত করেছে ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র। সে সূত্র বলছে, ঘটনার সূত্রপাত গেল মাসের শুরু থেকেই। মাহিম করিমের সঙ্গে সারিকার সম্পর্ক তার আগে থেকেই ভালো যাচ্ছিল না। মিডিয়ায় কাজ করা নিয়ে স্বামীর সঙ্গে তার বনিবনা হচ্ছিল না অনেকদিন ধরে। এ বছরের কোরবানির ঈদ উপলক্ষে বেশ কিছু নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে মিডিয়াতে নিয়মিত হন সারিকা। এ ব্যাপারে শ্বশুরবাড়ি তথা স্বামী মাহিমের কোনো ইচ্ছে ছিল না। স্ত্রী আবারো মিডিয়াতে কাজ করবেন বিষয়টি সহজভাবে মেনে নেননি তিনি। যে কারণে দুজনের মাঝে ঝগড়া শুরু হয়। একপর্যায়ে মেয়ে সাহরিশকে নিয়ে মায়ের বাড়িতে চলে যান সারিকা। এখানেই শেষ নয়। সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে স্ত্রীকে ফেরাতে চেয়েছেন মাহিম। কিন্তু মিডিয়াতে কাজ করার ব্যাপারে তার আপত্তি রয়েই যায়। ফলে সারিকা আর স্বামী মাহিমের বাড়িতেও ফিরে যাননি। এরই ধারাবাহিকতায় মাহিম সারিকাকে গত ৩রা নভেম্বর তালাকনামা পাঠিয়েছেন বলে জানা যায়। এ ব্যাপারে সারিকার সঙ্গে মানবজমিন থেকে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিচ্ছেদের ব্যাপারটি অস্বীকার করে বলেন, বিচ্ছেদের বিষয়টি সত্য নয়। আর সংসার জীবনে একসঙ্গে থাকতে গেলে স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া হবেই। এছাড়া আর কিছুই বলার নেই। অন্যদিকে মাহিম করিম বলেন, আসলে যেভাবে শুনেছেন ব্যাপারটা তা নয়। এমনই বক্তব্য দিয়ে বিচ্ছেদের বিষয়টি এড়িয়ে যান মাহিম। এদিকে সারিকা-মাহিমের বিচ্ছেদের গুঞ্জন আরো জোরালো হয় সারিকার ফেসবুক আইডির নাম পরিবর্তনের মধ্যদিয়ে। বিয়ের পর থেকে যেটি ‘সারিকা করিম’ ছিল সেটি এখন ‘সারিকা সাবরিন’ হিসেবে দেখা যাচ্ছে। অন্যদিকে সারিকার বিচ্ছেদের ব্যাপারে আরো জানা গেছে, ঢাকাই চলচ্চিত্রের এক নায়ক তাকে প্ররোচিত করছেন নিয়মিত। বিয়ের প্রথম দুবছর ভালোই ছিলেন তিনি। হঠাৎ করেই মিডিয়ায় আসার ব্যাপারেও নাকি ওই নায়কের উৎসাহ বেশিই ছিল। প্রসঙ্গত, এই চিত্রনায়ক একসময় মডেল হয়ে বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। সে সূত্রে সারিকার সঙ্গে তার বন্ধুত্বটাও অনেক ঘনিষ্ঠ। উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ১২ই আগস্ট বিয়ে হয় সারিকা-মাহিমের। পরের বছরই মে মাসে তাদের সংসার আলো করে জন্ম নেয় কন্যা সন্তান সাহরিশ। স্বামীর সংসার সন্তান নিয়ে বেশ ভালোভাবেই দিন কাটাচ্ছিলেন সারিকা। এ নিয়ে উচ্ছ্বসিত হয়ে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে সুসময়ের কথা নিজেই বলেন। কিন্তু গেল কোরবানির ঈদ উপলক্ষে নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে মিডিয়ায় ফেরা নিয়ে দাম্পত্য কলহ সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে স্বামী মাহিমের কাছ থেকে আলাদা হয়ে যান জনপ্রিয় এ মডেল তারকা। ২০০৬ সালে গাজী শুভ্রর পরিচালনায় গ্রামীণফোনের ডিজুস প্যাকেজের বিজ্ঞাপনে মডেল হয়ে মিডিয়ায় অভিষেক হয়েছিল সারিকার। মৌ ও মোনালিসার পর সারিকার আবির্ভাব কিছুটা হলে মডেলিংয়ে শূন্যতা পূরণে সক্ষম হয়। একটানা তিন বছর শুধু বিভিন্ন বিজ্ঞাপনচিত্রের মডেলিংয়েই ব্যস্ত ছিলেন সারিকা। এরপর অমিতাভ রেজার নির্দেশনায় অ্যারোমেটিক বিউটি সোপের মডেল হয়েছিলেন। এ বিজ্ঞাপনে গ্ল্যামারাস উপস্থিতি তাকে নিয়ে আসে আলোচনায়। এরপর একে একে বেশ কয়েকটি বিজ্ঞাপনচিত্রেও মডেল হিসেবে কাজ করেন সারিকা। তবে মুঠোফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বাংলালিংক সিরিজের বিজ্ঞাপন সারিকাকে রাতারাতি তারকা খ্যাতি এনে দেয়। বাংলালিংকের বিজ্ঞাপনচিত্রগুলো প্রচারের পর সারিকাকে নিয়ে টিভি নির্মাতাদের মধ্যে আগ্রহ তৈরি হয়। তিন বছর মডেলিং করার পর ২০০৯ সালে টিভি নাটকে অভিনয় করার সিদ্ধান্ত নেন সারিকা। আশুতোষ সুজনের ‘ক্যামেলিয়া’ নাটকের মাধ্যমে তার ছোট পর্দায় অভিষেক ঘটে। তবে হুমায়ূন আহমেদ রচিত অরুণ চৌধুরী পরিচালিত ধারাবাহিক নাটক ‘রুমালী’ তাকে অভিনেত্রীর স্বীকৃতি এনে দেয়। এরপর বহু নাটকে অভিনয় করে বেশ প্রশংসিত হয়েছেন সারিকা।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.