টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন কেন্দ্রের নির্দেশে শেষ মুহূর্তে স্থগিত করা হয়েছে। প্রায় ১৪ বছর পর রোববার এই সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল। আওয়ামী লীগের স্থানীয় কয়েকজন নেতা বলছেন, সাংসদ আমানুর রহমান খান কারাগারে থাকায় ষড়যন্ত্র করে সম্মেলন স্থগিত করা হয়েছে। আবার কেউ বলছেন, সম্মেলন স্থগিত করার কারণ জেলা পরিষদ নির্বাচন। উপজেলা আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলন ২০০২ সালের ২৩ জুন অনুষ্ঠিত হয়। সেই সম্মেলনে আজমল হোসেনকে সভাপতি ও শহিদুল ইসলামকে (লেবু) সাধারণ সম্পাদক করা হয়। ২০০৫ সালে জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি শামসুর রহমান খানের সঙ্গে উপজেলা কমিটির বিরোধ শুরু হয়। তখন উপজেলা কমিটি ভেঙে দিয়ে মোয়াজ্জেম হোসেন খানকে আহ্বায়ক করে কমিটি করা হয়। সেই কমিটি তিন বছরেও সম্মেলন করতে পারেনি। এ জন্য ২০০৮ সালে এ কমিটি ভেঙে শহিদুল ইসলামকে আহ্বায়ক করে কমিটি গঠন করা হয়। অন্যদিকে শামসুর রহমানের অনুসারীরা নজরুল ইসলাম খানকে (সামু) আহ্বায়ক করে পাল্টা কমিটি করেন। শহিদুলের নেতৃত্বাধীন কমিটিকে স্থানীয় সাংসদ মতিউর রহমান এবং নজরুলের নেতৃত্বাধীন কমিটিকে শামসুর রহমান সমর্থন করতেন। ২০১২ সালের জানুয়ারিতে শামসুর রহমান মারা যান। একই বছর সাংসদ মতিউর রহমানও মারা যান। পরে শূন্য আসনের উপনির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পান শহিদুল ইসলাম। দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে শামসুর রহমানের ভাতিজা জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন ধর্মবিষয়ক সম্পাদক আমানুর রহমান খান (রানা) বিদ্রোহী প্রার্থী হন। এ জন্য আমানুর ও তাঁর অনুসারীদের দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। কিন্তু আমানুর বিজয়ী হওয়ার পর তাঁদের আবার দলে নেওয়া হয়। মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগের নেতা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় নাম এলে ২০১৪ সালে সাংসদ আমানুর আত্মগোপনে চলে যান। তখন উভয় পক্ষের সমন্বয়ে ২০১৪ সালে একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়। এ কমিটিতে আমানুরের সমর্থক নজরুল ইসলামকে আহ্বায়ক ও শহিদুল ইসলামকে যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়। কিন্তু তাঁরাও সম্মেলন করতে পারেননি। গত ৭ সেপ্টেম্বর এ কমিটি ভেঙে শহিদুল ইসলামকে আহ্বায়ক করে ৪১ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। শহিদুল ইসলাম বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের রোববারের (আজ) সম্মেলন অনুষ্ঠানের সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছিল। কিন্তু শুক্রবার রাতে হঠাৎ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে সম্মেলন স্থগিত করতে বলেন। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলাম বলেন, জেলা পরিষদ নির্বাচন সামনে। তাই সম্মেলন স্থগিত করা হয়েছে। আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে সম্মেলন হবে।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.