শোকার্ত মানুষের সমুদ্র। চারদিকে মানুষের কান্না। সবাই তাদের প্রিয় ‘আম্মা’ হয়ে ওঠা জয়ললিতার জন্য কাঁদছেন। এ কান্না শুধু চেন্নাইতেই নয়, সারা ভারতকে স্পর্শ করেছে। তামিলনাড়ুতে ঘোষণা করা হয়েছে ৭ দিনের শোক। রাজ্যজুড়ে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা। কেন্দ্রীয় সরকার গতকাল মঙ্গলবার একদিনের শোক ঘোষণা করে। এদিন সারা দেশে জাতীয় পতাকা রাখা হয় অর্ধনমিত। গতকালই হিন্দু ব্রাহ্মণ রীতি অনুযায়ী রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয়েছে তার মৃতদেহ। তার অন্তিম যাত্রা কিভাবে শেষ হবে তা নিয়ে এক পর্যায়ে সংশয় দেখা দেয়। তখন দলীয় হাইকমান্ড নির্ধারণ করে জয়ললিতাকে পোড়ানো হবে না। তাকে সমাহিত করা হবে। দলের প্রতিষ্ঠাতা এমজি রামাচন্দ্রনকেও একইভাবে সমাহিত করা হয়েছিল। এ খবর দিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া ও ভারতীয় বিভিন্ন মিডিয়া। গতকাল ভারতীয় টেলিভিশনগুলো নিয়মিত সম্প্রচার বাদ দিয়ে জে. জয়ললিতার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রচার করতে শুরু করে বিশেষ অনুষ্ঠান। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দিল্লি থেকে ছুটে যান অভিনেত্রী, তামিলনাড়ুর প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী জে জয়ললিতার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে। শ্রদ্ধা জানিয়েছেন ভারতের সর্বস্তরের রাজনীতিক ও সাধারণ মানুষ। সোমবার রাতে জয়ললিতা মারা যান। এর মধ্য দিয়ে তিনি তার প্রিয় চেন্নাইকে ভাসিয়ে গেছেন শোক সাগরে। গত ২২শে সেপ্টেম্বর তিনি অসুস্থ হয়ে ভর্তি হন হাসপাতালে। দীর্ঘ সময় জীবনের সঙ্গে লড়াই করতে করতে সোমবার স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ১১টায় তিনি মারা যান। সরকারি বার্তা সংস্থা পিটিআইয়ের রিপোর্টে বলা হয়েছে, প্রয়াত জয়ললিতার মৃতদেহ রাখা হয় চেন্নাইয়ের রাজাজি হলে। সেখানে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে শোকার্ত জনতার সমুদ্র কাঁদছিল। তারা বুক চাপড়ে প্রিয় ‘আম্মা’র প্রতি শ্রদ্ধা জানান। টেলিভিশন ফুটেজে ভেসে ওঠে সেই দৃশ্য। হাউমাউ করে কাঁদছিলেন আবালবৃদ্ধবনিতা। রাজাজি হলে জয়ললিতার মৃতদেহের ওপর রাখা হয় তার প্রিয় সবুজ রঙের শাড়ি। তার উপর জাতীয় পতাকা। এর আগে তার বাড়ি পোয়েস গার্ডেন থেকে মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হয় রাজাজি হলে। মানুষের কাছে তিনি ছিলেন ‘পুরাচি থালাইভি আম্মা’। অর্থাৎ বিপ্লবী নেত্রী আম্মা। তিনি ছিলেন এআইএডিএমকে দলের প্রধান। তিনি তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হন ৬ বার। তার মৃতদেহ রাজাজি হলের সিঁড়িতে পৌঁছার পর সেনাবাহিনীর চারজন সদস্য তা ভারতের তিন রঙা জাতীয় পতাকা দিয়ে ঢেকে দেন। এরপর তার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন মুখ্যমন্ত্রী ও. পান্নিরসেলবাম, তার মন্ত্রিপরিষদ, এমপি, এমএলএ ও সরকারের সিনিয়র কর্মকর্তারা। তার মৃতদেহের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন দীর্ঘদিনের আস্থাভাজন শশীকলা নটরাজন।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.