পৃথিবীর কক্ষপথে থাকা বিপুল পরিমাণ মহাকাশ বর্জ্যের কিছুটা অপসারণের জন্য একটি বিশেষ যান উৎক্ষেপণ করেছে জাপান। শুক্রবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।
ধারণা করা হয়, পৃথিবীর কক্ষপথে পুরোনো কৃত্রিম উপগ্রহের পরিত্যক্ত সরঞ্জাম, রকেটের টুকরা এবং অন্যান্য সরঞ্জামসহ প্রায় ১০ কোটি টুকরা মহাকাশ বর্জ্য রয়েছে। ১৯৫৭ সালে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন মহাকাশে প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ স্পুটনিক ১ স্থাপনের পর থেকে শুরু করে বিভিন্ন সময়ে মহাকাশ অভিযানে ওই বর্জ্য ফেলে আসা হয়। কৃত্রিম উপগ্রহগুলোর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা এবং কৃত্রিম উপগ্রহ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার পরীক্ষার কারণেই মহাকাশ বর্জ্য ব্যাপক হারে বেড়েছে। এসব বস্তুর অনেকগুলোই অত্যন্ত দ্রুত গতিতে পৃথিবীর কক্ষপথে পরিভ্রমণ করছে। এগুলোর কোনো কোনোটির গতি ঘণ্টায় ২৮ হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত। এসব বর্জ্য ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে। পাশাপাশি বিশ্বের টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্কের ক্ষতি করতে পারে।
জাপানি ভাষায় স্টর্ক বা কুনোতরি নামের স্বয়ংক্রিয় এই বিশেয যানে বর্জ্য সংগ্রহ করার ব্যবস্থা রয়েছে। এই যান পাঠানো হচ্ছে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের উদ্দেশ্যে। এটি উৎক্ষেপণ করা হয়েছে উত্তর প্রশান্ত মহাসাগরের তানেগ্যাশিমা মহাকাশ কেন্দ্র থেকে।
গবেষকেরা বলছেন, কৃত্রিম এই ইলেক্ট্রো-ডায়নামিক শেকল মহাকাশ বর্জ্যের কক্ষপথ থেকে সরিয়ে পৃথিবীর দিকে নামিয়ে আনার জন্য পর্যাপ্ত শক্তি তৈরি করবে। এবং পৃথিবীর কক্ষপথ থেকে সরিয়ে আনার পর এই বর্জ্য বায়ুমণ্ডলের সঙ্গে সংঘর্ষের পর ধ্বংস হবে।
গত মাসে ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ১০৬ বছরের পুরোনো জাপানের মাছ ধরার জাল তৈরির প্রতিষ্ঠান নিত্তো সিইমো কোম্পানি দেশটির মহাকাশ সংস্থার সঙ্গে এই শেকল তৈরি করেছে।
মহাকাশ বর্জ্য থেকে পরিত্রাণ পেতে এবং মহাকাশকে নভোচারীদের জন্য নিরাপদ করে তুলতে আন্তর্জাতিক পদক্ষেপের অংশ হিসেবে পরীক্ষামূলকভাবে এই যান উৎক্ষেপণ করল জাপান। কোটি কোটি ডলার মূল্যের মহাকাশ স্টেশন, আবহাওয়া ও যোগাযোগের কাজে ব্যবহৃত কৃত্রিম উপগ্রহকে জাপানের উদ্ভাবনী এই যন্ত্র রক্ষা করবে বলে আশা করা হচ্ছে।