কয়েক মাস আগে পশ্চিমবঙ্গে ধৃত আইএস জঙ্গিকে জেরা করতে কলকাতায় এসেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন এফবিআইয়ের সাত সদস্যের এক প্রতিনিধিদল। এই প্রতিনিধিদলে তিনজন মহিলা অফিসার রয়েছেন। গত ৪ঠা জুলাই বীরভূমের আমেদপুর স্টেশনে লাভপুরের ছেলে মহম্মদ মুসাউদ্দিন ওরফে মুসাকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। প্রথমে সে সিআইডির হেফাজতে থাকলেও বর্তমানে মুসাকে তাদের হেফাজতে নিয়েছে ভারতের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনআইএ। ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এর নেতাদের সঙ্গে তার যোগাযোগের তথ্য মেলায় তদন্ত করছে এনআইএ। গত বৃহস্পতিবারই এফবিআইয়ের প্রতিনিধিদলটি কলকাতা বিমানবন্দরে নেমেই সোজা চলে গিয়েছিল সল্টলেকের এনআইএ-র দপ্তরে। বৈঠক করেন এনআইয়ের আধিকারিকদের সঙ্গে। পরে সন্ধ্যায় প্রথম দফায় এফবিআইয়ের গোয়েন্দারা মুসাকে টানা তিন ঘণ্টা জেরা করেছেন। শুক্রবারও দফায় দফায় মুসাকে জেরা করেছেন মার্কিন গোয়েন্দারা। এনআইএ মুসাকে জেরা করে জানতে পেরেছিল ভারতে আইএসের হয়ে জেহাদি নিয়োগের দায়িত্বে থাকা সফি আরমানের সঙ্গে বিভিন্ন চ্যাট ম্যাসেঞ্জারের মাধ্যমে যোগাযোগ ছিল মুসার। সিরিয়া ও ইরাকের অনেক আইএস জঙ্গির সঙ্গেও যোগ ছিল মুসার। এছাড়া আইএসের সঙ্গে সংযোগকারী বাংলাদেশের আবু সুলেমান নামে এক জেহাদির সঙ্গে মুসা একাধিক বৈঠকও করেছিল। গোয়েন্দারা জেরায় জানতে পেরেছিলেন, ভারতে বসবাসকারী মার্কিন নাগরিকরা রয়েছেন আইএসের নিশানায়। আর এই পরিকল্পনা রূপায়ণের দায়িত্বে রয়েছে সুলেমান। ঢাকার গুলশান-কাণ্ডের মতো আইএস ভারতেও বেছে বেছে বিদেশিদের খুন করতে চায় বলে মুসার স্বীকারোক্তির খবর ভারতীয় গোয়েন্দারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে জানানোর পরই এফবিআই কলকাতায় আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এর আগে ১৯৯৫ সালে পুরুলিয়ার জঙ্গলে বিদেশি বিমানের অস্ত্রবর্ষণ মামলায় বৈমানিকদের জেরা করতে এবং ২০০২-এ আমেরিকান সেন্টারে জঙ্গি হানার তদন্তে এফবিআইয়ের গোয়েন্দারা কলকাতায় এসেছিল। এফবিআইয়ের গোয়েন্দারা যাতে মুসাকে জেরা করতে পারে সেজন্য জেলে থাকা মুসাকে এদিনই আদালতে তুলে এনআইএ দু-দিনের জন্য তাদের হেফাজতে নিয়েছে। এর পরেই তাকে নিয়ে আসা হয়েছে এনআইএ-র দপ্তরে। জানা গেছে, ফেসবুকের মতো সোশ্যাল নেটওয়ার্কিংয়ের মাধ্যমে আইএস নেতৃত্বের সঙ্গে মুসার যোগাযোগ সংক্রান্ত সব তথ্য ভারতীয় গোয়েন্দারা উদ্ধার করতে পারেনি। এবার এফবিআই এসেই তথ্য উদ্ধারে উদ্যোগী হবে বলে মনে করছেন এনআইএ-র গোয়েন্দারা। উল্লেখ্য, এর আগে বাংলাদেশের গোয়েন্দারাও কলকাতায় এসে মুসাকে জেরা করে গিয়েছেন।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.