প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও কুয়েতের প্রধানমন্ত্রী শেখ জাবের আল সাবাহর উপস্থিতিতে বাণিজ্য, সামরিক, ঋণ সহযোগিতা এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নে চারটি চুক্তি ও একটি স্মারক সই হয়েছে।
বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দুই দেশের সরকার প্রধানের উপস্থিতিতে এই চুক্তি সই হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও কুয়েতের প্রধানমন্ত্রী শেখ জাবের আল মুবারাক আল সাবাহ’র উপস্থিতেই দুই দেশের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও কর্মকর্তারা চুক্তিতে সই করেন।
প্রথমেই সই হয় বিনিয়োগ উন্নয়ন ও সুরক্ষা চুক্তি। কুয়েতের শিক্ষা ও উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী ড. বদর আহমদ আল ইসা এবং বাংলাদেশের শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু ‘দি এগ্রিমেন্ট ফর দি প্রমোশন অ্যান্ড রিসিপ্রোকাল প্রটেকশন অব ইনভেষ্টমেন্ট’- শীর্ষক এ চুক্তিতে সই করেন।
পরে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক বলেন, এই চুক্তি সই হওয়ায় বাংলাদেশে বিনিয়োগের একটি নতুন দুয়ার উন্মোচিত হয়েছে।
এরপর সই হয় কূটনৈতিক ও অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীদের ভিসা সহজীকরণ সংক্রান্ত চুক্তি। কুয়েতের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রদূত খালেদ সুলায়মান আল জারাল্লাহ এবং বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোজাম্মেল হক খান ‘দি এগ্রিমেন্ট অন মিউচুয়্যাল এক্সেমপশন অব প্রাইয়র এন্ট্রি ভিসা ফর হোল্ডারস অব ডিপ্লোম্যাটিক, স্পেশাল অ্যান্ড অফিসিয়াল পাসপোর্ট’- শীর্ষক চুক্তি সই করেন।
এ ছাড়া বাংলাদেশ এবং কুয়েতের মধ্যে সামরিক খাতে প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য সহযোগিতা চুক্তিটি। এতে সই করেন কুয়েতের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রদূত খালেদ সুলায়মান আল জারাল্লাহ এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. মাহফুজুর রহমান ।
সবশেষে সই হয় ঋণ সহায়তা চুক্তি। ‘বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কে পায়রা নদীর ওপর লেবুখালী সেতু নির্মাণ’- শীর্ষক প্রকল্পে অর্থায়নের লক্ষ্যে কুয়েতের আরব অর্থনৈতিক উন্নয়ন ফান্ডের (কেএফএইডি) সঙ্গে স্বাক্ষরিত এ ঋণচুক্তিতে সই করেন কেএফএইডি’র মহাপরিচালক আবদুল ওয়াহাব আল-বাদর এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) অতিরিক্ত সচিব মাহমুদা বেগম।
এটি পায়রা ব্রিজ প্রকল্প নিয়ে দ্বিতীয় ঋণ চুক্তি। এই চুক্তির আওতায় কুয়েতের ফান্ডের পরিমাণ ১৫ মিলিয়ন কুয়েতি দিনার বা ৫০ মিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ অর্থ।
এর আগে ২০১২ সালের মার্চ মাসে কেএফএইডি’র সঙ্গে আরেকটি ঋণ চুক্তি সই হয় যাতে কুয়েতি ফান্ডের পরিমাণ ছিল ১৪ মিলিয়ন কুয়েতি দিনার বা প্রায় ৪৮ মিলিয়ন ডলার।
সড়ক যোগাযোগ ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সড়ক ও জনপদ ডিভিশনের আওতাধীন সড়ক ও জনপদ দপ্তর প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পের মূখ্য উদ্দেশ্য পায়রা নদীর ওপর লেবুখালীতে বরিশাল-পটুয়াখালী সড়কে ১৪৭০ মিটির দীর্ঘ একটি সেতু নির্মাণ করা।
এই ব্রিজটি নির্মিত হলে সরাসরি রাজধানীর সঙ্গে পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোর সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হবে। ফলে পায়রা সমুদ্র বন্দর এবং দেশের অন্যতম বৃহৎ পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটার সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরো উন্নত হবে। এতে করে মানুষের ভোগান্তি লাঘব হবার পাশাপাশি এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক অবস্থা উন্নততর হবে।
দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জনগণের কাছে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি মোতাবেক এই প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়নে ইআরডি এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো কাজ করে যাচ্ছে।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.