বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, এ বছরের মানবাধিকার দিবসের শ্লোগান হচ্ছে ‘বছরের ৩৬৫ দিনই মানবাধিকার দিবস’। আর বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে মনে হয়, ৩৬৫ দিনই এদেশের মানুষের মানবাধিকার হরণের দিবস।
আজ শুক্রবার দুপুরে এক বাণীতে তিনি এসব কথা বলেন তিনি। জাতিসংঘ ঘোষিত মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে এ বাণী দেওয়া হয়।
খালেদা জিয়া বলেন, বর্তমান শাসকদের নৈরাজ্যকর দুঃশাসনের ছোবল থেকে মুক্তি পেতে হলে আমাদের এই মুহূর্তে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য এগিয়ে আসতে হবে। দেশের মানুষের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তার জন্য জনগণের মিলিত কণ্ঠের আওয়াজ তুলে বর্তমান অপশাসনের অবসান ঘটাতে হবে। জাতিসংঘ ঘোষিত মানবাধিকার দিবসে এই হোক আমাদের অঙ্গিকার।
বাংলাদেশে এখন ভয়াবহ দুঃসময় বয়ে চলছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, গত ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনের পূর্বাপর বাংলাদেশকে বধ্যভূমিতে পরিণত করা হয়েছে। বর্তমান অবৈধ ক্ষমতাসীন জোট সীমাহীন রক্তপাত ও বেপরোয়া নিপীড়ন-নির্যাতনের মধ্যে দিয়ে জনগণের সকল গণতান্ত্রিক অধিকারকে হরণ করে নিয়েছে। মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার মানবাধিকারের পরিপূরক। বর্তমানে বাংলাদেশের মানুষের মানবাধিকার শূন্যের নিচে অবস্থান করছে বলে মন্তব্য করেন বেগম জিয়া।
বাণীতে বিএনপি চেয়ারপারসন অভিযোগ করে বলেন, শুধুমাত্র বিরোধী দলের নেতা-কর্মীরাই নয়, সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী, ছাত্র, শিক্ষক, শ্রমিক, নারী ও শিশুসহ কারোই কোন নিরাপত্তা নাই। এদের অধিকাংশই গুম, গুপ্ত হত্যা এবং বিচার বহির্ভূত হত্যার শিকার হচ্ছেন। সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনা করলেই বিরোধী দলের নেতা-কর্মীরা ছাড়াও দল নিরেপক্ষ রাজনৈতিক বিশ্লেষক, টকশো আলোচকদের বিরুদ্ধেও মিথ্যা মামলা দায়ের করা হচ্ছে এবং কাউকে কাউকে কারান্তরীণও করে রাখা হয়েছে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশে মানুষ এক দলীয় স্বেচ্ছাচারী শাসন, গোষ্ঠী, বর্ণ ও জাতিগত সংঘাতে অবলীলায় খুন ও গুপ্ত হত্যার শিকার হচ্ছে। অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। অসংখ্য মানুষ বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হচ্ছে। অথচ জাতিসংঘের সার্বজনিন ঘোষণায় বলা হয়েছে বিশ্বের সব জাতির সকল মানুষের মানবাধিকার সংরক্ষণের নিশ্চয়তা থাকতে হবে। কিন্তু দেশে দেশে নিষ্ঠুর স্বৈরাচারী শাসকেরা জাতিসংঘ কর্তৃক মানবাধিকারের সার্বজনিন ঘোষণার নির্দেশনাগুলোকে তাচ্ছিল্য করে নিজ দেশের জনগণের ওপর চালিয়ে যাচ্ছে বর্বোরোচিত আক্রমণ।
তিনি বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার শুধুমাত্র ক্ষমতাকে চিরস্থায়ীভাবে ধরে রাখার জন্য জনমতকে অগ্রাহ্য করছে। আর সেজন্য এই সকল গণবিরোধী শাসক গোষ্ঠী জনগণের মানবাধিকারের তোয়াক্কা করে না। সুতরাং দুঃশাসনের অচলায়তন তৈরি করতে গিয়ে তারা প্রতিবাদী জনগণের ওপর নামিয়ে আনে পৈশাচিক উৎপীড়ন।
খালেদা জিয়া বলেন, জাতিসংঘ ১৯৫০ সালে ১০ ডিসেম্বরকে ‘মানবাধিকার দিবস’ ঘোষণা করে। সেই থেকে প্রতি বছর ১০ ডিসেম্বর এই দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। এই দিনে আমি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মৌলিক মানবিক অধিকারহারা নির্যাতিত মানুষের প্রতি সহমর্মিতা জ্ঞাপন করছি। যারা বাক, ব্যক্তি, চিন্তা, প্রার্থনা, মূদ্রণসহ নাগরিক স্বাধীনতার জন্য সোচ্চার হতে গিয়ে ক্ষমতাসীন স্বেচ্ছাচারী গোষ্ঠির নৃশংস নিপীড়নে আত্মদান করেছেন তাদের প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.