সাখাওয়াত হোসেন খানের প্রচারে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ কেন্দ্রীয় নেতারা আর সেলিনা হায়াৎ আইভীর পক্ষে সাবেক ফুটবল তারকারা মাঠে নেমেছেন। ফলে গতকাল শনিবার নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রচার ও গণসংযোগ ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে।
বেলা ১১টার দিকে নারায়ণগঞ্জ শহরের ডিআইটি বাণিজ্যিক এলাকায় সাখাওয়াত হোসেনের পক্ষে প্রচারের সময় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, এই নির্বাচন কতটা সুষ্ঠু হয়, তার ওপর নির্ভর করছে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ জাতীয় নির্বাচন। জনগণের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন ও অবস্থানের ফলে বাংলাদেশের জনগণ বিজয়ী হবে এবং আগামী দিনগুলোতে অবশ্যই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে। তিনি বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে আমরা বেছে নিয়েছি, এই নির্বাচনে আমরা অংশগ্রহণ করে জনগণের কাছে যাব। নারায়ণগঞ্জের সব মানুষ যাঁরা গণতন্ত্র বিশ্বাস করেন, ভোটের অধিকারে বিশ্বাস করেন, যাঁরা আইনের শাসনে বিশ্বাস করেন, যাঁরা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন, তাঁরা সবাই আজ একত্র হয়েছেন। এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে অবশ্যই নারায়ণগঞ্জের মানুষ সঠিক সিদ্ধান্ত নেবেন এবং ধানের শীষের প্রার্থীকে জয়ী করবেন।’
পরে মির্জা ফখরুল দলীয় প্রার্থীকে নিয়ে নগরীর বঙ্গবন্ধু সড়কের ২ নম্বর রেলগেট, উকিলপাড়া এলাকায় গণসংযোগ ও প্রচারপত্র বিলি করেন, ধানের শীষ প্রতীকে ভোট চান।
সাখাওয়াতের পক্ষে প্রচারে আরও অংশ নেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক (মিলন), রাজশাহীর সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী, জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর আলম খন্দকার ও সাধারণ সম্পাদক কাজী মনিরুজ্জামানসহ দলের স্থানীয় নেতারা।
প্রয়োজন হলে সেনা মোতায়েনের পক্ষে আইভী: আইভী প্রতিদিনের মতো গতকালও নিজে নিজে গণসংযোগ চালিয়েছেন। তবে শহরের চাষাঢ়া মোড়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের কাছে জাতীয় দলের সাবেক ও বর্তমান কয়েকজন ফুটবলার আইভীকে সঙ্গে নিয়ে প্রচার চালান। তাঁরা আইভী ও নৌকার জন্য ভোট চান। একসঙ্গে এত ফুটবলারের দেখা পেয়ে অনেকেই তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে ভিড় জমান। তাঁদের মধ্যে ছিলেন জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার আশরাফ উদ্দিন চুন্নু, জাকির হোসেন, জোবায়ের নিপু, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সহসভাপতি বাদল রায়, আবাহনী ক্রীড়াচক্রের চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ প্রমুখ।
আইভী দুপুরে চাষাঢ়ায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সাবেক ফুটবলারদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এরপর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইভী বলেন, নির্বাচন কমিশন প্রয়োজন মনে করলে সেনাবাহিনী কেন, আরও কোনো বাহিনীর প্রয়োজন হলে নিয়োগ দেবে। তিনি বলেন, ‘আমরা সব প্রার্থী চাই একটি সুষ্ঠু নির্বাচন। সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য ইসি যেটা প্রয়োজন মনে করে সেটা করবে। আমি ইসিকে বলেছি সরকারি দলের প্রার্থী হিসেবে কোনো ফেভার চাই না।’
সাংসদ শামীম ওসমানের সমর্থন নির্বাচনে কোনো প্রভাব ফেলবে কি না—এই প্রশ্নের জবাবে আইভী বলেন, ‘অবশ্যই আগামী নির্বাচনে এর ফলাফলে প্রভাব পড়বে।’ পরে আইভী সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুঁড়ি নামক স্থানে গণসংযোগ করেন।
মাঠে অন্য মেয়র প্রার্থীরাও: বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির মেয়র পদপ্রার্থী মাহবুবুর রহমান ইসমাইল, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাসুম বিল্লাহ, ইসলামী ঐক্যজোট বাংলাদেশের ইজহারুল হক, দল থেকে বহিষ্কৃত লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) কামাল প্রধান ও আরেক বহিষ্কৃত বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির রাশেদ ফেরদৌসও মাঠে সক্রিয় আছেন। তাঁরা গতকাল নগরীর বিভিন্ন এলাকায় প্রচার ও গণসংযোগ করেন।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.