গত রবিবার বাংলা একাডেমিতে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ) আয়োজিত তৃণমূল পর্যায়ে মানবাধিকার কর্মীদের সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এমজেএফ-এর গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান সৈয়দ মঞ্জুর এলাহীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মন্ত্রী আনিসুল হক। বিশেষ অতিথি ছিলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এডভোকেট সুলতানা কামাল এবং কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, ডিএফআইডির কান্ট্রি ডিরেক্টর জেনি এডমনসন। স্বাগত বক্তব্য দেন এমজেএফ-এর নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম।
আনিসুল হক বলেন, অপ্রিয় হলেও একথা সত্য যে আমাদের সমাজে খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের মতো মৌলিক অধিকারের পাশাপাশি দরিদ্রতা ও প্রান্তিকতার কারণেও মানুষ সামাজিকভাবে, অর্থনৈতিকভাবে ও আইনগতভাবে বঞ্চিত হয়। আমাদের সরকার সবসময় চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যের পাশাপাশি বৈষম্য ও বঞ্চনার হাত থেকে জনগণকে রক্ষা করতে। সরকারের এই উদ্যোগের সাথে বেসরকারি সংস্থা ও বিদেশি উন্নয়ন সংস্থাগুলো হাত মেলালে, সেই হাত আরো বেশি শক্তিশালী হবে। তিনি বলেন, সকলে মিলে কাজ করলে অচিরেই আমরা বাংলাদেশকে মানবাধিকার চর্চার ক্ষেত্রে একটি অনুকরণীয় রাষ্ট্রে পরিণত করতে পারব। আলোচিত বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন-২০১৬ বিশেষ বিধান নিয়ে সুলতানা কামালের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে মন্ত্রী বলেন, এটি আইনের প্রভিশন। বিশেষ পরিস্থিতির জন্য, দুই তিন বছর পর এই প্রভিশনের দরকার হবে না। মন্ত্রী প্রতিটি সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনায় দায়িদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে বলে জানান। অনুষ্ঠান থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সাজাপ্রাপ্ত ও চি?িহ্নত যুদ্ধাপরাধীদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে একটি আইনের খসড়া প্রস্তুত করণের কাজ চলছে।
এডভোকেট সুলতানা কামাল বলেন, সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে বাংলাদেশ নানা সূচকে এগিয়ে গেলেও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছে। তিনি মানবাধিকার কর্মীদের নানামুখি চ্যালেঞ্জর কথা উল্লেখ করে বলেন, নাসিরনগর, ভূয়াপুরের মতো মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা আমরা দেখতে চাই না। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন হওয়া দেশে সংবিধান গণমানুষের দলিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, সংখ্যালঘু হওয়ার কারণে, ভিন্ন জাতিগোষ্ঠী লিঙ্গ হওয়ার কারণে এ দেশে মানবাধিকার লংঘন হতে পারে না। যখন মানবাধিকার লংঘন হয় তখন মানবাধিকার কর্মীরা কিছু বললে তা রাষ্ট্র বিরোধী হয়ে যায় কেন? সেলিনা হোসেন বলেন, নিজেদের জীবনে বিপর্যয় আসতে পারে জেনেও পুরস্কার প্রাপ্তরা মানবাধিকার রক্ষায় কাজ করে অন্যদের উত্সাহিত করবে।
উল্লেখ্য মানুষের জন্য মানবাধিকার পদক -২০১৬ পেয়েছেন ১০জন তৃণমূল মানবাধিকার কর্মী। তারা হলেন টাঙ্গাইলের রাজেদা আক্তার, দিনাজপুরের সাবিনা ইয়াসমিন, কিশোরগঞ্জের চম্পা বেগম, দিনাজপুরের মমেজা বেগম, গাইবান্ধার অঞ্জলী রাণী দেবী, বান্দরবানের উথোয়াইং গ্য মারমা, নেত্রকোনার ফৌজিয়া নাসরিন, ঝিনাইদহের আলেয়া বেগম ও শ্যামলী বসু ও কুষ্টিয়ার ফিরোজা বেগম।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.