২০দলীয় জোটের নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা কমিটিতে না থাকলেও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জোটের সঙ্গেই থাকছে জামায়াত। কাউন্সিলর পদে দুই প্রার্থীও দিয়েছে দলটি। নারায়ণগঞ্জ মহানগর জামায়াতের আমীর মাওলানা মইনুদ্দিন আহমদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, অভ্যন্তরীণ ব্যস্ততার কারণে মঙ্গলবার ২০দলীয় জোটের মহাসচিব পর্যায়ের বৈঠকে জামায়াতের কোনো প্রতিনিধি উপস্থিত থাকতে পারেননি। তবে নির্বাচনে ২০দলীয় জোটের বিশেষ করে মেয়র প্রার্থীর পক্ষে থাকার এমনকি কাজ করার ব্যাপারে কেন্দ্রীয়ভাবে নির্দেশনা আছে। অর্থাৎ জোটের সঙ্গেই থাকছে জামায়াত। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণার জন্য ২০দলীয় জোটের পক্ষ থেকে ৩টি কমিটি গঠন করা হয়। মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ২০দলীয় জোটের এক বৈঠক শেষে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কমিটি ঘোষণা দেন। বৈঠকে অংশ নেন ২০দলীয় জোটের মহাসচিব ও সাধারণ সম্পাদক পর্যায়ের প্রতিনিধিরা। তবে জামায়াতে ইসলামীর কোনো প্রতিনিধি বৈঠকে অংশ নেননি। এ নিয়ে জোটের ভেতর নানা আলোচনা পর্যালোচনার সূত্রপাত হয়। এ নির্বাচনে জামায়াতকে দূরে রাখা হচ্ছে কি-না এমন প্রশ্নও সামনে আসে। তবে জামায়াতের দায়িত্বশীল সূত্র এসব কিছু নাকচ করেন। বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জ মহানগর জামায়াতের আমীর মাওলানা মইনুদ্দিন বলেন, কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের আলোকেই এই নির্বাচনে জামায়াত জোটবদ্ধ আছে। এ নিয়ে কোনো সন্দেহ, সংশয় নেই। তিনি বলেন, সাংগঠনিক কাজে ব্যস্ত থাকায় মঙ্গলবারের বৈঠকে জামায়াতের কোনো প্রতিনিধি ছিলেন না। তবে এর অর্থ এই নয় যে, জামায়াত এই নির্বাচনে জোটের সঙ্গে নেই। এখানে ২০দলীয় জোটের ভোট অনেক বেশি দাবি করে মহানগর জামায়াতের এই নেতা বলেন, অবাধ এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে নাসিক নির্বাচনে এই জোট বিশাল ব্যবধানে জয়লাভ করবে। নগরীর ২১ নম্বর ওয়ার্ডে এক কাউন্সিলর (কাজী রেদওয়ানুল মামুন) এবং সংরক্ষিত একটি ওয়ার্ডের নারী প্রার্থী (সাবিয়া সুলতানা) দেয়ার কথা জানিয়ে মাওলানা মইনুদ্দিন বলেন, এই দুই ওয়ার্ডে আমাদের প্রার্থী থাকার পরও বিএনপি প্রার্থী দিয়েছে। আসলে বিএনপি অনেক বড় দল। মাঠ পর্যায়ে তাদের সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ধরে রাখা অনেক সময় কঠিন হয়ে পড়ে। তবে এতে জোটের সম্পর্কের ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না বলে মনে করেন তিনি। তার মতে, কাউন্সিলর প্রার্থীরা স্বতন্ত্র। তাই এ ক্ষেত্রে প্রার্থীর ব্যক্তিগত দক্ষতা আর যোগ্যতা প্রাধান্য পাবে। জোটগত সুবিধা কম হবে। প্রসঙ্গত, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ২০ দলের প্রচার-প্রচারণা চালাতে প্রধান সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করবেন জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার ও সদস্য সচিব বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া। এছাড়া, নির্বাচনে ২০দলীয় জোটের মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানের পক্ষে গণসংযোগ চালাতে তিনটি টিম গঠন করে দেয়া হয়েছে। প্রথম টিমে আছে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাপ, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি), ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (ডিএল)। দ্বিতীয় টিমে আছে জাতীয় পার্টি (জাফর), জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি, বাংলাদেশ লেবার পার্টি, পিপলস লীগ, সাম্যবাদী দল। তৃতীয় টিমে আছে জমিয়তে ওলামায়ে ইসলাম, ইসলামী ঐক্যজোটের একাংশ, খেলাফত মজলিস, ইসলামিক পার্টি, ন্যাপ ভাসানী, মুসলিম লীগের প্রতিনিধি দল। এসব নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা টিমে জামায়াত না থাকার বিষয়ে তাৎক্ষণিক জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজকের বৈঠকে তাদের কোনো প্রতিনিধির নাম দেয়া হয়নি। নাম দেয়া হলে পরবর্তীতে বিষয়টি দেখা যাবে।’ মঙ্গলবারের বৈঠকে অংশ নেয়া জোটের প্রতিনিধিদের মধ্যে ছিলেন- মোস্তফা জামাল হায়দার, গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া, খন্দকার লুৎফর রহমান, এমএম আমিনুর রহমান, হামদুল্লাহ আল মেহেদী, আবদুল মতিন সৌদ, মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, আবুল কাশেম খান, মহিউদ্দিন ইকরাম, সৈয়দ মাহবুব হোসেন, শফিক উদ্দিন আহমেদ, খোকন চন্দ্র দাস, আবুল কাসেম ও মঞ্জুর হোসেন ইসা।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.