বাংলাদেশ ছাত্রলীগ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নতুন কমিটির মূল নেতৃত্বে আবারও রাজশাহীর স্থানীয় নেতাদের নিয়ে আসা হয়েছে। সম্মেলনের দুই দিন পর গতকাল রোববার বিকেলে গোলাম কিবরিয়াকে সভাপতি ও ফয়সাল আহমেদ রুনুকে সাধারণ সম্পাদক করে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক দুজনের বাড়িই রাজশাহীতে। ঘোষণা করা নতুন কমিটির ১৩ নেতার মধ্যে ছয়জনই রাজশাহীর। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী বুধপাড়া থেকেই নেতা হয়েছেন তিনজন। ছাত্রলীগ সূত্রে জানা গেছে, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে নেতা হওয়ার দৌড়ে রাজশাহীর স্থানীয় নেতারাই বরাবর এগিয়ে থাকেন। রাজশাহীর বাইরে থেকে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে রাজনীতি করা শিক্ষার্থীরা নেতৃত্বের দৌড়ে বরাবরই পিছিয়ে থেকেছেন। এর মূল কারণ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ওপর স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের নিয়ন্ত্রণকেই দায়ী করছেন ছাত্রলীগ নেতারা। এর ফলে রাজনীতি করার আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন রাজশাহীর বাইরে থেকে আসা নেতারা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নতুন কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পাওয়া গোলাম কিবরিয়ার বাড়ি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী বুধপাড়া এলাকায়। সাধারণ সম্পাদক রাজশাহী নগরের পার্শ্ববর্তী পবা উপজেলার নওহাটা পৌর এলাকার। এ ছাড়া কমিটিতে তিনজন সহসভাপতি, চারজন যুগ্ম সম্পাদক ও চারজন সাংগঠনিক সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। এই ১১ জনের মধ্যে চারজনই রাজশাহীর। নতুন কমিটি ঘোষণার পাশাপাশি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আট নেতাকে কেন্দ্রীয় কমিটিতে সদস্যপদ দিয়েছে ছাত্রলীগ। তাঁরা হলেন তন্ময়ানন্দ অভি, সাহানুর ইসলাম সাকিল, সাকিবুল হাসান বাকি, মিনারুল ইসলাম, মেহেদী হাসান রাসেল, টগর মো. সালেহ, আবদুল্লাহ আল মাসুদ, আখেরুজ্জামান তাকিম। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির এক নেতা বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করেন। কিন্তু এখানে ছাত্রলীগের কমিটি দেখলে মনে হয় রাজশাহী জেলা কিংবা মহানগর কমিটি করা হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে বাইরে থেকে এসে কেউ আর ছাত্রলীগের রাজনীতি করবেন না। জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি আবু হুসাইন বিপু বলেন, ‘নেতা নির্বাচনের ক্ষেত্রে যোগ্যতা বিবেচনা করা হয়। তাঁর বাড়ি কোথায় সেটা নেতা নির্বাচনে গুরুত্ব দেওয়া হয় না।’ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ২৪তম সম্মেলনে বাগমারা উপজেলার মিজানুর রহমানকে সভাপতি এবং বাঘা উপজেলার তৌহিদ আল হোসেন তুহিনকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি করা হয়। দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে প্রথমে তৌহিদকে সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে অব্যাহতি ও পরে মিজানুর রহমানকে বহিষ্কার করা হয়। এরপর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন রাশেদুল ইসলাম ও খালিদ হাসান। তাঁদের দুজনের বাড়িই রাজশাহীতে। এর আগে ২০১০ সালে পাবনার আওয়াল কবিরকে সভাপতি ও ক্যাম্পাসের পাশের এলাকার বাসিন্দা মাজেদুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। ২০০৪ সালে পাবনার ইব্রাহিম হোসেনকে সভাপতি ও রাজশাহীর আয়েন উদ্দিনকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। ২০০২ সালে দেওয়া আহ্বায়ক কমিটিতে আহ্বায়ক ছিলেন রাজশাহীর কামরুজ্জামান চঞ্চল। প্রসঙ্গত, গত ৮ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবাস বাংলাদেশ মাঠে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ২৫তম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলন শেষে প্রায় ৭০ জন পদপ্রত্যাশীর সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.