নাসিকের ১১নং ওয়ার্ডে লাটিম প্রতীকের কাউন্সিলর প্রার্থী যুবলীগ নেতা ওমর খৈয়াম চঞ্চলের ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে তাকে মারধর এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে। সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শহরের বরফকল মাঠ সংলগ্ন লাটিম প্রতীকের নির্বাচনী ক্যাম্পে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় কাউন্সিলর প্রার্থীসহ তার সঙ্গে থাকা আরো দুজনও মারধরের শিকার হন। এ ঘটনায় ওই এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। তবে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা জানিয়েছেন, চঞ্চলের পক্ষে গণসংযোগে না যাওয়ায় সে আওয়ামী লীগ নেতাদের গালমন্দ এবং দু-তিনজনকে মারধর করে। সে নিজেই বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার ছবি ভাঙচুর করে নাটক সাজিয়েছে। হামলার শিকার কাউন্সিলর প্রার্থী যুবলীগ নেতা ওমর খৈয়াম চঞ্চল জানান, সোমবার সকাল ১০টার দিকে তিনি বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় দেখতে পান আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকর্মী নৌকা প্রতীকের ভোট চাওয়ার পাশাপাশি তার অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী কাউন্সিলর প্রার্থী ও বিএনপি নেতা জমশের আলী ঝন্টুর পক্ষেও ভোট চাইছেন। এছাড়া তাদের মিছিলে তখন ওই বিএনপিপন্থি কাউন্সিলর প্রার্থীর বড় ভাই মঞ্জুর হোসেনও ছিলেন। তখন তিনি এর প্রতিবাদ করলে কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গে তার বাকবিতণ্ডা হয়। পরে তিনি সেখান থেকে তার নির্বাচনী ক্যাম্পে (ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ কার্যালয়) চলে আসেন। দুপুর সাড়ে ১২টায় তিনি শহরের পুরাতন কোর্টস্থ র্যাব-১১ কার্যালয়ে কর্মরত কর্পোরাল মো. ইউনুছের সঙ্গে কথা বলছিলেন। এ সময় অতর্কিতে আওয়ামী লীগ নেতা শাহজামাল, মালু, জসিম, জাহাঙ্গীর, তপু, মাহবুব, লিংকন, জাবেদসহ কয়েকজন তার নির্বাচনী ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে তাকে মারধর করতে থাকে। তাকে বাঁচাতে এসে অলি ও ঢালু নামে যুবলীগের দুই কর্মীও আহত হয়েছে। ওই সময় তারা চঞ্চলের জামাকাপড় ছিড়ে ফেলে। এসব আওয়ামী লীগ নামধারীরা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রয়াত সংসদ সদস্য নাসিম ওসমানের ছবি এবং চেয়ার টেবিল ভাঙচুর করে। প্রত্যক্ষদর্শী র্যাব-১১ কর্পোরাল মো. ইউনুছ জানান, তিনি তখন ভেতরের রুমে বসে কথা বলছিলেন। হঠাৎ ৬-৭ জন লোক চঞ্চলকে মারধর করতে থাকে। তবে কি কারণে তাকে মারধর করেছে তা তিনি বলতে পারেন না। এ সময় বাধা দেয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন তিনি। পরে খবর পেয়ে চঞ্চলের লোকজন ভেতরে প্রবেশ করলে তিনি কক্ষ থেকে বেরিয়ে যান। এদিকে খবর পেয়ে সদর মডেল থানার ওসি আসাদুজ্জামানের নেতৃত্বে একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর জানান, সোমবার সকালে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক সামছুন্নাহার চাঁপাকে নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা নাসিকের ১১নং ওয়ার্ডে সেলিনা হায়াৎ আইভীর নৌকা প্রতীকের পক্ষে গণসংযোগ করছিল। এ সময় যুবলীগ নেতা ওমর খৈয়াম চঞ্চল তার পক্ষে গণসংযোগে না আসায় কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে গালাগাল করতে থাকে। তখন চঞ্চল আওয়ামী লীগ নেতা মালো, মাহবুব ও রাসেলকে মারধর করে। আহত রাসেল হাসপাতালে চিকিৎসাও নিয়েছে। পরে বর্ষীয়ান আওয়ামী লীগ নেতা সামছুজ্জামান ভাষানী তার সঙ্গে কথা বলতে গেলে চঞ্চল তাকে রাজাকার বলেন। তখন ভাষানীর সঙ্গে থাকা নেতাকর্মীরা ক্ষিপ্ত হয়ে চঞ্চলের সঙ্গে হাতাহাতিতে লিপ্ত হয়। তবে ওই সময় আওয়ামী লীগের কোনো লোকজন বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাঙচুর করেনি। ওমর খৈয়াম চঞ্চল একজন মাদকসেবী। সে নিজেই বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাঙচুর করে আমাদের ওপর চাপিয়ে দিতে চেষ্টা করছে। সদর মডেল থানার ওসি আসাদুজ্জামান জানান, এ বিষয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.