২০১৫ সালে জার্মানিতে আসেন আবদুর জহর বশির। এসেই আশ্রয়ের আবেদন করেছেন। থাকছেন একটি শরণার্থী ক্যাম্পে। কষ্ট করে বড় মেয়ের বিয়ের জন্য পয়সা জমাচ্ছেন তিনি। ডয়চে ভেলের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে বশির তার জার্মানি আসার গল্প ও অতীত নিয়ে কথা বলেন। নোয়াখালীতে তিনি কৃষক ছিলেন। কিন্তু পর্যাপ্ত আয় হতো না বলে নব্বইয়ের দশকের শেষদিকে দুবাই চলে যান। সেখানে তিনি নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। দুবাইতে থাকাকালীন কয়েকবার বাংলাদেশে গিয়েছিলেন। শেষবার যান ২০০৮ সালে। এরপর ২০১০ সালে আরো উন্নত জীবনের আশায় ইউরোপের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন। প্রায় পাঁচ বছর পর তিনি জার্মানিতে এসে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেছেন। এই পাঁচ বছরের অনেকটা পথ পায়ে হেঁটে পাড়ি দিতে হয়েছে। দুবাই থেকে ওমান, ইরান হয়ে তুরস্কে পৌঁছেছিলেন। সেখানে দুর্বৃত্তদের কবলে পড়েন তিনি। প্রায় সাত মাস তাদের কাছে বন্দি থাকার পর প্রায় সাত হাজার ইউরো দিয়ে মুক্তি পান। দেশে বশিরের পরিবার জমিজমা বিক্রি করে সেই টাকার জোগান দিয়েছিল। মুক্তি পেয়ে বুলগেরিয়া, সার্বিয়া, হাঙ্গেরি ও অস্ট্রিয়া হয়ে জার্মানিতে পৌঁছেন বশির। এখন তিনি থাকছেন একটি শরণার্থী ক্যাম্পে। এক রুমে তিনি ছাড়াও আফ্রিকা ও পূর্ব ইউরোপ থেকে আসা দুজন থাকেন তার সঙ্গে। বশির জানান, তার তিন মেয়ে ও এক ছেলে। বড় মেয়ের বিয়ের জন্য কষ্ট করে টাকা জমাচ্ছেন। জানুয়ারি মাসে তার একটি ক্ষেতে কাজ শুরুর কথা রয়েছে। বশির আশা করছেন তার আশ্রয়ের আবেদন অনুমোদিত হবে। তাহলে পরিবারকে বাংলাদেশ থেকে জার্মানিতে নিয়ে আসবেন। আর যদি তা না হয় তাহলে কিছু অর্থ জমিয়ে দুই-তিন বছর পর দেশে ফিরে যাবেন। ততদিনে হয়তো বড় মেয়ের বিয়ে হয়ে যাবে। আর ছেলের বয়স তখন হবে ১০ কী ১১, যাকে তার কখনও কোলে নেয়া হয়নি। ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ২,৩৯৮ জন বাংলাদেশি নাগরিক জার্মানিতে আশ্রয়ের আবেদন করেছেন বলে অভিবাসন সংস্থা সূত্রে জানা গেছে।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.