মাস কয়েক আগে রাজধানীর কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউতে ‘টিউলিপ নেইলস অ্যান্ড স্পা’ নামে একটি পার্লার চালু করেন ঢাকাই ছবির হিট নায়িকা নিপুণ। বর্তমানে সেটা নিয়েই ব্যস্ত সময় করছেন এই অভিনেত্রী। এদিকে তার অভিনীত ও তৌকীর আহমেদ পরিচালিত ‘অজ্ঞাতনামা’ ছবিটি কিছুদিন আগে মুক্তি পায়। চলতি বছর ৬৯তম কান চলচ্চিত্র উৎসবের বাণিজ্যিক শাখা মার্কসে দু’ফিল্মের প্রিমিয়ার শোতে প্রথমবারের মতো প্রদর্শিত হয়েছে এ ছবিটি। ইমপ্রেস টেলিফিল্মের এ ছবিতে নিপুণের পাশাপাশি আরো অভিনয় করেছেন মোশাররফ করিম, শহীদুজ্জামান সেলিম, ফজলুর রহমান বাবু ও শতাব্দী ওয়াদুদ। এ ছবিতে বিউটি নামে একটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন নিপুণ। ছবিটির রেসপন্স নিয়ে তিনি মানবজমিনকে বলেন, ‘অজ্ঞাতনামা’ ছবিটি নিয়ে বেশ সাড়া পেয়েছি। সিনেমাটি থেকে মধ্যপ্রাচ্যে যাওয়ার স্বপ্ন দেখা একটা মেয়ের স্বপ্নভঙ্গ হওয়ার গল্পের মধ্য দিয়ে বাস্তবসম্মত মেসেজ পেয়েছে দর্শক। অনেকের কাছ থেকে ফোন কলের মাধ্যমে অভিনয়ের প্রশংসাও পেয়েছি। আসছে ২৩শে ডিসেম্বর নিপুণ অভিনীত মুক্তিযুদ্ধের সময়কার কাহিনী নিয়ে আরেকটি ছবি মুক্তি পেতে যাচ্ছে। এর নাম ‘বায়ান্না থেকে একাত্তর’। এ ছবির কাহিনী, সংলাপ, চিত্রনাট্য ও পরিচালনা করেছেন দেলোয়ার জাহান ঝন্টু। ছবিটি নিয়ে নিপুণ বলেন, এর আগে মুক্তিযুদ্ধের গল্প নিয়ে ‘একাত্তরের মা জননী’ ছবিতে কাজ করেছিলাম। অনুদানের এ ছবিটি মুক্তিযুদ্ধের আগে, মুক্তিযুদ্ধের সময় ও পরবর্তীকালের নানা বিষয় তুলে ধরা হয়। ছবিটিতে তিনটি চরিত্রে কাজ করেছিলাম। এবারের ছবিতেও বেশ চ্যালেঞ্জিং চরিত্রে অভিনয় করেছি। চরিত্রের নাম সখিনা। মেয়েটার ভাই আর্মিদের হাতে মেয়েটাকে তুলে দেয়। সে কারণে মেয়েটা আত্মহত্যা করতে যায়। এরপর ঘটতে থাকে নানা ঘটনা। ঝন্টু ভাই বেশ শক্তিমান একজন পরিচালক। অসাধারণ একটি ছবি বানিয়েছেন তিনি। আর ছবিটিতে আমার বিপরীতে অভিনয় করেছেন ফেরদৌস। আশা করি, ছবিটি সবাই পছন্দ করবেন। বছর শেষে মুক্তি পাচ্ছে নিপুণের ছবি। পুরো বছরটা দেশীয় চলচ্চিত্রের ক্ষরা গেছে বলে মনে করেন নিপুণ। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত এই অভিনেত্রী এ প্রসঙ্গে বলেন, আমি এ বছরটা আমার ব্যবসা নিয়েই ব্যস্ত ছিলাম। তেমন কোনো চলচ্চিত্রে কাজ করিনি। তবে দেখেছি চলচ্চিত্রের সময়টা খুবই খারাপ কেটেছে। চলচ্চিত্রে বর্তমানে কোনো ব্যবসা নেই। এ অবস্থা কাটিয়ে উঠতে পারছি না আমরা। উল্লেখ্য, ‘পিতার আসন’ ছবিতে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে রূপালী জগতে যাত্রা শুরু নিপুণের। ২০০৮ সালে ‘সাজঘর’ ও ২০০৯ সালে ‘চাঁদের মতো বউ’ ছবির মাধ্যমে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও অর্জন করেন তিনি। এরপর একে একে অভিনয় করেন ‘আমার প্রাণের স্বামী’, ‘মেয়ে অপহরণ’, ‘বাবার জন্য যুদ্ধ’, ‘বাবার কসম’, ‘বড় লোকের জামাই’, ‘জমিদার বাড়ি’, ‘কোটি টাকার ফকির’, ‘চাঁদের মতো বউ’, ‘শুভ বিবাহ’, ‘মা বড় না বউ বড়’সহ আরো বেশ কয়েকটি ছবিতে। এভাবে ক্রমশ নিজেকে চলচ্চিত্রাঙ্গনেই ব্যস্ত করে তোলেন তিনি। রিয়াজ, ফেরদৌস, আমিন খান, শাকিব খানসহ এই সময়ের স¤্রাট, নিরবের সঙ্গেও অভিনয়ে নিজেকে যথাযথভাবে উপস্থাপন করেছেন নিপুণ। গত কয়েক বছর ধরে দেশীয় চলচ্চিত্রে অনেক নতুন মুখ দেখেছেন দর্শক। তবে তাদের কেউই তেমন শক্ত অবস্থান করতে পারছে না। এ প্রসঙ্গে নিপুণ বলেন, এখন তো ফেসবুক তারকা বেশি। তাদের মধ্যে অনেকেই তেমন কোনো কাজ জানে না। তারা ফেসবুক এবং ভিডিও লাইভ নিয়েই দিন পার করছে। তাদের অভিনয়ে আরও বেশি পারদর্শী হতে হবে। তাহলেই সামনে যেতে পারবে। নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে আরও সামনের দিকে নিয়ে যেতে চান নিপুণ। পাশাপাশি অভিনয় সমান তালে করতে চান। সবশেষে তিনি বলেন, বর্তমানে অভিনয় থেকে দূরে সরে রয়েছি। তারপরও বেশকিছু কাজ করা হয়েছে। আমি চলচ্চিত্র ছেড়ে ব্যবসা নিয়ে রয়েছি বলে অনেকেই আমাকে অভিনন্দন জানিয়েছে। কারণ চলচ্চিত্রের অবস্থাটা আগের মতো নেই। দেশের নারীদের আন্তর্জাতিক মানের সৌন্দর্য চর্চায় অভ্যস্ত করার লক্ষ্যে আমার এই পার্লার। বড় অঙ্কের অর্থ বিনিয়োগ করেছি এতে। বর্তমানে বেশ ভালোভাবেই এগিয়ে চলছে প্রতিষ্ঠানটি।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.