রাজধানীর আশকোনায় জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে অভিযান চালানো বাড়ি ‘সূর্য ভিলা’ থেকে আজ রোববার এক কিশোরের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বাড়ির একটি কক্ষে পড়ে থাকা ওই লাশের হাতে পিস্তল ছিল। ওই বাড়ি থেকে গ্রেনেড, বিস্ফোরক তৈরির সরঞ্জামও উদ্ধার করা হয়েছে।
ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম আজ সন্ধ্যায় উদ্ধার অভিযান শেষে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
মনিরুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থল থেকে সর্বমোট ১৯টি গ্রেনেড উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া গ্রেনেড তৈরির সরঞ্জাম, কনটেইনার ও স্প্লিন্টার পাওয়া গেছে। জঙ্গিরা বেশ কিছু কাগজপত্র, ল্যাপটপ, মোবাইল ও প্রায় ১২ লাখ টাকা পুড়িয়ে নষ্ট করেছে। তিনি বলেন, আজ যে কিশোরের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে, তার হাতে একটি নাইন এমএম পিস্তল ছিল। পাশে আরও একটি একই ধরনের অস্ত্র পড়ে ছিল। এ নিয়ে সেখান থেকে মোট তিনটি অস্ত্র পাওয়া গেল। তিনি জানান, লাশটি আফিফ কাদেরীর। আফিফ আজিমপুরে নিহত জঙ্গি তানভীর কাদেরীর যমজ দুই ছেলের একজন।
মনিরুল ইসলাম বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য উদ্ধার হওয়া লাশ আজই ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হবে। এ ঘটনায় আজ রাতেই রাজধানীর দক্ষিণখান থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করা হবে।
কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান বলেন, পুলিশের হাতে যারা আটক রয়েছে, তাদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে যে গতকাল আত্মঘাতী জঙ্গি নারীর প্রথম স্বামীর নাম ইকবাল। কিছুদিন আগে ইকবাল ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। পরে ওই নারী সুমন নামের একজন সন্ত্রাসীকে বিয়ে করেন। এক-দেড় মাস আগে সুমন নিখোঁজ হয়। চিকিৎসাধীন আহত মেয়েটি আত্মঘাতী নারীর আগের স্বামী ইকবালের মেয়ে বলে জানা গেছে।
মইনুল ইসলাম মুসা ইমতিয়াজ পরিচয়ে ওই বাসা ভাড়া নিয়েছিলেন। তিনি বর্তমানে নব্য জেএমবির অন্যতম প্রধান নেতা। গুলশান হামলায় এই মুসার কোনো সম্পৃক্ততা ছিল কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে মনিরুল ইসলাম বলেন, গুলশান হামলার আগেই মুসা দলে যোগ দেয়। তবে ওই হামলার সঙ্গে তার কোনো সংশ্লিষ্টতা ছিল কি না, সেটি তদন্তে বেরিয়ে আসবে।
গত শুক্রবার মধ্যরাত থেকে শুরু হয়ে ১৬ ঘণ্টা ধরে ওই বাড়ি ঘিরে অভিযান চলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর। ‘অপারেশন রিপল ২৪’ নামে ওই অভিযানে নিহত হন দুই ‘জঙ্গি’। তাঁদের মধ্যে এক নারী ‘জঙ্গি’ আত্মঘাতী হন। আত্মসমর্পণ করেন দুই শিশুসহ দুই নারী। আহত এক শিশু ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.