যেমন উইকেট, তেমন শুরু। স্বাভাবিক বাউন্স নিয়ে ব্যাটে আসছিল বল। দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েস যেন এমন বোলিংয়ের জন্যই প্রস্তুত ছিলেন। প্রথম দুই ওভার একটু দেখলেন। তৃতীয় ওভারে টিম সাউদিকে দুই বাউন্ডারি তামিমের। দুই ওপেনার মিলে সেখান থেকেই আঁকতে থাকেন সম্ভাবনার ছবি।
কিন্তু ওপেনিং জুটি ১০২ রান এনে দেওয়ার পর বাংলাদেশ দলের স্কোর যতটা বড় হবে বলে আশা করা হচ্ছিল, ততটা হয়নি। ৯ উইকেটে ২৩৬ রান, সেটাও সাত নম্বরে নামা নুরুল হাসানের ৪৪ রানের সৌজন্যে। মিডল অর্ডারের ব্যর্থতার কারণেই সম্ভাবনা জাগিয়েও ৩০০ বা তার কাছাকাছি যেতে পারেনি বাংলাদেশের ইনিংসে। বরং ইমরুল আউট হওয়ার পর ৭৭ রানের মধ্যে ৭ উইকেট হারিয়ে ২০০–র নিচে অলআউট হওয়ারই শঙ্কা জেগেছিল একটা সময়ে। নুরুল হাসানের সাহসী ব্যাটিংয়ে শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। ইনিংস শেষে বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে ৮ উইকেটে ২২৫ রান। সাউদির সঙ্গী হয়ে নতুন বলে বোলিংয়ে আসেন সাত বছর পর নিউজিল্যান্ডের ওয়ানডে দলে ফেরা জিতান প্যাটেল। কিন্তু পেসারদের জন্য উইকেটে হালকা মুভমেন্ট আছে ভেবেই হয়তো অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন চতুর্থ ওভারে প্যাটেলের পরিবর্তে নিয়ে আসেন ম্যাট হেনরিকে। তাতেও আটকে রাখা যাচ্ছিল না বাংলাদেশের দুই ওপেনারকে। গত অক্টোবরে আফগানিস্তান সিরিজে করা সেঞ্চুরির পর প্রথম ফিফটি করলেন তামিম। ইমরুল (৪৪) ফিফটি না পেলেও তামিমের মতো চার বাউন্ডারি তাঁর ইনিংসে, সঙ্গে জেমস নিশামকে ওয়াইড লং অন দিয়ে গ্যালারিতে পাঠানো বিশাল ছক্কা। ২২তম ওভারে ইমরুলের বিদায়ের পরই বিপর্যয়ের শুরু। শর্ট থার্ডম্যানের কাছে দৌড়ে গিয়ে এক হাতে তাঁর দুর্দান্ত ক্যাচটা নিয়েছেন ব্রুম। মাঠ থেকে ক্যাচে কোনো সমস্যা বোঝা না গেলেও টেলিভিশন রিপ্লে দেখে মনে হয়েছে ব্রুমের হাতে জমার আগেই মাটির স্পর্শ লেগেছে বলে। সেখান থেকেই শুরু ব্যাটসম্যানদের ড্রেসিংরুমমুখী মিছিল। শুরু থেকেই আত্মবিশ্বাসী সাব্বির মাত্র ১৪ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ১৯ রান করে ফেলেছিলেন। হেনরির কাঁধের কাছে উঠে আসা বলে কট বিহাইন্ড হয়ে হঠাৎই থেমে যেতে হয় তাঁকে। সাউদির শর্ট বলের শিকার মাহমুদউল্লাহ উইকেটে থেকেছেন মাত্র ৭ বল। আর সাকিব ৩৫ বল খেলে ফেলেও খুঁজে পাননি ব্যাটের ছন্দ। ১৮ রান করে তাঁর উইকেটটা গেছে শেষ পর্যন্ত রনকির সরাসরি থ্রোতে রানআউট হয়ে। তামিমকে নিশাম ফিরিয়েছেন তার আগেই। এলোমেলো শট খেলতে গিয়ে ব্যাটের কানায় বল লাগান। খাড়া ক্যাচ উঠে গেলে পয়েন্ট থেকে দৌড়ে এসেও তা নিতে কোনো সমস্যা হয়নি ব্রুমের। ১৭৯ রানে ৭ উইকেট পড়ার পর মাত্রই দ্বিতীয় ওয়ানডে খেলতে নামা নুরুল হাসানের ব্যাটই ছিল ভরসার জায়গা। আগের ম্যাচে আট নম্বরে নামা এই উইকেট কিপার ব্যাটসম্যানকে আজ এক ধাপ ওপরে ওঠানো হয়েছিল। ৪৪ রান করে ইনিংসের শেষ ওভারে শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হয়েছেন তিনি। স্যাক্সটন ওভালে আজ সকাল থেকেই চনমনে রোদ। তবে এই মুহূর্তে আকাশে মেঘ, বিকেলে পর বৃষ্টিরও নাকি সম্ভাবনা আছে। কন্ডিশন যা, তাতে দ্বিতীয় ওয়ানডের বোলিংটা আশা করাই যায় মাশরাফি-তাসকিনদের কাছে।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.