কোমরব্যথা একটি সুপরিচিত সমস্যা। বিশ্বের বয়স্ক মানুষের ৮৫ শতাংশই জীবনে কখনো না কখনো কোমরব্যথায় আক্রান্ত হয়েছেন। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এ ধরনের ব্যথার মারাত্মক কোনো কারণ পাওয়া যায় না। ৮০ শতাংশ কোমরব্যথা তিন মাসের মধ্যে সেরে যায়। এ জন্য সাধারণ ব্যথানাশক, জীবনযাত্রার পরিবর্তন ও ব্যায়ামের দরকার হয়। তিন মাসের বেশি সময় ধরে ব্যথা থাকলে সেটা দীর্ঘমেয়াদি বাতরোগ কি না, খতিয়ে দেখতে হবে। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে অ্যাংকাইলোজিং স্পনডাইলাইটিস, যা কম বয়সেই বেশি হয়ে থাকে। অ্যাংকাইলোজিং স্পনডাইলাইটিস একটি প্রদাহজনিত বাতরোগ। এতে মূলত মেরুদণ্ড আক্রান্ত হয়। তবে হাত-পায়ের গিরা, গোড়ালি, রগ অথবা রগ ও হাড়ের সংযোগস্থলও আক্রান্ত হতে পারে। সাধারণত ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সী যুবকেরা বেশি আক্রান্ত হন। পুরুষ-নারীর অনুপাত ৩:১। এ রোগের প্রধান লক্ষণ কোমরে ব্যথা। যে ব্যথা সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর বেশি তীব্র থাকে এবং দিনের বাকি সময় কাজকর্মের সঙ্গে সঙ্গে ধীরে ধীরে কমতে থাকে। ব্যথার তীব্রতায় রাতে ঘুম ভেঙে যেতে পারে। সকালে কোমর বা অন্যান্য আক্রান্ত স্থানে জড়তা থাকে, সহজে নাড়ানো যায় না। এ ছাড়া মেরুদণ্ডের নড়াচড়া সীমিত হয়ে পড়ে। এ রোগের পারিবারিক ইতিহাসও থাকতে পারে। মূলত লক্ষণ দেখেই রোগ নির্ণয় করা যায়। শ্রোণিচক্রের সন্ধির এক্স-রে বা এমআরআই করে নিশ্চিত হওয়া যায়। চিকিৎসার পদ্ধতিগুলো হলো ব্যায়াম, ব্যথানাশক ও বাতের সুনির্দিষ্ট কিছু ওষুধ। সঠিক চিকিৎসা না করা হলে ব্যথা বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি পঙ্গুত্বের ঝুঁকি দেখা দেয়। ধীরে ধীরে মেরুদণ্ড শক্ত বা আড়ষ্ট হয়ে যাবে, হিপ জয়েন্ট অকার্যকর হয়ে যেতে পারে। তাই তরুণদের কোমরব্যথা তীব্র ও দীর্ঘমেয়াদি হলে অবহেলা না করে চিকিৎসা নেওয়া উচিত।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.