চট্টগ্রামের রাউজানে একই দিনে দুই গৃহবধূকে হত্যা করে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। এলাকায় এই নিয়ে চলছে তোলপাড়। দোষীদের গ্রেপ্তার করার দাবিও উঠেছে। তবে কী কারণে এসব ঘটনা ঘটেছে সে বিষয়ে থানা পুলিশ নিশ্চিত না হলেও ঘটনার পেছনে পরকীয়ার সন্দেহের জের ধরে হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তারা জানান, গত ১ লা জানুয়ারী উপজেলার গহিরা ইউনিয়নের নদিমপুর গ্রামে পরকীয়ায় সন্দেহে নিজ স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা করে স্বামী সুজন। হত্যাকান্ড সংঘটিত করেই পালিয়ে যায় সে। নিহত জুলফা ও সুজন উভয়ের বাড়ী নেত্রেকোণা জেলায়। তারা গহিরা নদিমপুর এলাকায় ইয়ার মোহাম্মদ বাড়িতে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকত। রাত ১১ টার দিকে রাউজান থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরন করে। একই দিন রাউজান পৌর এলাকার ৭ নং ওয়ার্ডে মিনু আকতার নামের এক গৃহবধুকে গলাটিপে হত্যার পর তার লাশ রাউজান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রেখে পালিয়ে যায় তার শ্বশুরবাড়ীর লোকজন। বিকেলে রাউজান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে রাউজান থানার উপ পরিদর্শক সামইমুল ও কামাল লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। সে সময় লাশের সাথে থাকা ননদ শামসুর নাহারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায় রাউজান থানা পুলিশ। সোমবার তার লাশ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে রাউজান থানা পুলিশ। নিহত মিনু আকতার রাউজান পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের শাহ নগর এলাকার শরীফের বাড়ির মো. নুরুজ্জামান প্রকাশ বলন মিস্ত্রির পুত্র এসকান্দরের স্ত্রী। বিগত তিন বছর পূর্বে পাশ্ববর্তী উপজেলা হাটহাজারীর ছিপাতলী এলাকার ইব্রাহিম সওদাগর বাড়ির মো. ইছাহাক মিয়ার কন্যার সাথে এসকান্দরের বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। মিনু আকতারের পরিবারে চার ভাই এক বোন । তার দুই বছরের এক কন্যা সন্তান রয়েছে। গৃহবধু মিনুর পরিবারের দাবী বিয়ের পর থেকে শ্বশুর বাড়ীতে তাকে নির্যাতন করা হতো। তবে শ্বশুর পক্ষের দাবী মিনু আকতার আত্নহত্যা করেছে। এই ঘটনায় নিহত মিনুর ভাই বাদী হয়ে রাউজান থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এই বিষয়ে কথা বলতে গেলে গতকাল স্থানীয় প্রতিবেশিরা জানান, ঘটনার দিন দুপুর ১২টায় নিহতের ভাসুর মিনুর পরিবারে ফোন করে আত্মহত্যা করেছে বলে খবর দেয়। খবর পেয়ে মিনুর পরিবার রাউজান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে লাশ দেখে পুলিশকে খবর দেয়। মিনুর স্বামী এসকান্দর দুবাই প্রবাসী। দেড়মাস পূর্বে ছুটি নিয়ে দেশে আসেন। ঘটনার দিন তার বিদেশ চলে যাওয়ার কথা ছিল। তবে একটি সূত্র মতে চট্টগ্রাম বিমান বন্দরে স্বামী এসকান্দকে আটক করা হয়েছে তবে এর সত্যতা সম্পর্কে কিছুই জানাতে পারেনি রাউজান থানা পুলিশ। গৃহবধু মিনু আকতারের লাশের ময়না তদন্ত শেষে সোমবার রাতে তার লাশ দাফন করা হবে বলে জানান পরিবারের লোকজন। অপরদিকে জুলফা আকতারের লাশ নেওয়ার জন্য নেত্রকোনায় তার পরিবারকে খবর পাঠিয়েছে পুলিশ।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.