শত বছরেরও বেশি সময় ধরে অন্যতম আলোচিত দুর্ঘটনা হলো টাইটানিক ট্র্যাজেডি। এতদিন ধারণা ছিল আইসবার্গ বা হিমশৈলের আঘাতে ডুবে গিয়েছিল টাইটানিক। অসংখ্য বই আর সিনেমায় দুর্ঘটনার এই বিবরণটাই তুলে ধরা হয়েছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা এখন বলছেন, টাইটানিক ট্র্যাজেডির পেছনে শুধু আইসবার্গ দায়ী নয়। নতুন এক তত্ত্বে বলা হচ্ছে, বড় একটি অগ্নিকাণ্ড টাইটানিক ডোবার পেছনে প্রধান কারণ ছিল। ওই দুর্ঘটনায় মারা যায় ১ হাজার ৫শ’রও বেশি যাত্রী। ১৯১২ সালের এপ্রিলে যাত্রীবাহী তৎকালীন বৃহত্তম জাহাজ তার প্রথম যাত্রা শুরু করে সাউদাম্পটন থেকে। গন্তব্য ছিল নিউ ইয়র্ক। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে গন্তব্যে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয় জাহাজটি। নতুন তথ্যপ্রমাণে ইঙ্গিত মিলছে, জাহাজের মাস্তুলে আগুন ধরেছিল। দুর্ঘটনার রাতের আগে প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে আগুন জ্বলেছে যা যাত্রীদের কাছে গোপন রাখা হয় বলে দাবি করছেন ৩০ বছর ধরে টাইটানিক নিয়ে গবেষণা করা সাংবাদিক সেনান মোলোনি। তিনি টাইটানিকের শীর্ষ তড়িৎ প্রকৌশলীদের তোলা বিরল কিছু ছবি পরীক্ষা নিরীক্ষা করেন। ওই ছবিগুলো বেলফাস্টের শিপইয়ার্ড ছাড়ার আগে তোলা। সেনান মোলোনি ৩০ ফুট দীর্ঘ কালো দাগ লক্ষ্য করে করেন। এই দাগটি ছিল আইসবার্গ আঘাত হানার স্থানটিতে। মি. মোলোনি বলেন, ‘ঠিক যেখানে আইসবার্গ আঘাত হেনেছে সেখানটাতে দেখছি আমরা। নির্দিষ্ট ওই স্থানটিতে দুর্বলতা বা ক্ষয়ক্ষতি ছিল বলে মনে হচ্ছে। আর ওই ক্ষতিটা হয়েছিল বেলফাস্ট ছাড়ারও আগে।’ বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত করেছেন, কোনো একটি বয়লার রুমে আগুন ধরার কারণে ওই দাগ সৃষ্টি হতে পারে। কাজেই, জাহাজটি যখন আইসবার্গে আঘাত হানে তখন এটার ইস্পাতের মাস্তুল ছিল অত্যন্ত দুর্বল এবং তা সঙ্গে সঙ্গে ভেঙেচুরে যায়। মোলোনি এ-ও দাবি করেন, আগুন লাগার বিষয়টি গোপন রাখা হয়। আর সাউদাম্পটন ডকসে জাহাজটি অন্যদিকে ঘুরিয়ে রাখা হয়েছিল যেন যাত্রীরা জাহাজের ক্ষতিগ্রস্ত স্থানটি দেখতে না পান। তিনি বলেন, ‘এই দাগগুলো নিয়ে কেউ আগে তদন্ত করেনি। এটা পুরো বিবরণটাই পাল্টে দেয়। ধাতুবিদ্যা বিশেষজ্ঞরা, আমাদের বলেছেন, ওই পর্যায়ের তাপমাত্রায় থাকলে ইস্পাতও ভঙ্গুর হয়ে যায়। এর শক্তি কমে যায় ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত।’ নতুন এই তথ্যপ্রমাণ নিয়ে ‘টাইটানিক: দ্য নিউ এভিডেন্স’ শীর্ষক একটি ডকুমেন্টারি প্রচার হবে বৃটেনের চ্যানেল ফোর-এ।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.