আল-কায়েদার সাবেক নেতা ওসামা বিন লাদেনের ১১ ছেলের একজনের নাম মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সন্ত্রাসী ওয়াচলিস্টে যোগ করা হয়েছে। সিএনএন এর খবরে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী হামলার হুমকি দিয়েছিল হামজা বিন লাদেন। এরপরই তার নাম ওয়াচলিস্টে দেয়া হয়। বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দেয়া মিডিয়া নোটে হামজা বিন লাদেনকে ‘বিশেষভাবে চিহ্নিত বৈশ্বিক সন্ত্রাসী’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। বিশ্লেষকরা হামজা বিন লাদেনকে জঙ্গিগোষ্ঠী আল কায়েদায় ভবিষ্যৎ নেতা হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। ১৯৮৯ সালে জন্ম হামজার। আল-কায়েদার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও তার পিতা ওসামা বিন লাদেনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ছিলেন হামজা। ছেলেবেলায় প্রায়ই পিতার পাশে দেখা যেত তাকে। বালক থাকাকালীন তাকে আল কায়েদার প্রোপাগান্ডামূলক নানা ভিডিওতে দেখো গেছে। তার চারপাশে ঘিরে থাকতো অস্ত্রধারীরা। সিএনএন এর জাতীয় নিরাপত্তা বিশ্লেষক পিটার বার্গেন বলেন, ‘অনেক ছোট বয়স থেকেই তার পিতা তাকে একপ্রকার প্রস্তুত করে তুলছিলেন। এ বছরের শুরুর দিকে মি. বার্গেন আরো বলেছিলেন, ‘এই পুরো জিহাদি ধারার বার্তা তার মধ্যে ভালোভাবে প্রোথিত। সে এমন ভাবাদর্শের সতিক্যার বিশ্বাসী। আমি মনে করি এটা তাকে একটা উদ্বেগের কারণ হিসেবে তৈরি করে।’ হামজার বয়স এখন বিশের কোঠার শেষের দিকে। আল-কায়েদার সম্ভাব্য নতুন মুখ হিসেবে তাকে ধারণা করা হয়। ফাউন্ডেশন অব ডিফেন্স অব ডেমোক্রেসি’র একজন সিনিয়র ফেলো থমাস জোসেলিন হামজাকে নিয়ে বলেন, ‘সে নতুন বিন লাদেন যে ভবিষ্যতে খোলামেলা নেতৃত্ব দেবে।’ বিশ্লেষকরা বলছেন, আরেক জঙ্গিগোষ্ঠী আইসিসের আড়ালে পড়ে যাওয়া আল-কায়েদাকে পুনরুজ্জীবিত করতে উদীয়মান বিন লাদেন ভূমিকা রাখতে পারে। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে ২০১৫ সালের আগস্টে হামজা বিন লাদেনকে আল-কায়েদার সদস্য হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দেন সন্ত্রাসী সংগঠনটির সিনিয়র নেতা আয়মান আল জাওয়াহিরি। ওই বছরই আল জাওয়াহিরির এক অডিও বার্তায় হামজা বিন লাদেন ‘যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স ও ইসরাইলি স্বার্থের বিরুদ্ধে ওয়াশিংটন ডিসি, প্যারিস ও তেল আবিবে একক প্রচেষ্টায় হামলা চালানোর’ আহ্বান জানিয়েছিল। ২০১৬ সালের জুলাই মাসে আল কায়েদা হামজা বিন লাদেনের আরেকটি অডিও বার্তা ছাড়ে। এতে তার পিতার মৃত্যুর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেয়ার হুমকি দেয় হামজা। এ ছাড়া দেশে, বিদেশে মার্কিনিদের টার্গেট করা হবে বলে হুঁশিয়ারি বার্তা দেয়। প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রে আল-কায়েদার সবথেকে বড় হামলা ছিল ৯/১১ ট্র্যাজেডি। ওই হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র আল-কায়েদা নেতৃত্বের খোঁজে আফগানিস্তানে হামলা চালায়। পরে ২০১১ সালের ২রা মে পাকিস্তানের উত্তরপূর্বে অ্যাবোটাবাদে ওসামা বিন লাদেনের গোপন আস্তানায় মার্কিন নেভি সিলরা অভিযান চালিয়ে তাকে হত্যা করে। মি. বার্গেন বলেন, অভিযান চালানোর সময় সিলস’রা ভেবেছিল হামজা হয়তো সেখানে থাকতে পারে। কিন্তু সে তখন সেখানে ছিল না।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.