নতুন বর্ষবরণের রাতে ব্যাঙ্গালুরুতে অনেক নারী যৌন হয়রানির শিকার হয়েছিলেন। তাদের একজন সেই রাতের বিভীষিকা সম্পর্কে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন অভিযোগ নিয়ে রাস্তায় দায়িত্ব পালনরত পুলিশের কাছে গেলেই তাদেরকে তাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এমন নিষ্ঠুরতার শিকার হয়েছেন ২০ বছর বয়সী যুবতী সৃষ্টি। টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে তার ভয়াল অভিজ্ঞতার বর্ণনা উঠে এসেছে। তিনি একজন শিক্ষার্থী। নতুন বর্ষবরণের দিনে তিনি গিয়েছিলেন ‘দঙ্গল’ ছবি দেখতে। ব্যাঙ্গালুরুতে তিনি ৬ মাস অবস্থান করছেন। তো থার্টি ফার্স্ট রাতে তিনি বেরিয়েছিলেন এডভেঞ্চারে। কিন্তু চার্চ স্ট্রিটের কাছে তিনি বারবার যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন। তার ভাষায় ‘এক বন্ধু ও আমি নতুন বর্ষ বরণের রাতে স্থানীয় সময় ১০টার দিকে ব্রিগেড রোডে রেক্স থিয়েটারে ছবি দেখতে যাই। ওই ছবিটি শেষ হয় রাত প্রায় পৌনে একটার দিকে। এ সময় আমরা খুব ক্ষুধার্ত বোধ করি। চার্চ স্ট্রিটে একটি খাবার দোকানে ঢোকার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম আমরা। চার্চ স্ট্রিটে প্রবেশ করামাত্র পুরুষদের আপত্তিকর আচরণ চোখে পড়লো। মদ্যপ পুরুষরা নারীদের নানাভাবে স্পর্শ করছিল। রাস্তার ওপর তারা মদের বোতল ফেলে রেখেছে। একপর্যায়ে এক মদ্যপ আমার দিকে এগিয়ে এসে আমাকে আলিঙ্গন করে। বিষয়টা আমার মনে খুব আঘাত করেছিল। এরপর আরো একজন আমাকে জড়িয়ে ধরলো। আমি ভীত শঙ্কিত হয়ে পড়লাম। যত দ্রুত পারি সেখান থেকে বেরুনোর চেষ্টা করলাম। সৃষ্টি ও তার বন্ধু প্রাণপণ চেষ্টা করতে থাকে এখান থেকে বেরুতে। তিনি বলেন, আমরা সোজা একজন পুলিশ সদস্যের কাছে গেলাম। তার কাছে সব খুলে বললাম। তিনি রাস্তার জ্যাম ছুটাতে ব্যস্ত ছিলেন। আমাদেরকে পরামর্শ দিলেন ওই স্থান ত্যাগ করে এমজি রোডের দিকে এগিয়ে যেতে। আমি তাকে বললাম একটি ট্যাক্সি ভাড়া করতে চাই। কিন্তু তিনি আমাদেরকে এমজি রোডের দিকেই ঠেলে দিলেন ট্যাক্সির জন্য। চার্চ স্ট্রিট ও ব্রিগেড রোডের সংযোগস্থলের কাছে কোনো এক জায়গা হবে। সৃষ্টি বলেন, আমরা একটি ট্যাক্সি ভাড়া করার জন্য এগিয়ে যেতে থাকি এমজি রোডের দিকে। কিন্তু ভীতি আমাদের পিছু ছাড়ছিল না। এমজি রোডে পৌঁছবার তখনও ৪৫ মিনিট বাকি। আমরা দেখতে পেলাম চারদিক থেকে মানুষ আমাদের দিকে কেমন করে তাকিয়ে আছে। তাদের কেউ কেউ পিছন দিক থেকে এসে আমাকে জাপটে ধরল। এ অবস্থায় আমি অনন্যোপায় হয়ে পড়লাম। আরেকজন পুলিশের সহায়তা চাইলাম চার্চ স্ট্রিটে। তাকে সব বলার পর তিনি আমাদেরকে যত তাড়াতাড়ি পাড়ি ওই স্থান ত্যাগ করার পরামর্শ দিলেন। সৃষ্টি বলেন, এমজি রোডে যাওয়ার পথে আমি বুঝতে পারলাম এসব মানুষ নারীদের বিকৃত উপায়ে জড়িয়ে ধরছে।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.