খেলোয়াড় হিসেবে শুরুটা করেছিলেন দারুণভাবে। প্রথম ছয়টি টেস্টে করেছিলেন ৪৭০ রান। হয়ে উঠেছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের মিডল অর্ডারের অন্যতম ভরসার প্রতীক। কিন্তু দলকে নেতৃত্ব দেওয়াটা তাঁর ধাতে ছিল না। কঠিন সেই কাজ করতে গিয়ে ভীষণভাবে ব্যর্থ হয়েছিলেন জিমি অ্যাডামস। শেষ পর্যন্ত ক্যারিয়ারটাও শেষ করেছিলেন সবচেয়ে ব্যর্থ অধিনায়কের লজ্জাজনক রেকর্ড মাথায় নিয়ে। আজ তাঁর জন্মদিন!
১৯৯২ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকের পর দুর্দান্ত ব্যাটিং করে সাড়া জাগিয়েছিলেন জিমি অ্যাডামস। প্রথম ১২টি ম্যাচে করেছিলেন ১,১৩২ রান। ব্যাটিং গড়টাও ছিল ঈর্ষণীয়—৮১.০৭। কিন্তু বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানের সম্ভাবনাময় ক্যারিয়ারটা বিকশিত হতে পারেনি অধিনায়কত্বের বোঝা মাথায় নিয়ে।
২০০০ সালে ব্রায়ান লারা নেতৃত্বের ভার ছেড়ে দেওয়ার পর অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন অ্যাডামস। শুরুটা করেছিলেন ভালোভাবেই। তাঁর নেতৃত্বে উইন্ডিজ দুটি সিরিজ জিতেছিল জিম্বাবুয়ে ও পাকিস্তানের বিপক্ষে। কিন্তু এর পর উল্টোদিকে ঘুরতে থাকে অ্যাডামসের ভাগ্যের চাকা। ১৯৬৯ সালের পর প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ হারের স্বাদ পেতে হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। পাঁচ ম্যাচের সিরিজটি তারা হেরে যায় ৩-১ ব্যবধানে। এর পর অস্ট্রেলিয়া সফরে গিয়ে আরো বেহাল অবস্থা অ্যাডামসের উইন্ডিজের। এবার পাঁচ ম্যাচের সিরিজে সবকটিতেই হার। ক্রিকেট ইতিহাসের প্রথম অধিনায়ক হিসেবে টানা সাতটি টেস্ট হারের লজ্জায় ডুবতে হয় অ্যাডামসকে। অস্ট্রেলিয়া সফর শেষে অধিনায়কত্ব তো বটেই, দল থেকেও বাদ পড়তে হয় বাঁহাতি এই ক্রিকেটারকে।
নয় বছরের ছোট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ারে অ্যাডামস খেলেছিলেন মোট ৫৪টি টেস্ট। ৪১.২৬ গড়ে করেছিলেন ৩,০১২ রান, যেখানে শতক ছিল ছয়টি। অর্ধশতক ১৪টি। একদিনের ম্যাচে অবশ্য এত সফল হতে পারেননি ধীরগতির এই ব্যাটসম্যান। ১২৭টি ওয়ানডে খেলে ২৮.৬২ গড়ে করেছেন ২,২০৪ রান। করতে পারেননি একটি শতকও।
বল হাতে অবশ্য মাঝেমধ্যেই দারুণভাবে জ্বলে উঠতেন জিমি অ্যাডামস। ৫৪টি টেস্টে তিনি নিয়েছেন ২৭টি উইকেট। ওয়ানডেতে তাঁর শিকার ৪৩টি উইকেট। তবে সবকিছু ছাপিয়ে এক ব্যর্থ অধিনায়ক হিসেবেই ক্রিকেট অঙ্গনে স্মরণীয় হয়ে আছেন জিমি অ্যাডামস।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.