প্রতিবছরের মতো এবারো ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা আকর্ষণে ভরপুর। ক্রেতাদের আকর্ষণ করতে কোম্পানিগুলো মূল্যছাড় ও নগদ ক্যাশব্যাকের চমক নিয়ে হাজির হয়েছে। ক্রেতারাও সুযোগ হাতছাড়া না করে লুফে নিচ্ছেন কম দামে পছন্দের পণ্য । গতকাল শেরেবাংলা নগরে আয়োজিত ২২তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলায় গিয়ে দেখা যায়, ভরদুপুরেও মেলার পূর্ব-দক্ষিণ কোণে নাভানা ফার্নিচারের ৪৮ নম্বর স্টলে ক্রেতাদের ব্যাপক উপস্থিতি। ক্রেতা-ভোক্তাদের কথা মাথায় রেখে নাভানা ফার্নিচার এবারের মেলায় সাতটি নতুন মডেলের আকর্ষণীয় ফার্নিচার নিয়ে এসেছে। আধুনিক সব কারুকাজে কাঠ, স্টিল ও লেমিনেটিং বোর্ডের আকর্ষণীয় সব ফার্নিচার সাজিয়ে রাখা হয়েছে স্টলটিতে। ক্রেতাদের জন্য কোম্পানি নতুন পুরাতন সব মডেলের ফার্নিচারের ওপর ১০ থেকে ১৭ শতাংশ মূল্যছাড়ের অফার দিয়েছে। এই ছাড়ে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের মধ্যে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গেছে। ১লা জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এ মেলায় পণ্যভেদে ক্রেতাদের আগ্রহ দেখা যায়। নাভানা ফার্নিচারের প্রতিটি সোফাসেট সর্বোচ্চ ৭৫ হাজার থেকে সর্বনিম্ন ৫০ হাজার টাকা এবং প্রতিটি বেড সর্বোচ্চ ৩৮ হাজার থেকে সর্বনিম্ন ২০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ডিনার ওয়াগন, বুকশেলফ ও ডাইনিং টেবিল সেটেও রয়েছে বিশেষ মূল্যছাড়। নাভানা ফার্নিচার স্টলের সহকারী ইনচার্জ বদরুল আলম বলেন, প্রতিবারের মতো এবারো গ্রাহক এবং ক্রেতাদের কথা চিন্তা করে আমাদের স্টলটি সাজানো হয়েছে। মেলার শুরু থেকেই ক্রেতাদের ভালো সাড়া পাচ্ছি। আমরা পণ্যভেদে মূল্যছাড় দিচ্ছি। একই সঙ্গে ক্রেতাদের ডেলিভারি ও ফিটিংস সেবা দিচ্ছি। ক্রেতাদের যে সাড়া পাচ্ছি তাতে ধারণা করছি যে কোনো বছরের চেয়ে এবারের মেলায় ভালো বিক্রি করতে পরবো। মেলায় আখতার ফার্নিচারের সব পণ্যের ওপর ১২ শতাংশ ছাড়ের পাশাপাশি রেখেছে লাখ টাকা পর্যন্ত ক্যাশব্যাকের অফার। প্রতিদিন লটারির মাধ্যমে ক্রেতাদের একজনকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত ক্যাশব্যাক দেয়া হচ্ছে। আখতার ফার্নিচারের জিএম মুজিবুর জানান, ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার ২৯ এবং ৫১ নম্বর প্যাভিলিয়নসহ দেশের সকল আউটলেটে ১২ শতাংশ ছাড় দেয়া হচ্ছে। এ অফার ৩১শে জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে। বাণিজ্য মেলার বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে এবার আনা হয়েছে প্রায় ২০টির মতো নতুন পণ্য। এছাড়া সব মিলিয়ে রয়েছে প্রায় ৪০০ থেকে ৫০০টি পণ্য। বাসাবাড়ি আর অফিসের জন্য আধুনিক সব ফার্নিচারে সাজানো হয়েছে দুটি প্যাভিলিয়ন। প্যাভিলিয়নের ইনচার্জ ও আখতার ফার্নিচারের সিনিয়র ম্যানেজার দুলাল রায় বলেন, বাণিজ্যমেলায়ও দেশি ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের পাশাপাশি বিদেশি ক্রেতা আসেন। বাসাবাড়ির জন্য তৈরি আখতার ফার্নিচারের সব পণ্য শতভাগ কাঠের তৈরি। এসব কাঠ কেমিক্যাল ট্রিটমেন্ট ও সিজনিং করার ফলে আজীবন ঘুণমুক্ত থাকবে। এছাড়া ফার্নিচারের গায়ের রং বা লেকারও সম্পূর্ণভাবে ইতালি থেকে আমদানি করা। ফলে দীর্ঘকাল টিকে থাকে। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশেও আখতারের পণ্যের সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে প্রতিবছর কিছু পণ্য আমরা রপ্তানি করে থাকি। ১০ থেকে ৫০ শতাংশ ছাড়ে সাজানো হয়েছে বেঙ্গল প্লাস্টিকের পণ্য। বাণিজ্যমেলার ৪১ নম্বর দোতলা প্রিমিয়াম প্যাভিলিয়নের পুরোটাই বাহারি সব প্লাস্টিক পণ্যে ঠাসা। পণ্যভেদে ১০-৫০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় নিয়ে পণ্যের পসরা সাজিয়েছে কোম্পানিটি। বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এ প্লাস্টিক কোম্পানি বাণিজ্যমেলা উপলক্ষে ২০টি নতুন পণ্যসহ গৃহস্থালি ও ফার্নিচার মিলিয়ে মোট ২ হাজার আইটেমের প্ল্যাস্টিক পণ্য নিয়ে হাজির হয়েছে। এবারের মেলায় দুই ধরনের ডাইনিং টেবিল সেট, সিঙ্গেল ও ডাবল ওয়্যারড্রব নিয়ে এসেছে বেঙ্গল। তবে বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে শিশুদের জন্য রয়েছে ব্যান-১০ ও পাওয়ার গার্লসের কার্টুন সম্বলিত রিডিং টেবিল। চার থেকে ছয় সিটের ডাইনিং টেবিলগুলোর বিক্রয় মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ২৭০০ টাকা থেকে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত। ডাবল ও সিঙ্গেল ওয়্যারড্রবগুলো যথাক্রমে বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৯৫০ টাকা থেকে ৭ হাজার ১৫০ টাকা পর্যন্ত। প্লাস্টিকের চেয়ার বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৫৭০ টাকায়, মেটাল চেয়ার বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকায়। বেঙ্গল প্লাস্টিকের প্যাভিলিয়নের সহকারী ইনচার্জ বলেন, গুণগত মানে, উৎকর্ষতায় আমাদের পণ্য অনন্য। এ পণ্যে ক্ষতিকারক উপাদানও নেই। ফলে গৃহস্থালি কাজে নিশ্চিন্তে ব্যবহার করা যায়। এছাড়া বেঙ্গল পণ্যের মূল্যও ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.